মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, বন্ধ ইন্টারনেট,, কার্ফু জারি!!
ত্রিপুরার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের রূপরেখা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী
অনলাইন প্রতিনিধি :- ১৯৭২ সালের ২১ জানুয়ারী, এই দিনেই উত্তর পূর্বের তিনটি রাজ্য ত্রিপুরা, মণিপুর এবং মেঘালয় পূর্ণরাজ্যের মর্যাদা পেয়েছিল। সেই থেকে প্রতি বছর ২১ জানুয়ারী পূর্ণরাজ্য প্রাপ্তির দিনটিকে স্মরণ করে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্যেও পূর্ণরাজ্য দিবস উদ্যাপন করা হচ্ছে। এ বছরও তথ্য ও সংস্কৃতি -দপ্তরের উদ্যোগে সরকারীভাবে মূল অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা তার ভাষণে ত্রিপুরার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের রূপরেখা তুলে ধরলেন। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতনলাল নাথ, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী শান্তনা চাকমা, পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, ক্রীড়া মন্ত্রী টিংকু রায়, মুখ্যসচিব জেকে সিনহা সহ বিশিষ্ট জনেরা।
পূর্ণরাজ্য দিবসের অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের অন্যতম শর্ত হচ্ছে শান্তি-শৃঙ্খলা ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। রাজ্যে এখন শান্তি ও সম্প্রীতির বাতাবরণ রয়েছে। শান্তির এই বাতাবরণ অক্ষুন্ন রাখতে পারলেই রাজ্যের সার্বিক বিকাশ ত্বরান্বিত হবে। রাজ্যকে বহুজাতিক বাণিজ্য ও লজিস্টিক হাব হিসাবে গড়ে তোলার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে।আগরতলা-আখাউড়া রেল সংযোগ ও মৈত্রী সেতু চালু হয়ে গেলে ত্রিপুরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রবেশ দ্বার হয়ে উঠবে। এতে বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। আগামীদিনে ত্রিপুরান জন্য এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষ করছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালে রাজ্যে বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে রাজ্যের পরিকাঠামো, যোগাযোগ, জনজাতি কল্যাণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্প, ক্রীড়া, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির বিকাশে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারী ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ ও সহজতর করার সদিচ্ছার দরুন আজ রাজ্যের সাধারণ জনগণ বিশেষভাবে উপকৃত। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রীর শাসনভার গ্রহণ করার পর যে দুর্বার গতিতে দেশের টা প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়ন পরিলক্ষিত হচ্ছে, তা নিয়ে আগামীদিনে গবেষণার অবকাশ থাকবে। রাজন্য আমল থেকে গণতান্ত্রিক ত্রিপুরার উত্তরণের চিত্র তুলে ধরে বলেন, রাজন্য আমলে ত্রিপুরার মহারাজারা এই রাজ্য ও জনগণের কল্যাণে যেসব কাজ করে গেছেন তা বিগত সরকারের আমলে উপেক্ষা করা হয়েছিল। বর্তমান সরকারের সময়েই এই রাজ্যের মহারাজাদের সঠিক মূল্যায়ন করে প্রয়োজনীয় স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের প্রতিটি মানুষের সার্বিক উন্নয়নে চিন্তা করেন। তারই ফলশ্রুতিতে বিগত দশ বছর ধরে দেশবাসী পেয়েছে একের পর এক জনমুখী প্রকল্প। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আয়তনে ছোট রাজ্য হলেও সারা দেশের বিচারে ত্রিপুরার উন্নয়নের গতি অভাবনীয়। দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছ ও গতিশীল প্রশাসন পরিচালনার উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে ই-ক্যাবিনেট ও ই-অফিস ব্যবস্থা। রাজ্যের যুব সম্প্রদায়ের কর্মসংস্থানের প্রয়োজনে সরকারী চাকরি প্রদানের পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে এখন ছয়টি জাতীয় সড়ক রয়েছে। আরও চারটি সড়ককে নীতিগতভাবে জাতীয় সড়ক ঘোষণা করা হয়েছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের ২,২৭৫ কোটি টাকায় রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিষেবার মানোন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণ করা হচ্ছে। জল জীবন মিশনে ৫ লক্ষ ৫১ হাজার বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ, ১ লক্ষ ২০ হাজার ৬২৪ হেক্টর জমি জল সেচের আওতায় আনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় শহর ও গ্রামীণ এলাকায় ৬২,৩২৭টি এবং ৭৪ হাজার আবাস নির্মাণ করা হয়েছে। ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার ৯৩৬ জনকে সামাজিক ভাতা দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়াও প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় ১৩ লক্ষের বেশি মানুষকে আয়ুষ্মান কার্ড দেওয়া হয়েছে। ৮১২টি বিদ্যালয়ে স্মার্ট ক্লাস চালু করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধিতে এখন পর্যন্ত ২,৪৬,৩৩৯ জন কৃষকের অ্যাকাউন্টে পনেরোটি কিস্তিতে ৬৪০ কোটি টাকার বেশি জমা পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনার আওতায় এসেছেন ১২ লক্ষের বেশি কৃষক।