তুঘলকি নিয়মের বেড়াজালে চরম ভোগান্তি আম জনতার!!
অনলাইন প্রতিনিধি :- নির্বিকার রাজস্ব দপ্তর, সুশাসনে দলিল রেজিস্ট্রি করতে চরম দুর্ভোগের শিকার জনগণ’ শীর্ষক তথ্যভিত্তিক সংবাদটি রবিবার দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত হতেই, বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে ভুক্তভোগীরা খবরের সত্যতা স্বীকার করে অনেকে আরও তথ্য প্রদান করেছেন। প্রত্যেকের একটাই বক্তব্য, সরকার জমি ক্রয়-বিক্রয় এবং দলিল রেজিস্ট্রিতে দুর্নীতি রুখতে যে সিস্টেম চালু করেছে, তাতে দুর্নীতি বন্ধ হওয়া তো দূরের কথা, বরং নয়া পদ্ধতিতে দুর্নীতি জাঁকিয়ে বসেছে। শুধু তাই নয়, দুর্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ পরিষেবা জনগণকে উপহার দেওয়ার নামে সাধারণ জনগণকে চরম ভোগান্তি এবং সমস্যার মধ্যে ফেলেছে। অনলাইন রেজিস্ট্রিতে যেখানে সময় কম লাগার কথা, সেখানে সময় এবং খরচ দুটোই পাঁচগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাম্প্রতিককালে এই সমস্যা সব থেকে বেশি সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে। অভিযোগ এর পিছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে পশ্চিম জেলাশাসকের তুঘলকি সিদ্ধান্ত। অভিযোগ, তিনি সকালে এক অর্ডার দিচ্ছেন আবার বিকেলে এক অর্ডার দিচ্ছেন আবার বিকেলে এক অর্ডার দিচ্ছেন । এখানেই শেষ নয়, কর্মচারীরা পর্যন্ত কাজ করতে গিয়ে আতঙ্কে ভুগছেন। শুধু কর্মচারীরাই নয়, আতঙ্কে ভুগছেন আইনজীবী এবং দলিল লেখকরাও। কেননা, দলিল রেজিস্ট্রি হবে কিনা এর কোনও নিশ্চয়তা
নেই। শুধু দলিল রেজিস্ট্রিই নয়, নামজারি করার ক্ষেত্রেও জনগণকে চরম হয়রানি হচ্ছে। নামজারির জন্য আবেদন করার পর, ভ্যারিফিকেশনের নামে জনগণকে হয়রানি যেমন করা হচ্ছে, আবার পকেটও কাটা হচ্ছে। দেখা গেছে, পিতা জায়গা ক্রয় করে রেখে গেছে, কোনও কারণে সেই জায়গা নামজারি হয়নি। সেই জমি এখন নামজারি করতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের নাকানিচোবানি খেতে হচ্ছে। পুরনো নথি খুঁজে বার করতেই বছরের অর্ধেক সময় চলে যাচ্ছে। কেননা, পুরোন নথি খুঁজে বার করার মতো অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লোক নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে আগরতলা পূর্ব তহশিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ডিসিএম নেই। ডিসিএম আছেন কিন্তু তিনি অন্য কাজে নিয়োজিত। ডাটা অপারেটর থেকেও নেই। কারণ তিনি কিছুই পারেন না। ফলে জনগণকে দিনের পর দিন সামান্য একটি কাজের জন্য ঘুরতে হচ্ছে। সরকারী খাস জমি লিজ দেওয়ার পরও দেখা যায় সেই জমির রেজিস্ট্রি করা যাচ্ছে না। কেননা, সরকারী জমি পোর্টালে ব্লক করে রাখা হয়েছে। দিনের পর দিন এই সমস্যাগুলি চলতে থাকলেও কারো কোনও হেলদোল নেই। কর্মচারীদের মধ্যে যারা এই বিষয়গুলিতে অভিজ্ঞ, তাদের বদিল করে দেওয়া হচ্ছে অন্যত্র। তার বদলে যাদের দেওয়া হচ্ছে, তারা এ বিষয়ে অনভিজ্ঞ। এর মধ্যে কাজ করতে গিয়ে কোনও কারণে অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়ে গেলে, জেলাশাসক সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর উপর খড়গহস্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ। ফলে কর্মচারীরা আতঙ্কগ্রস্ত। এর মধ্যে গোদের উপর বিষফোঁড়া হচ্ছে নেটের সমস্যা। প্রায়ই ইন্টারনেটের গোলযোগে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। রাজস্ব দপ্তরের মন্ত্রী খোদ মুখ্যমন্ত্রী। অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী অন্যন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ সামলে এই সব বিষয়ে নজর দিতে পারছেন না। সুশাসনে পরিষেবা প্রদানে যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? এই প্রশ্নই এখন উঠেছে।