জিবিতে রোগীর রোগ নির্ণয়ে পরিকাঠামোর স্বল্পতায় দুর্ভোগ!!

 জিবিতে রোগীর রোগ নির্ণয়ে পরিকাঠামোর স্বল্পতায় দুর্ভোগ!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের প্রধান সরকারী রেফারেল হাসপাতাল জিবির রোগীর রোগ নির্ণয়ে,রোগ চিহ্নিতকরণে পরিকাঠামোর দুর্বলতায় ও অপ্রতুলতায় রোগীদের নিত্য দুর্ভোগ ও বিপাকে পড়তে হচ্ছে। রাজ্যের নানা প্রান্ত ও বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে রেফার করা রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবার জন্য জিবি হাসপাতালে নতুবা আইজিএম হাসপাতালে নিয়ে আসতে হয়।মহকুমা ও জেলা হাসপাতালগুলি থেকে জিবি ও আইজিএমে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়।তাতে জিবি হাসপাতালে রোগীর চাপ সবচেয়ে বেশি পড়ছে।কিন্তু অন্য চিকিৎসা পরিকাঠামো কী দশায় রয়েছে,সেই বিষয়ে না উল্লেখ করলেও রোগ নির্ণয়,রোগ চিহ্নিতকরণে রেডিওলজি বিভাগের কী করুণ দশা তাই উল্লেখ করা হচ্ছে।জিবি হাসপাতালে শুধু একটি এমআরআই মেশিন রয়েছে।ইনডোর ও আউটডোরের রোগীদের যাদের প্রয়োজন এমআরআইয়ে রোগ পরীক্ষা করার জন্য সেই সমস্ত রোগীকে চিকিৎসক রিক্যুইজিশন লিখে দিচ্ছেন। কিন্তু এমআরআই মেশিনে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে এমআরআই মেশিনে রোগ পরীক্ষার অগ্রাধিকার দেওয়া হলেও অন্য রোগীদের নাম রেজিস্টারে লিখে সিরিয়াল অনুযায়ী এই সুবিধা দেওয়া হয়।তাতে এমআরআই করতে কোন কোন রোগীর অনেক দিন লেগে যাচ্ছে।বিভিন্ন দিনে সিরিয়াল নম্বর পড়ায় রোগযন্ত্রণা নিয়ে রোগীরা অনেকদিন ধরে খুব কষ্টে এমআরআই করার অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে বলে রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের প্রতিদিনের অভিযোগ। চিকিৎসকের পরামর্শমতো সঠিক সময়ে এমআরআই করাতে না পেরে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে ‘বলেও অভিযোগ।কিন্তু হাসপাতালে একটিমাত্র এমআরআই মেশিন থাকায় এমআরআই করার জন্য রোগীর চাপ থাকায় হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগও চাপ সামলাতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছে।দাবি উঠেছে জিবি হাসপাতালে রোগ নির্ণয়ে এই উদ্ভুত সমস্যা মেটাতে খুব শীরই আরও একটি নতুন এমআরআই মেশিন ক্রয় করে এনে বসানোর জন্য।ফলে দুটি এমআরআই মেশিন রাজ্যের প্রধান হাসপাতালে চালু থাকলে রোগ নির্ণয়ে রোগীর দুর্ভোগ ও কষ্টের অবসান হবে।আইজিএম হাসপাতাল রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তর হাসপাতাল হলেও সেই হাসপাতালেও এখন পর্যন্ত এমআরআই মেশিন বসানো হয়নি।ফলে আইজিএমের রোগীকেও জিবিতে এমআরআই করানোর জন্য পাঠানো হয়।দীর্ঘদিনের দাবি আইজিএমেও দ্রুত একটি এমআরআই মেশিন বসানোর জন্য।কিন্তু স্বাস্থ্য দপ্তর জিবির মতো আইজিএমের ক্ষেত্রেও এ বিষয়েও কোনও তৎপরতা দেখাচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।জিবিতে শুধু এমআরআই মেশিন সংকট নয়,সিটি স্ক্যান মেশিনেরও সংকট রয়েছে।ট্রমা সেন্টার ভবনে তথা এনটিএইচ ভবন-১ -এ একটি সিটি স্ক্যান মেশিন রয়েছে।রোগীর চাপে
সিটি স্ক্যান করাতে গিয়েও অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকতে হচ্ছে রোগীদের।গুরুতর অসুস্থ রোগীদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সিটি স্ক্যান করানো হলেও অন্য রোগীদের নাম রেজিস্টারে লিখে রেখে বিভিন্ন দিনের জন্য সিরিয়াল করে রাখা হচ্ছে।কোনও কোনও রোগীকে তাতে সিটি স্ক্যান করাতে বেশ কদিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে।রোগযন্ত্রণা নিয়ে অপেক্ষায় থেকে রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন
বলে রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ। জিবির জয়ন্তী ভবনে অপর একটি সিটি স্ক্যান মেশিন থাকলেও তা কোভিড রোগীদের জন্য রাখা হয়েছে। কোভিডের সময় সেখানে সিটি স্ক্যান বসানো হয়েছিল। তাই এ ক্ষেত্রেও দাবি উঠেছে সিটি স্ক্যানে রোগ নির্ণয়ে দীর্ঘ অপেক্ষমাণ তালিকার অবসান ঘটাতে দ্রুত আরও একটি সিটি স্ক্যান মেশিন ক্রয় করে এনে বসানো হোক। জিবিতে আল্ট্রাসোনোগ্রাফিতে
রোগ নির্ণয় নিয়েও একই দশা।মাত্র দুটি আল্ট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন থাকায় রোগীর চাপে এখানেও দীর্ঘ অপেক্ষমাণ তালিকা হয়ে থাকছে। রেজিস্টারে রোগীর নাম
লিখে বিভিন্ন দিনের জন্য আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করার তারিখ দেওয়া হচ্ছে।তবে গুরুতর অসুস্থদের জরুরি ভিত্তিতে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করা হচ্ছে।অন্য রোগীদের
সিরিয়াল অনুযায়ী সোনোগ্রাফি করা হচ্ছে।দীর্ঘ অপেক্ষমাণ তালিকার কারণে
সোনোগ্রাফি করাতে এসে প্রতিদিন রোগীদের রোগযন্ত্রণা নিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। বসারও পর্যাপ্ত জায়গা নেই। বিভিন্ন দিনের তারিখ পড়ায়ও রোগীদের রোগ যন্ত্রণা নিয়ে সনোগ্রাফি করার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।তাই এ ক্ষেত্রেও দাবি উঠেছে দ্রুত অন্তত আরও দু-তিনটি আল্ট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন ক্রয় করে এনে বসানোর জন্য।তাতেই রোগীর দুর্ভোগ
কমবে বলেই রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের অভিমত।কিন্তু স্বাস্থ্য দপ্তর সব কিছু জেনেও কেন এসব সমস্যা মেটাবে না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।এদিকে,জিবির রেডিওলজি বিভাগের প্রধান ডা. অসীম দে দাবি করেন,চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে রোগ নির্ণয়ে এই সব মেশিনে রোগীর রোগ নির্ণয়ে পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।তিনি জানান,আল্ট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন চারটি আছে। পৃথকভাবে গাইনো ও শিশু বিভাগেও একটি করে আছে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.