সব বুথে জয়ের ভাবনা নিয়ে মাঠে ঝাঁপাতে হবে : মুখ্যমন্ত্রী!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যে
যতগুলি বুথ রয়েছে আসন্ন নির্বাচনে সবগুলিতে জয়ী হতে হবে।এমন ভাবনা চিন্তা নিয়েই দলের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।কোথাও মোটেও হাল্কাভাবে নেওয়া যাবে না।
মঙ্গলবার তেলিয়ামুড়ার চিত্রাঙ্গদা কলাক্ষেত্রে ভারতীয় জনতা পার্টির তেলিয়ামুড়া মণ্ডলের পৃষ্ঠাপ্রমুখ সম্মেলনে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা।পৃষ্ঠা প্রমুখদের সংগঠনের মূল চালিকা শক্তি বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পৃষ্ঠা প্রমুখরাই ভারতীয় জনতা পার্টির মূল শক্তি। বুথস্তর পর্যন্ত সংগঠনকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে তাঁদের অবদানকে তিনি সম্মান করেন।পৃষ্ঠা প্রমুখদের ভূমিকারও কথাও এ দিন তিনি বিস্তৃত পরিসরে মেলে ধরেন।তিনি বলেন,প্রতিটি কর্মকর্তা ভারতীয় জনতা পার্টির এক একজন সৈনিক। আগে সারা রাজ্যে ৪২হাজার
পৃষ্ঠা প্রমুখ ছিলেন। আর এখন সেটা বেড়ে হয়েছে ৬৬হাজার। মানুষ জন্য পৃষ্ঠা প্রমুখদের অনেক দায়দায়িত্ব রয়েছে।প্রতিটি বাড়িতে মানুষের সঙ্গে জনসম্পর্ক স্থাপনে তাদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারে না থাকার সময় যে জোশ ছিলেন সরকার থেকে সেটা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।সেই জোশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করতে হবে কার্যকর্তা ও পৃষ্ঠা প্রমুখদের।দলীয় কার্যকর্তাদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী ডা.সাহা বলেন, ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যকর্তারা সব সময় মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকেন।সারা বছরে ৩৬৫ দিনই মানুষের কল্যাণে বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণের জন্য কাজ করেন তারা।নির্বাচন কমিশনের ভোট ঘোষণার অনেক আগে থেকেই ভারতীয় জনতা পার্টির সৈনিকরা কাজ করে যাচ্ছেন।
মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা বলেন, নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১৯ এপ্রিল পশ্চিম ত্রিপুরা ও আগামী ২৬ এপ্রিল পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভা আসনে ভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।আর একে সামনে রেখে ভারতীয় জনতা পার্টি অনেক আগে থেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবারের কার্যকারিণী বৈঠকে আসন্ন ভোটে ভারতীয় জনতা পার্টির আসন সংখ্যা ৩৭০ টার্গেট করে দিয়েছেন।যে আসন সংখ্যা ছিল ৩০৩।কেন তিনি ৩৭০ বলেছেন সেটার কারণও ব্যাখা দিয়েছেন।জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারাকে অবলুপ্ত করার প্রেক্ষাপটকে সম্মান জানিয়ে এই সংখ্যা নিরূপণ করে দিয়েছেন তিনি। এর পাশাপাশি সহযোগী পার্টিদের নিয়ে এই আসন সংখ্যা ৪০০ পার করার আহ্বান রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিনের সম্মেলন থেকে বিকশিত ভারত, বিকশিত ত্রিপুরা, নারী শক্তির অধিকার রক্ষার জন্য, হর ঘর জলের জন্য, গরিবি কম করার জন্য, কৃষকদের উন্নতির জন্য, যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য ফের একবার কেন্দ্রে ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার প্রতিষ্ঠিত করার জন্য স্লোগান তুলেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবসময় উদ্বুদ্ধ করেন।যার প্রেক্ষিতে সবার নিরলসভাবে দলের জন্য, মানুষের জন্য, দেশ ও রাজ্যের জন্য কাজ করা প্রয়োজন।