যুবাদের দায়িত্বে আনা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত সিপিএম নেতৃত্ব!!

 যুবাদের দায়িত্বে আনা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত সিপিএম নেতৃত্ব!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-এখন পর্যন্ত আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এককভাবে লড়াইয়ের সিদ্ধান্তে অনঢ় সিপিএম।এ লক্ষ্যেই রাজ্যের দুটি লোকসভা আসনে প্রার্থী নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়েছে। পশ্চিম ও পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভা আসনে এ দফায় যুবাদের প্রাধান্য দিচ্ছে সিপিএম।যাতে পরবর্তী পর্যায়ে রাজ্যে ঘুরে দাঁড়াতে পারে সিপিএম।কারণ রাজ্যে ২০১৮ এবং ২০২৩ সালে বিধানসভা ও ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে সিপিএমের ভরাডুবি হয়।কিন্তু এরপর দলের বিভিন্ন শীর্ষপদে বুড়োদের বসিয়ে রাখা হয়। ফলে দলের যুব সম্প্রদায় একের পর এক দলত্যাগ করছে।রবিবার দলের দুদিনব্যাপী রাজ্য কমিটির বৈঠক শুরু হয়।মেলারমাঠ রাজ্য কার্যালয়ে।তবে প্রথমদিনের বৈঠকে বুড়োদের দায়িত্ব থেকে অপসারণ ও যুবকদের দায়িত্ব প্রদানকে ঘিরে সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব আড়াআড়িভাবে বিভক্ত হয়ে যায় বলে সিপিএম সূত্রে খবর।সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠকে পলিটব্যুরো সদস্য মানিক সরকার, রাজ্য সম্পাদক জিতেন চৌধুরী, রমা দাশ, পবিত্র কর, রতন ভৌমিক, মানিক দে, তপন চক্রবর্তী, অঘোর দেববর্মা, অমল চক্রবর্তী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।সিপিএম সূত্রে খবর, প্রথমদিনের বৈঠকে ২০১৮ সাল থেকে কেন – দলের ভোটব্যাঙ্ক তলানিতে ঠেকেছে।
কেন কুড়িটি উপজাতি আসনে বামেদের মূল শক্তি উপজাতি ভোটব্যাঙ্ক এবং আসন শূন্য হয়ে গিয়েছে।এ বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।দলের এক শীর্ষ নেতা জানান,বর্তমান এগারোজন বিধায়কের ভূমিকা নিয়েও বৈঠকে প্রশ্ন উঠেছে।এমনকী জিএমপির ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে।শুধু তাই নয়,সিট্যু সহ অন্যান্য গণ সংগঠনেরও একই হাল।এরা সবাই দলের শীর্ষস্থান দখল করে আছে। তবে তাদের আন্দোলন শুধুমাত্র রাজধানীতে সীমাবদ্ধ।অথচ এই বুড়ো নেতৃত্বদের রাজ্যের গ্রাম ও পাহাড়ে কোনও অস্তিত্ব নেই। তবে এরপরও এরা বছরের পর বছর একই পদে বসে রয়েছে।আর উল্টোদিকে দলের ভোটব্যাঙ্ক তেপ্পান্ন শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র একুশ শতাংশে।এর একটাই কারণ,বিগত পঁয়ত্রিশ বছরের মতো এখনও দলের যুবাদের রাজ্য নেতৃত্বের দায়িত্বে আনা হচ্ছে না।যার প্রমাণ সম্প্রতি ‘কেরালা’-তে রাজনৈতিক হামলা শীর্ষক ওরিয়েন্ট চৌমহনীর সভাতে পান দলের রাজ্য নেতৃত্ব। কারণ এ দিনের সভাতে বুড়োদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়।তবে দলের যুব নেতৃত্বের কোনও অস্তিত্ব ছিল না।যার ফলে দলের একমাত্র পলিটব্যুরো সদস্য ও রাজ্য সম্পাদক সম্পূর্ণ হতাশ ছিলেন।যার বহি:প্রকাশ এ দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে হয়ে যায়।রাজ্যের ষাটটি বিধানসভা কেন্দ্রে দলের বর্তমানে বেহাল দশা।সম্প্রতি সিপিএম রাজ্য নেতৃত্ব এবং প্রাক্তন মন্ত্রীর পরিবার পর্যন্ত শাসকদলে যোগদানে ব্যস্ত। একই হাল দলের যুব নেতৃত্বদের ও কর্মী সমর্থকদের।কিন্তু কেন?এই প্রশ্নের উত্তর রাজ্য নেতৃত্বদের কাছে না থাকলে এসব রুখতে একটি রণকৌশল নিয়েছে সিপিএম।এমনকী দেরিতে হলেও বুড়োদের ছাঁটাই সহ রাজ্য নেতৃত্বে যুবাদেরও আনতে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে দল। তবে এই ভাবনাচিন্তার মধ্যেই আসন্ন লোকসভার নির্বাচনের পরিণাম নিয়েও রাতের ঘুম উঠে গিয়েছে রাজ্য নেতৃত্বের।
সিপিএম সূত্রে খবর,যদি ইন্ডিয়া জোটের সিদ্ধান্ত রাজ্য পরবর্তী পর্যায়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের চাপে কার্যকর হয় তবে রাজ্যে কংগ্রেস দলের সাথে আসন সমঝোতায় যেতে পারে সিপিএম।তবে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সাথে জোটে যেতে চাইছেন না দলের রাজ্য নেতৃত্ব।এ দিন কংগ্রেসের সাথে জোট এই সিদ্ধান্তকে ঘিরেও রাজ্য নেতৃত্বদের মতানৈক্য হয়েছে বলে খবর। সোমবার পর্যন্ত চলবে সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠক।উল্লেখ্য,গত মে মাসে রাজ্য কমিটির বৈঠকে যুব নেতৃত্বদের রাজ্য নেতৃত্বের দায়িত্ব প্রদানের সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত কার্যকর হয়নি।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.