বিশ্বের প্রাচীনতম লিপস্টিকের খোঁজ ইরানে, বয়স ৩৭০০ বছর!
অনলাইন প্রতিনিধি :-যিশু খ্রিস্টের জন্মের দেড়-দুই হাজার বছর আগেও মেয়েরা লিপস্টিক ব্যবহার করতেন! বিশ্বের প্রাচীনতম লিপস্টিকের খোঁজ পাওয়া গেল ইরানে।নৃতাত্ত্বিকেরা জানিয়েছেন, এই লিপস্টেকের বয়স ৩৭০০ বছর বা তদূর্ধ্ব!অত বছর আগেও লিপস্টিকের ব্যবহার ছিল, নৃবিজ্ঞানীদের সেটাই চমকে দিয়েছে।তেইশ বছর আগে ইরানের দক্ষিণাংশে জিরোফত এলাকায় মাটি খুঁড়ে এক ধরনের বোতলের সন্ধান পান প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। গবেষণা করে তারা জানতে পারেন, সেই বোতলেই রয়েছে বিশ্বের প্রাচীনতম লিপস্টিক। ২০০১ সালেই জিরোফত এলাকা থেকে একটি বোতলের ভিতরে লিপস্টিকের সন্ধান পেয়েছিলেন প্রত্নতত্ত্ববিদেরা।উজ্জ্বল ক্রিমসন বর্ণের লিপস্টিক সেটি। প্রসাধনীর সন্ধান পেলেও তার বয়স নিয়ে নিশ্চিত হতে পারছিলেন না প্রত্নতত্ত্ববিদেরা।প্রায় দুই দশক ধরে গবেষণা শেষে প্রত্নবিজ্ঞানীরা এই প্রসাধনীর সঠিক বয়স নির্ধারণ করে ফেলেন।রেডিয়ো কার্বন পদ্ধতিতে বয়স নির্ধারণ করে তারা জানতে পারেন বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো লিপস্টিক এটি।৩৭০০ বছর পুরোনো এই লিপস্টিকটি ১৬৮৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তৈরি করা হয়েছিল বলে ‘জার্নাল সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’-এ প্রকাশিত জানিয়েছেন গবেষকরা।প্রত্নতত্ত্ববিদেরা জানিয়েছেন, এই লিপস্টিক মূলত হেমাটাইট নামের খনিজ দিয়ে তৈরি।লিপস্টিকের লাল রঙের নেপথ্যে রয়েছে হেমাটাইট নামের অক্সাইড খনিজের উপস্থিতি। এই খনিজ থেকেই উজ্জ্বল লাল বর্ণের উৎপত্তি।এই লিপস্টিকটি একটি সুন্দর খোদাই করা বোতলের মধ্যে
রাখা।গবেষণাপত্রে লেখা হয়েছে, ‘গভীর লাল এই প্রসাধনীটি ঠোঁটের রঙের প্রস্তুতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ঠোঁটের প্রসাধনী হিসাবে সম্ভবত এটাই বিশ্বের সর্বাপেক্ষা প্রাচীন।’
প্রত্নবিদরা জানিয়েছেন, খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দে দক্ষিণ-পূর্ব ইরানের কেরমান প্রদেশ ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত হয়েছিল।সেই বন্যা বহু কবরস্থান নষ্ট করে দিয়েছিল। পরে, জল সরে গেলে স্থানীয় লোকজন সমাধির পাশে থাকা জিনিসপত্র লুটপাট শুরু করে।সেই সময় বহু প্রাচীন, দুষ্প্রাপ্য বস্তুর অস্তিত্ব সামনে আসে।যে বোতলে এই প্রসাধনীটি ছিল, সেই বোতল ছিল একটি লুটপাটের অংশ। শুধু ওই বোতলই নয়,পাথর ও তামার অনেক মূল্যবান নিদর্শন পরবর্তীতে
ইরানি নিরাপত্তা বাহিনী উদ্ধার করে এবং অবশেষে জিরোফত প্রত্নতাত্ত্বিক যাদুঘর এবং কেরমান ও তেহরানের অন্যান্য সংগ্রহশালায় জড়ো করে। আবিষ্কৃত প্রাচীনতম লিপস্টিকটি তাম্র যুগের নির্দশন বলে দাবি করা হয়েছে গবেষণাপত্রে।