বেকারত্বের ধাক্কা!!

 বেকারত্বের ধাক্কা!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-একদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বারবারই দাবি করছেন যে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ভারত বি প্রধানমন্ত্রী নেরে মধ্যোদি করছেন যে দেশ হতে যাচ্ছে।অর্থাৎ আর্থিক শক্তিধর তিনটি দেশের মধ্যে যুক্ত হতে যাচ্ছে ভারত।যদি সত্যিই তাই হয়,তাহলে ভারতের সোনালী অধ্যায় রচিত হবে এর মধ্য দিয়ে।কিন্তু অপর দিকে যদি একটি তথ্যের দিকে আমাদের দৃষ্টি যায় তাহলে তা ভারতের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক হিসাবেই চিহ্নিত হতে যাচ্ছে। অতি সম্প্রতি অর্থাৎ গত নভেম্বর মাস পর্যন্ত ভারতের যে বেকারের চিত্র তা অত্যন্ত হতাশাজনক।বিশেষ করে বর্তমান বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় এই চিত্র আরও প্রকট হয়েছে। বরং গত ৪৫ বছরের মধ্যে এই গ্রাফ আরও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।কেন্দ্রে ২০১৪ সালে এদেশে যখন নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় সে সময় বিজেপির প্রতিশ্রুতি ছিল সরকারে এলে দেশে বছরে দুই কোটি বেকারের চাকরি হবে। কিন্তু দুই কোটি চাকরি এখনও দূরঅস্ত।বরং বেকারের গ্রাফ দিনদিনই ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে দেশে।এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে ২০১৪ সালে যেখানে বেকারত্বের হার ছিল ৫.৪৪%, বর্তমানে তা এসে দাঁড়িয়েছে ৯.২%।গত নভেম্বর মাস পর্যন্ত এই চিত্র ধরা পড়েছে দেশে।
বিরোধী দলগুলি এনিয়ে বিভিন্ন সময় চিৎকার চেঁচামেচি করলেও একে কোনও মতেই মনে তুলতে নারাজ কেন্দ্রীয় সরকার।বরং এই ধরনের পরিসংখ্যানকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনেও তিন রাজ্যে বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে।দেশের শাসক দলের কাছে বেকার ছাড়াও হাজারো ইস্যু রয়েছে।বেকার ইস্যু তাদের কাছে নগণ্য।কেননা, বেকার সমস্যা দিন দিন বাড়লেও তা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কোনও ইস্যুই নয়।কেন্দ্রীয় স্তরের বিশেষজ্ঞ সংস্থা সিএমআইআই তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে,২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৫.৪৪%। ২০১৫ সালে তা এসে দাঁড়িয়েছিল একইতে। ২০১৬ সালে তা দাঁড়ায় এসে ৫.৪২%।২০১৭ সালে তা দাঁড়ায় এসে ৫.৩৬%।২০১৮ সালে তা দাঁড়ায় এসে ৫.৩৩%।২০১৯ সালে এসে দাঁড়ায় ৫.২৭%।২০২০ সালে এসে দাঁড়ায় ৮%।২০২১ সালে তা দাঁড়ায় এসে ৫.৯৮%। ২০২২ সালে তা দাঁড়ায় এসে ৭.৩৩%।২০২৩ সালের নভেম্বরে এসে তা দাঁড়ায় ৯.২%।গত অক্টোবর মাসে এই হার ছিল ১০.০৯%।যা সর্বকালীন রেকর্ড ছিল জানায় সিএসআইআই।মোদি সরকারের কাছে বিরোধীরা বারবার দাবি জানায় যে, দেশে দুই কোটি বেকারের চাকরির প্রতিশ্রুতির কী হলো, প্রতিজনের অ্যাকাউন্টে যে পনেরো লক্ষ টাকা দেবার কথা সে প্রতিশ্রুতির কী হল? কিন্তু একটিরও সরকার জবাব দেয়নি।দেশে লক্ষ লক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারের শূন্যপদ রয়েছে।গত কয়েক বছরে সেগুলি পূরণের কোনও উদ্যোগ নেই।দেশে প্রায় দশ লক্ষের বেশি শূন্যপদ।পূরণের কোনও উদ্যোগ নেই। মাঝেমধ্যেই ১৪০ কোটির দেশে চাকরি মেলা করে কয়েক হাজার চাকরি দিয়েই সন্তুষ্ট দেশের সরকার।রাজ্যে রাজ্যে প্রচুর শূন্যপদ। কোভিডের সময় দেশে কয়েক কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছে। এর ফলেও দেশে বেকারত্বের হার বেড়েছে।আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই দেশে লোকসভা ভোট।আম আদমির এই সমস্ত প্রশ্নের জবাব দিতে হবে কেন্দ্রকে।সিএমআইআই জানিয়েছে, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৮%।গত বছরের নভেম্বরে তা এসে দাঁড়িয়েছিল ৯.২%।শীঘ্রই ডিসেম্বরের রিপোর্টও পেশ হতে চলেছে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন দেশে বেকারত্বের হার ১০% ছাড়িয়ে যেতে চলেছে। এর অর্থ ২০১৪ সালের প্রায় দ্বিগুণ হতে চলেছে বেকারত্বের হার। আগামী লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রের শাসক বিজেপি একে কীভাবে সামাল দেয় তাই এখন দেখার।প্রতি বছরই দেশে কেন লাফিয়ে বাড়ছে বেকারত্বের হার? কী কী বিষয়ের উপর নির্ভর করে এই বেকারত্বের হার?বিশেষজ্ঞ সংস্থা মূলত অর্থনীতির উপর ভিত্তি করেই এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনে।যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করছে যে, দেশের অর্থনীতি এখন বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। আগামী কয়েক বছরে দেশ তৃতীয় অর্থনীতির দেশ হবে। কিন্তু আদতে তা হবে কি না তাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। একদিকে অর্থনীতি শক্তিশালী হচ্ছে বলে দাবি করছে কেন্দ্র, অন্যদিকে বেকারত্বের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী দেশে- এই দুইয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য আনা এখন সরকারের আশু কর্তব্য।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.