মৃৎশিল্পকে ধরে রেখে এগিয়ে নিয়ে যেতে সচেষ্ট মৃৎশিল্পীরা!!

 মৃৎশিল্পকে ধরে রেখে এগিয়ে নিয়ে যেতে সচেষ্ট মৃৎশিল্পীরা!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-অষ্টমী পাল। বয়স ৬১ বছর। স্বামী সাধন রুদ্রপাল। অনেকদিন আগেই মারা গেছেন। অষ্টমী পালের দুই ছেলে গৌরাঙ্গ রুদ্রপাল ও উত্তম রুদ্রপাল। পরিবারের পেশা মাটির বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করে তা বাজারে বিক্রি করা। এর থেকে উপার্জিত আয় দিয়ে সংসারের ভরণপোষণ চালানো। ডিজিটাল যুগে মৃৎশিল্পের কদর কমলেও বাজারে চাহিদা রয়েছে অনেক। মাটির থাল, গ্লাস থেকে শুরু করে প্রদীপ, ধূপতি, কলস ফুলের টব, ছোট বড় পাতিল, ঘট, ইত্যাদি বিভিন্ন সামগ্রী বাজারে বিক্রি হয়ে থাকে। কিন্তু বিভিন্ন প্রতিকূলতায় ধীরে ধীরে এই শিল্প লুপ্ত হওয়ার পথ থেকে তাকে বাঁচাতে অষ্টমী পালের পরিবার ধরে রেখেছে। পরিবারের সবাই মিলে অর্থাৎ ছেলে ছেলের বউ এ পেশার সাথে যুক্ত হয়ে আত্মনির্ভর হয়ে উঠার চেষ্টায়। অষ্টমী পাল ক্ষোভের সাথে জানালেন সরকারী সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। একই বক্তব্য দুই ছেলে গৌরাঙ্গ রুদ্রপাল এবং উত্তম রুদ্রপালেরও।ব্যাঙ্ক থেকে আর্থিক সহযোগিতা, কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা থেকে শুরু করে যেসব জনকল্যাণমূলক প্রকল্প রয়েছে তাও গ্রহণে আগ্রহী। বিলোনীয়া ভারতচন্দ্রনগর ব্লকের অধীন উত্তর ভারতচন্দ্রনগর পঞ্চায়েত এলাকায় কালনঢেপা। অনেকটা প্রত্যন্ত এলাকা। কালনঢেপা এসবি স্কুলের পাশেই অষ্টমী পালের বাড়ি।বাড়ির উঠোনে দেখা যায় বিভিন্ন মাটির সামগ্রী তৈরি করে রোদ্রে শুকাতে দেওয়া হয়েছে। ছোট ছেলে উত্তম পাল ওজনদার চরকা ঘুরিয়ে তার উপর জল মিশ্রিত নরম মাখামাটি রেখে ঘট, ফুলের টব, কলস, বিভিন্ন সামগ্রী দুহাতের আঙুলের নৈপুণ্য শিল্প দক্ষতায় তৈরি করছেন। তার স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা রুদ্রপালও এক বছরের শিশু কন্যাকে কোলে রেখে সযত্নে মাটির সামগ্রী তৈরির কাজে ব্যস্ত। বড় ছেলে গৌরাঙ্গ রুদ্রপাল তার স্ত্রী সহ মাটির সামগ্রীগুলি শুকানোর জন্য উঠানে সরিয়ে ছিটিয়ে রৌদ্রে বিছিয়ে দেওয়ার কাজে ব্যস্ত। জানালেন এসব মাটির সামগ্রীগুলির বর্তমান বাজার দর আগের চাইতে অনেক বাড়লেও গাড়ি করে বা ভারে করে বিলোনীয়া সহ বিভিন্ন জায়গায় বাজারে যেতে হচ্ছে বিক্রির জন্য। বর্ষা মৌসুমে এই শিল্পে প্রতিকূল অবস্থানে নেমে আসে। দুর্গাপূজা থেকে শুরু করে বিভিন্ন পুজোর সময় বা বিভিন্ন উৎসব পার্বণে মাটির এসব সামগ্রীর চাহিদা রয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয় সরকারী আর্থিক সহযোগিতা সহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেলে এই শিল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনুকূল পরিকাঠামো গড়ে উঠা সহায়ক হবে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.