মূল ফোকাস গ্রীন এনার্জি, নিগমের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বললেন রতন!!

 মূল ফোকাস গ্রীন এনার্জি, নিগমের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বললেন রতন!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-আমাদের লক্ষ্য রাজ্যের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় আমূল সংস্কারসাধন।বর্তমান যুগ এনার্জির যুগ।আর সে কারণেই সৌর শক্তিতে কাজে লাগিয়ে কম করেও আরও ৫০০মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগিয়ে চলেছে বিদ্যুৎ দপ্তর। পাম্প স্টোরেজের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়ে জোর কদমে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর উন্নয়নেও ব্যাপক কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। ২০০৪ সালে ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম লিমিটেড কাজ শুরু করলেও এখান থেকেই জন্ম নিয়েছে ত্রিপুরা পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড এবং ত্রিপুরা পাওয়ার ট্রান্সমিশন লিমিটেড।এই তিনটি কর্পোরেশনের সমন্বয়েই বিদ্যুৎ দপ্তর রাজ্যের মানুষের কাছে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রদানে অঙ্গীকারবদ্ধ।

সোমবার ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম লিমিটেডের ২০তম প্রতিষ্ঠাদিবস উপলক্ষে নিগমের তরফে আয়োজিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার শুভ সূচনা করে এভাবেই বক্তব্য রাখেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ।গ্রাহক পরিষেবায় এবং গ্রাহকদের যে কোনো সমস্যার দ্রুত সমাধানে নিগমের ব্যাপক কর্মপরিকল্পনার কথাও এদিন তিনি উল্লেখ করেছেন।সোমবার সকাল সাড়ে আটটায় বিভিন্ন প্রদর্শনী গাড়ি সংবলিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশ নেন বিদ্যুৎমন্ত্রী।এছাড়া শোভাযাত্রার পথ পরিক্রমায় শামিল হন বিদ্যুৎ দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং এবং বিদ্যুৎ নিগমের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক অধিকর্তা সর্বজিৎ সিং ডোগরা।পথ পরিক্রমা শেষে সকাল সাড়ে ১১ টায় বিদ্যুৎ নিগমের কর্পোরেট অফিস প্রাঙ্গণে এক মেগা স্বাস্থ্য শিবিরেরও সূচনা করেন বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ। এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার।তবে এদিন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বিমান বিভ্রাট ঘটায় কলকাতা থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা আসতে না পারায় স্বাস্থ্য শিবিরের একটি বিশেষ অংশ স্থগিত রাখা হয়েছে।আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই এই শিবরটি পরিচালনা করা হবে। তবে এদিন চিকিৎসা সংক্রান্ত অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা বিশেষ করে চক্ষু চিকিৎসা পরিষেবায় নিগমের কর্মী আধিকারিক এবং তাদের পরিবারবর্গ উপকৃত হয়েছেন। আগামী ৬ জানুয়ারী রবীন্দ্র ভবনে আয়োজিত হবে নিগমের বিভিন্ন বিভাগে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রম।অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিদ্যুৎমন্ত্রী রাজ্যের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং মাশুল বৃদ্ধি নিয়ে পূর্বতন সরকারের তুলনা টেনে বলেন,বর্তমান সরকারের সাড়ে পাঁচ বছর বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি হয়েছে গড়ে কার্যত ২ শতাংশ কেননা ৭ শতাংশ মাশুল বৃদ্ধি করা হলেও বিল পাওয়ার সাতদিনের মধ্যে তা পরিশোধ করলে ৫ শতাংশ ছাড় পাওয়া যায়।আবার বিদ্যুৎ বন্ধু অ্যাপসের মাধ্যমে নগদহীন ব্যবস্থায় বিল পরিশোধ করলে বাড়তি ১০ টাকা ছাড় পাওয়া যায়।এসব তথ্য তুলে ধরে বিদ্যুৎ মন্ত্রী শ্রী নাথ দাবি করেন, পূর্বে ৫ বছরে রাজ্যের বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি হয়েছে ১৩৪শতাংশ। বর্তমানে ভোক্তাস্বার্থ সুরক্ষার উপর বাড়তি গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে।তিনি বলেন, রুখিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বর্তমানে ৬৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এই বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে পরিমাণ গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে, সেই একই পরিমাণ গ্যাস ব্যবহার করে রুখিয়ার ২২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।এর জন্য ব্যবহার করা – হবে নয়া প্রযুক্তি।পাশাপাশি চলবে সৌরশক্তির ব্যবহার। তা ছাড়া রাজ্যের সব সরকারী কর্মস্থলে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।তাতে সাশ্রয় হবে অর্থের।বিদ্যুৎ অপচয় রোধেও নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তার – অঙ্গ হিসাবে প্রাথমিকভাবে আগরতলায় ভূতল বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ব্যবস্থা স্থাপনের কাজ চলছে।
মন্ত্রী জানান,খোলা বৈদ্যুতিক তার সরিয়ে ধীরে ধীরে কভার দেওয়া তার ব্যবহারের কাজ চলছে।শ্রীনাথ জানান, রাজ্যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে প্রথমবারের মতো ব্যাটারি সংরক্ষণ পাম্প স্থাপনের উদ্যোগ শুরু হয়েছে।এই ব্যবস্থা দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কোথাও নেই।ভারতের মধ্যে এক মাত্র পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ায় – রয়েছে। ভবিষ্যৎ গ্যাস সঙ্কটের কথা বিবেচনা করে এবং প্রচলিত বিদ্যুৎ ব্যবহারে লাগাম টানতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন শ্রীনাথ।বাংলাদেশ – সহ দেশের অন্য রাজ্যে বিদ্যুৎপরিবহণ ও বিক্রির উপর বাড়তি গুরুত্ব আরোপ – করেন।বলেন,তাতে রাজ্যের রাজস্ব আয় বাড়বে।শ্রীনাথ জানান,বাংলাদেশ এবং দেশের অন্য রাজ্যে বিদ্যুৎ পরিবহণের জন্যও প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়া হবে।এর জন্য পাঁচটি এলাকায় সমীক্ষা চালিয়ে — বাছাই করা হয়েছে তিনটিকে। এর প্রতিটির মাধ্যমে ৮০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ পরিবহণের সুবিধা থাকবে। তার আগে রাজ্যে বিকল্প পদ্ধতিতে বাড়তি বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনাও রয়েছে।মন্ত্রী তার আলোচনায় রাজ্যে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়নে অভূতপূর্ব কাজ চলছে বলে দাবি করেন।বাংলাদেশ বিদ্যুতের প্রচুর চাহিদা রয়েছে বলে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন সহ যাবতীয় পরিকাঠামোর সঙ্গে পর্যটনের অগ্রগতির সম্পর্ক রয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ার কথা তুলে ধরেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.