মন্থর গতিতে ভয় ধরাচ্ছে কোভিডের নয়া প্রজাতি!!

 মন্থর গতিতে ভয় ধরাচ্ছে কোভিডের নয়া প্রজাতি!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-গত এক বছরের মধ্যে একদিনে করোনা আক্রান্তের ভয়ঙ্কর রূপ দেখল গোটা দেশ। আনুপাতিক হারে গত কয়েক দিনে লাফিয়ে বেড়েছে কোভিড। শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ভার। ওয়েবসাইট বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে দেশে ৬৪০ জন কোভিড পজিটিভ হয়েছেন। অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা হাজার ইই পেরোল। পরিস্থিতির গুরুত্ব আঁচ করছেন রাজ্য থেকে কেন্দ্রীয় প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয়রাও।
বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যবাসীকে ফের মাস্ক পরার আহ্বান জানিয়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে বঙ্গবাসীকে তিনি আবেদন জানিয়েছেন, করোনা যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে দিকে খেয়াল রাখতে। স্বাস্থ্যদফতর সূত্রের খবর, গঙ্গাসাগরেও পুণ্যার্থীদের জন্য করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, যে হারে ঘরে ঘরে মরসুমি সর্দি-কাশি-জ্বর বাসা বেঁধেছে, তাতে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস,প্যারা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, রাইনোভাইরাস, অ্যাডিনোভাইরাসইত্যাদির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হামলা চালাচ্ছে নোভেল করোনা ভাইরাসও। এই দাপট আরও দু তিন সপ্তাহ চলবে। যদিও মৃদু উপসর্গের কারণে এই দফায় করোন বেশি চিন্তা বাড়াবে না বলে স্বস্তিতে স্বাস্থ্যকর্তারা। তবে গুরুতর অসুস্থ এবং ঘোর কো-মর্বিডিটির শিকার ব্যক্তিদের ছাড়া চিকিৎসকরা যেহেতু কাউকে টেস্ট ‘করাতে বলছেন না, তাই আসল করোনা আক্রান্তের সংখ্যাটা অনেকটাই বেশি বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে সতর্ক হতে বলছেন তারাও।গত সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত দেশ জুড়ে মোট ৭৬ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে মৃত্যুর জন্যও ক্যানসার, হৃদরোগ বা ডায়াবেটিসের মতো কো-মর্বিডিটি দায়ী বলে উল্লেখ করেন তিনি। তাই কো- মর্বিডিটি ব্যক্তিদের সতর্ক থাকার কথা উঠে আসছে স্বাস্থ্যকর্তাদের কথায়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য ইতিমধ্যে বেসরকারি হাসপাতালগুলি এবং সেখানকার আইসিইউ-গুলি জীবাণুমুক্ত রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। করোনা যাতে ছড়িয়ে না NGC পড়ে, সে দিকে নজর রাখতেও পরামর্শ দিয়েছেন। একই সুর সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ যোগীরাজ রায়ের গলাতেও। তিনি বলেছেন, ‘বিশেষ করে বয়স্ক ও কো-মর্বিডদের মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। সত্যি বলতে, সকলেরই ব্যবহার করা উচিত। এতে শুধু করোনাই নয়, শ্বাসনালীর অন্যান্য সংক্রমণকেও অনেকাংশে ঠেকানো সম্ভব।’ চিকিৎসকরা সাবধান হতে বলছেন, কারণ আচমকাই খুব অল্প সময়ে করোনা অনেকটা মাথাচাড়া দিয়েছে। জানুয়ারির গোড়াতেও দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাটা যেখানে ১০-১৫ জনের মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল, অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ছিল ১০০-এর নিচে, সেখানে এখন দৈনিক আক্রান্ত ও অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৪০ ও ২৪৯-তে। স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশের ধারণা, এর নেপথ্যে করোনার সাম্প্রতিকতম ভ্যারিয়েন্ট জেএন-১ উপপ্রজাতির ভূমিকা থাকতে পারে। কেননা, ডিসেম্বরের শেষে জিনোম সিকোয়েন্সে পাঠানো ২৬টি নমুনা থেকেই ২টি নমুনায় জেএন- ১ সাব-ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মিলেছিল। ২ জানুয়ারি আরও যে ৫০টি কোভিড পজিটিভ নমুনা কল্যাণীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বায়োমেডিক্যাল এঞ্জ জিনোমিক্সে পাঠানো হয়েছে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য, তাতে আরও বেশি সংখ্যায় অতিসংক্রামক জিএন-১ থাকতে পারে বলে মনে করছেন অনির্বাণ এ দোলুইয়ের মতো জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। কেননা, সংক্রমণের তীব্রতা বা প্রাবল্যে নয়, সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতার বিচারে এই প্রথম করোনার এই প্রজাতিকে ‘স্ট্যান্ড-অ্যালোন ভ্যারিয়েন্ট অফ ইন্টারেস্ট’ তকমা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। আর এখন করোনার যে সংক্রমণটা হচ্ছে, সেটাতেও মৃদু উপসর্গ ছাড়া তেমন কিছু দেখা যাচ্ছে না। হাসপাতালে ভর্তি করতে হচ্ছে তাদেরই, যারা অন্য কোনও কারণে অসুস্থ। আবার কিছু রোগীর করোনা ধরা পড়ছে অস্ত্রোপচারের – আগে প্রথামাফিক স্ক্রিনিংয়ের কারণে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.