পরিবারতন্ত্র!

 পরিবারতন্ত্র!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-পরিবারতন্ত্র। এদেশের রাজনীতির আঙিনায় এই শব্দটির ব্যবহার প্রায়শই শোনা যায়। তা কেবল রাজনীতিতেই পরিবারতন্ত্র নয়,খেলার জগৎ থেকে অভিনয়ের জগৎ, গানের জগৎ- সর্বত্রই আমরা পরিবারতন্ত্রের নানা উদাহরণ দিতে পারি।তবে রাজনীতির আঙিনায়ই এই পরিবারতন্ত্রকে বেশি করে টেনে আনা হয়,এতে করে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ঘায়েল করতে সুবিধা পায়।এদেশে পরিবারতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো গান্ধী পরিবার। এই পরিবারের দিকেই একযোগে সবাই নিশানা তাক করে সময়ে অসময়ে জওহরলাল নেহরু থেকে ইন্দিরা গান্ধী,রাজীব গান্ধী, সঞ্জয় গান্ধী,মানেকা গান্ধী, রাহুল গান্ধী,প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, বরুণ গান্ধী -তালিকাটা অবশ্য লম্বা গান্ধী পরিবারের।

তেমনি দেশের আরেক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী চরণ সিং, অজিত সিং বর্তমানে জয়ন্ত চৌধুরী থেকে হালের লালুপ্রসাদ যাদব,তার পুত্র তেজস্বী যাদব,মুলায়ম পুত্র অখিলেশ যাদব, ওয়াইএসআর রেড্ডি পুত্র জগনমোহন রেড্ডি, তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে করুণানিধি পুত্র স্ট্যালিন। তেমনি তেলেঙ্গানার চন্দ্রশেখর রাওয়ের কন্যা, শারদ পাওয়ার কন্যা সুপ্রিয়া শোলে, জম্মু কাশ্মীরের ফারুক পুত্র ওমর আবদুল্লা,ঝাড়খন্ডের শিবু শোরেনের পুত্র হেমন্ত শোরেন,আসামের তরুণ গগৈর পুত্র গৌরব গগৈ কিংবা মেঘালয়ের পি এ সাংমা পুত্র কনরাজ সাংমা কিংবা হালের মমতার ভ্রাতুস্পুত্র অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো কত নাম পরিবারবাদের সাথে জড়িয়ে গেছে।উল্টোদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পুত্র জয় শাহ, রাজনাথ সিংয়ের পুত্র কিংবা হিমাচলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রেম কুমার ধুমলের পুত্র অনুরাগ ঠাকুর কিংবা রাজমাতা বিজয় রাজে সিন্ধিয়া,বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া কিংবা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া,হালে প্রয়াত বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজের কন্যা কিংবা প্রমোদ মহাজনের কন্যারাও পরিবারবাদের ঠেলায় রাজনীতিতে এখন পরিচিত নাম।এই পরিবারবাদ নিয়ে রাজনীতিতে প্রায়শই কচকচানি চলে।বহু যুগ ধরেই তা চলে আসছে।ভোট এলে তো আর কথাই নেই।সম্প্রতি তা আবার মাথাচাড়া দিয়েছে। সম্প্রতি পাটনায় এক জনসমাবেশে বিষয়টিকে টেনে এনেছেন আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদব। লালুপ্রসাদ যাদব সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি সবসময় পরিবারতন্ত্র নিয়ে আমাদের আক্রমণ করেন।কিন্তু আমাদের তো সবার পরিবার রয়েছে।সন্তান রয়েছে। মোদিকে প্রশ্ন করা উচিত তার পরিবার কোথায়?ব্যস হয়ে গেলো।বিজেপি শিবিরের অন্দরে এনিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়।এর সমালোচনা এবং প্রতিবাদ শুরু হয়।এবার শুরু হয় মোদির জবাব – সম্প্রতি তেলেঙ্গানায় গিয়ে মোদি জানান যে, অনেক স্বপ্ন নিয়ে আমি সব ছেড়ে বেরিয়েছিলাম।আজ গোটা দেশ বলছে তারা মোদির পরিবার।আজ দেশ আমার পরিবার।দেশের স্বপ্ন আমার স্বপ্ন।মোদির যেই বলা অমনি শুরু অপারেশন, বিজেপির নেতারা দেশজুড়ে প্রচার শুরু করে দিলেন মোদির পরিবার নিয়ে।অমিত শাহ থেকে শুরু করে বিজেপির তাবড় নেতারা সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের প্রোফাইলে ‘মোদি কা পরিবার’ লিখে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন।

একদা ১৯৭৫ সালে ইন্দিরা রাজত্বে প্রচার চলছিল, ‘ইন্দিরা ইজ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া ইজ ইন্দিরা’।আজ অবধি তুষ্টিকরণের রাজনীতিতে এটিই ছিল সেরা স্লোগান।এবার যোগ হয়েছে ‘মোদি কা পরিবার’ স্লোগান।
তাহলে কি বিজেপি মোদিতন্ত্রে সিলমোহর দিচ্ছে?এক সময় কংগ্রেসের নাম হয়ে গেছিল ইন্দিরা কংগ্রেস।ইন্দিরা গান্ধী হয়ে ওঠেছিলেন কংগ্রেস থেকেও বড়।অর্থাৎ ‘লার্জার দ্যান লাইফ’।

মোদিও কি এখন বিজেপিতে তাই? এতদিন ধরে মোদির দল হিসাবে বিজেপির পরিচিতি ছিল। তবে কি এবার বদলে যাচ্ছে বিজেপি?দল নয়, ব্যক্তি বড়।মোদিতন্ত্রে কি সিলমোহর দিল বিজেপি?

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.