প্রধানমন্ত্রী সবসময় দেশাত্মবোধের কথা বলেন। মেরি মাটি মেরি দেশ, ৭৫ সীমান্ত গ্রাম, ক্রান্তি বিরো কি নাম, হর ঘর তিরঙ্গা এর মতো দেশাত্মবোধক ভাবনাচন্তিা এনেছেন তিনি। যা আগে শোনা যায়নি। এভাবে দেশের মানুষের মধ্যে দেশাত্মবোধের ভাবনা জাগ্রত করেছেন তিনি।প্রধানমন্ত্রী বলেছেন মে চৌকিদার হু।যা কমিউনিস্ট ও কংগ্রেসের রাজনীতিতে কেউ কখনো শুনেননি।প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে স্বচ্ছতার মাধ্যমে কেন্দ্রে এখন সরকার চলছে। আর সেই দিশায় মানুষের সার্বিক কল্যাণে কাজ করছে রাজ্য সরকারও।মানুষ চায় একটা স্বচ্ছ সরকার থাকুক। যে কারণে প্রধানমন্ত্রীর উপর সকল অংশের মানুষের বিশ্বাস বেড়েছে।মানুষের জন্য তিনি মন কি বাত কর্মসূচি শুরু করেছেন।এনিয়ে সারা পৃথিবীতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।প্রধানমন্ত্রী মানুষকে স্বপ্ন দেখান।আর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে গ্যারান্টি দিচ্ছেন। আবার সেই গ্যারান্টির ১০০ শতাংশ বাস্তবায়নেও গ্যারান্টি দিচ্ছেন। তাই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ত্রিপুরার দুটি আসনে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীদের বিপুল ভোটে জয়ী করে প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালের আগে কেউ ভাবেননি এমন একটা জগদ্দল পাথরকে সরানো যাবে। আর সেটা সম্ভব হয়েছে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ভারতীয় জনতা পার্টির তদানীন্তন সভাপতি অমিত শাহের জন্য।সমর্পণের ভাবনা নিয়ে পণ্ডিত দীনদয়াল জীর ভাবাদর্শে কাজ করে ভারতীয় জনতা পার্টি।এখানে কিছু পাওয়ার আশা যদি কেউ থাকে বা পাওয়ার জন্য রাজনীতি করে তবে মুর্খের স্বর্গে বাস করে।কাজ করতে হবে দেশের জন্য।এই পার্টিতে এক একজন লিজেন্ড রয়েছেন।ডা. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর মাত্র ৩৩ বছর বয়সে ক্যালকাটা ইউনির্ভাসিটির ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন।উনি যদি ভাবতেন আরাম আয়েশের জীবন কাটাবেন তবে সেটা করতে পারতেন। জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তিনি।একই দেশে এক নিশান, এক বিধান, এক প্রধান থাকার দাবি তুলেছিলেন তিনি।এ দিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে কংগ্রেস ও সিপিএমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন,সিপিএম কংগ্রেসের কাছে কোনও ইস্যু নেই।কি নিয়ে তারা রাস্তায় বের হবে।তিনি বলেন, ভাবতেও এখন দুঃখ লাগে সিপিএমের অফিস থেকে কংগ্রেসের ফ্ল্যাগ ফেস্টুন আর কংগ্রেসের অফিস থেকে সিপিএমের ফ্ল্যাগ ফেস্টুন বের হয়।তাদের সময়কালে রাজ্যে সন্ত্রাসের পরিবেশ কায়েম করে রেখেছিল।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বিগত বিধানসভা নির্বাচনের পরিস্থিতি উল্লেখ করে বর্তমান রাজ্য সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন,২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনের সময় কি শান্তিপূর্ণভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে মানুষ সেটা দেখেছে।
এ দিন সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, আসাম ও ত্রিপুরার সংগঠন মহামন্ত্রী রবীন্দ্র রাজু,প্রদেশ সহ সভাপতি সুবল ভৌমিক, প্রদেশ সাধারণ সম্পাদক অমিত রক্ষিত, বিধানসভার মুখ্য সচেতক তথা বিধায়ক কল্যাণী রায়, মণ্ডল সভাপতি রঞ্জিত সূত্রধর সহ জেলা ও মণ্ডল স্তরের অন্যান্য নেতৃত্বে।
সম্মেলনে বিজেপি কর্মীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়।