যানজটে অবরুদ্ধ রাজধানীর বাণিজ্যিক এলাকা!!
অনলাইন প্রতিনিধি : রাজধানীর প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে পরিচিত নেতাজী সুভাষ রোড, সেন্ট্রাল রোড সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পণ্যবাহী যানবাহনের দখলে থাকছে। এতে প্রতিদিনই যানজটে নাজেহাল হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। একদিকে নেতাজী সুভাষ রোড ও সেন্ট্রাল রোডের রাস্তায় সিংহভাগ অংশ ছোট, মাঝারি থেকে পণ্যবাহী গাড়ির দখলে থাকছে। অপরদিকে রাস্তায় দুই পাশের ফুটপাথের দখল নিয়ে ব্যবসায়ীরা পণ্যসামগ্রী সাজিয়ে রাখছে। পণ্যবাহী যানবাহন রাস্তা দখল করে রাখায় ছোট মাঝারি ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে যাত্রী গাড়িকে যানজটে পড়ে নাজেহাল হতে হচ্ছে। ফুটপাথ ব্যবসায়ীদের দখলে চলে যাওয়ায় পথচলতি মানুষকে চলাচলের ক্ষেত্রে চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ফুটপাথ পথ চলতি মানুষের জন্য হলেও সে সুযোগ নেই। এতে বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যানজটের মধ্যেই চলাচল করতে হচ্ছে পথ চলতি মানুষকে। কামান চৌমুহনী থেকে সেন্ট্রাল রোডের দিকে যাওয়ার প্রবেশপথে ওয়ানওয়ের নামে নোএন্ট্রি বোর্ড এবং নেতাজী চৌমুহনীতে নেতাজী সুভাষ রোডের দিকে যাওয়ার পথে ওয়ানওয়ের নামে নোএন্ট্রি বোর্ড লাগিয়েই ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব শেষ করছে।
অভিযোগ, নেতাজী সুভাষ রোড, সেন্ট্রাল রোডের একটা বড় অংশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশ, থানা পুলিশ ও পুর নিগমের একাংশের সঙ্গে গোপন সমঝোতা থাকায় রাস্তা দখল করে গাড়িতে পণ্য ওঠা নামা ও ফুটপাথ দখলের মতো ঘটনার বিরুদ্ধে কোনও কার্যকরী প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। বছরের পর বছর যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মানুষকে। প্রতিদিনের মতো শুক্রবারও সকাল থেকে সন্ধ্যারাত পর্যন্ত যানজটে নাজেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছিল রাজধানীর নেতাজী সুভাষ রোড, সেন্ট্রাল রোড এলাকা। থানা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, পুর নিগমের একাংশকে – ম্যানেজ করে সকাল থেকে দুপুর সেন্ট্রাল রোডের একপাশে, দুপুর থেকে সন্ধ্যা রাত পর্যন্ত রাস্তার অপর পাশে রাস্তার সিংহভাগ দখল করে ছোট মাঝারি থেকে বড় গাড়ি দাঁড় করিয়ে চলে পণ্য লোডিং-আনলোডিং- এর কাজ। নেতাজী সুভাষ রোডে একদিন রাস্তার এক পাশে, অপরদিন উল্টো দিকে ছোট, মাঝারি ও বড় বড় পণ্যবাহী ট্রাক গাড়ি দাঁড় করিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পণ্য ওঠানো নামানোর কাজ চালানো হচ্ছে। একসঙ্গে চলছে পণ্যবাহী ঠেলার সারি সারি গতিবিধি। তাছাড়া থাকছে ব্যবসায়ীদের ব্যক্তিগত ব্যবহারের বাইক গাড়ির লাইন। ফলে রাস্তায় আর বাইক স্কুটি, ছোট ছোট ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে চলাচল দুষ্কর হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি রাজধানীর নেতাজী সুভাষ রোড, সেন্ট্রাল রোড, চিত্তরঞ্জন রোডের বড় বড় গোডাউন ও পাইকারী দোকান থেকে বড় বড় ট্রাক গাড়িতে সকাল-সন্ধ্যায় পণ্যসামগ্রী লোডিং-আনলোডিং করার কাজ ভোর থেকে সকাল আটটা অথবা রাত আটটার পর করতে দেওয়া হলে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যানজট এড়ানো সম্ভব হবে বলে শহরের বিশিষ্ট জনেরা অভিমত ব্যক্ত করছেন। সংশ্লিষ্ট রাস্তা এলাকায় যান চলাচল ও ট্রাফিক ব্যবস্থা স্বাভাবিক করা সম্ভব হবে। জনদুর্ভোগও লাঘব হবে।এদিকে রাজধানীর নাগেরজলার প্রবেশপথ থেকে শুরু করে বটতলার গোলচক্কর পর্যন্ত রাস্তা, প্যারাডাইস চৌমুহনী, হকার্স কর্ণারের সামনের রাস্তা, কামান চৌমুহনী এলাকায় ট্রাফিকের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়। দুর্ভোগে পড়তে হয় মানুষকে। তাছাড়া পুরাতন মোটর স্ট্যাণ্ডকে কেন্দ্র করে মাল্টিস্টোরিড পার্কিং গড়ার কাজ চলায় মোটর স্ট্যাণ্ডের দুপাশের সরু রাস্তাকে কেন্দ্র করে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাশারীপট্টি রাস্তার মুখ থেকে মোটরস্ট্যাণ্ড শনিতলা পর্যন্ত রাস্তায় চরম যানজটের সৃষ্টি হয়। একই অবস্থা শকুন্তলা রোডের ক্ষেত্রেও। কোনও ক্ষেত্রে ট্রাফিকের কোনও ভূমিকা না থাকায় যানজট নিয়ে নিত্যদিন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে মানুষকে। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র এলাকাগুলিকে যানজটমুক্ত রেখে স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রাখতে সকাল নয়টা থেকে সন্ধ্যা সন্ধ্যা রাত ৭-৮টা পর্যন্ত মাঝারি ও বড় বড় গাড়িগুলিকে শহরে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ কার্যকরী করতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন শহরবাসী। শহরবাসীর দাবি রাজধানী শহরের যানজট সমস্যার সমাধানে প্রয়োজন মাস্টার প্ল্যান গড়ে তুলে শহরের একাধিক এলাকায় পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হোক।