পঞ্চায়েত থেকে মহাকরণে অচলাবস্থা!!

 পঞ্চায়েত থেকে মহাকরণে অচলাবস্থা!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা -হওয়ার পর থেকে সাধারণ প্রশাসনে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। মহাকরণ থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত – সর্বত্র সৃষ্টি হয়েছে প্রশাসনিক অচলাবস্থা। ভোটের কাজে বিভিন্ন স্তরের অফিসার কর্মচারী নিযুক্ত হওয়ায় প্রশাসনের জরুরি কাজকর্ম মুখ থুবড়ে পড়েছে। ভোটের কাজে নিযুক্তির অজুহাত দিয়ে নিজ নিজ অফিসে উপস্থিত থাকছেনই না। অথচ ভোটকর্মীদের ভোট গ্রহণ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের দিন ছাড়া বাকি দিনগুলিতে অফিসে উপস্থিত থেকে নিয়মিত ও স্বাভাবিক প্রশাসনিক কাজকর্ম করার কথা। অভিযোগ, ভোটের কাজে নিযুক্ত হওয়ার অজুহাত তুলে কার্যত ভোটের কাজে নিযুক্ত অফিসার-কর্মচারীদের সিংহভাগই নামমাত্র অফিসে হাজির থাকছেন। অনেকে একেবারেই প্রশাসনিক কোনও কাজকর্মই করতে চাইছেন না। এতে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রশাসনিক যাবতীয় কাজকর্ম। জরুরি প্রয়োজনে গ্রাম পঞ্চায়েত, ভিলেজ কমিটির অফিস থেকে আরওআর সহ কোনও সার্টিফিকেট পাচ্ছেন না। এই অবস্থা নগর পঞ্চায়েত, পুর পরিষদ, পুর নিগমের অফিস থেকেও পাচ্ছেন না আরওআর সহ যেকোনও প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট। পাচ্ছেন না জন্ম-মৃত্যুর সার্টিফিকেটও। গ্রাম পঞ্চায়েত নগর অফিসে সাধারণ মানুষ বিশেষ প্রয়োজনে গেলে বলে দেওয়া হচ্ছে কর্মচারীরা ভোটের কাজে নিযুক্ত। এখন কোনও সার্টিফিকেট দেওয়া সম্ভব নয়। নির্বাচনি প্রক্রিয়া শেষ হলে আসতে বলে দেওয়া হচ্ছে।একই পরিস্থিতি বিডিও অফিস থেকে মহকুমা শাসকের অফিসেও। জরুরি প্রয়োজনে মানুষ পিআরটিসি, ইনকাম সার্টিফিকেট, সারভাইবেল সার্টিফিকেট, এসসি সার্টিফিকেট, এসটি সার্টিফিকেট, ওবিসি সার্টিফিকেট, রেশন কার্ডে নাম তোলা, রেশন কার্ড থেকে নাম বাদ দেওয়া, রেশন কার্ড পৃথকীকরণ, রেশন কার্ড স্থানান্তরের জন্য আবেদন করতেও পারছেন না। মানুষকে বলে দেওয়া হচ্ছে এখনকোনও সার্টিফিকেট ইস্যু করা সম্ভব হবে না। অফিসার কর্মচারীরা ভোটের কাজে ব্যস্ত। নির্বাচনি প্রক্রিয়া শেষ হলে অফিসে এসে যোগাযোগ করতে। । ইতিপূর্বে নির্বাচন ঘোষণার আগেও যারা এসসি সার্টিফিকেট, এসটি সার্টিফিকেট, ওবিসি সার্টিফিকেট, – সারভাইবেল সার্টিফিকেট, ইনকাম সার্টিফিকেট, পিআরটিসি, রেশন কার্ডে নাম তোলা, রেশন কার্ড থেকে নাম বাদ দেওয়া, রেশন কার্ড স্থানান্তর করার আবেদন করেছেন তারা অফিসে অফিসে ঘুরে কোনও সার্টিফিকেট পাচ্ছেন না। রেশন কার্ড সংক্রান্ত কোনও কাজও করাতে পারছেন না। সারভাইবেল সার্টিফিকেটও পাচ্ছেন না। তহশিল অফিসগুলিতে নামজারির শত শত আবেদনপত্র জমা পড়ে থাকলেও কোনও কাজ হচ্ছে না। তহশিল অফিসগুলিতে গেলে মানুষকে বলে দেওয়া হচ্ছে নির্বাচনি প্রক্রিয়া শেষ হলে আসতে। হচ্ছে না জমি ডিমার্কেশনের কাজও। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, নির্বাচনের কাজে নিযুক্ত অফিসার-কর্মচারীদের নির্বাচনের কাজে নিযুক্তি দিলেও যেদিন কোনও নির্বাচনি প্রক্রিয়ার কাজ থাকে না সেদিন নিয়মিত অফিস ডিউটি করলে মানুষের হয়রানি হতো না। এদিকে, সাধারণ প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের থানাস্তর থেকে বিভিন্ন স্তরের অফিসাররা নির্বাচনি নিরাপত্তার কাজে যুক্ত হয়ে পড়ায় থানার স্বাভাবিক কাজও ব্যাহত হচ্ছে। মানুষ চুরি, ছিনতাই থেকে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের বিষয়ে থানাগুলিতে, গিয়েও কোনও ফল পাচ্ছেন না। চুরি- ছিনতাই সহ নানা বিষয়ে অভিযোগ জানাতে থানায় গেলে অভিযোগ নথিভুক্ত করা ছাড়া পুলিশ তেমন কোনও কার্যকরী ভূমিকা নিচ্ছে না। জরুরি প্রয়োজনেও পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন করাতে পারছেন না। একইভাবে জেলাশাসকের অফিসের সঙ্গে সাধারণ মানুষের যেসব কাজ যুক্ত তাও কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। এদিকে নির্বাচন ঘোষণা হতেই মন্ত্রীরাও নির্বাচনি প্রচারের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় মহকরণমুখী হতে পারছেন না। এতে সাধারণ প্রশাসনিক ফাইলপত্র জমছে। ভোট প্রক্রিয়া চলাকালীন মানুষ যাতে প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় পরিষেবা পান সেদিকে নজর দিতে প্রশাসনের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.