ফ্রিজ অ্যাকাউন্ট: সরগরম রাজনীতি!!

 ফ্রিজ অ্যাকাউন্ট: সরগরম রাজনীতি!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

কংগ্রেসের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে রাখা হয়েছে।ফলে কংগ্রেস আর্থিক সংকটে ভুগছে। নির্বাচনি প্রচারের জন্য কংগ্রেসের কাছে কোনও টাকাই নেই।কংগ্রেস এ নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে।গত কয়দিন ধরেই কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে লাগাতর তোপ দেগে চলেছে।অভিযোগ হচ্ছে,বিজেপি ইচ্ছে করেই ইনকাম ট্যাক্সকে দিয়ে কংগ্রেসের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে রেখেছে। এতে করে নির্বাচনের মুখে বেকায়দায় পড়েছে কংগ্রেস। খোদ সাংবাদিক সম্মেলন করে কংগ্রেস প্রাক্তন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এই অভিযোগ এনেছেন।
তবে কংগ্রেস এই অভিযোগ করলেও আশ্চর্যজনকভাবে ইনকাম ট্যাক্স বা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলির তরফে এমর্মে কোনও ধরনের প্রতিক্রিয়া নেই।গত কয়েকদিন ধরেই ক্রমাগত কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী তার ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রায় এই অভিযোগ করে আসছিলেন। কিন্তু বিজেপি কিংবা ইনকাম ট্যাক্স,বা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলির তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া ছিল না।
যদিও শনিবার নমো নমো করে বিজেপি নেতা সম্বিৎ পাত্রা জানিয়েছেন, কংগ্রেসের মাত্র একটি অ্যাকাউন্টই ফ্রিজ করা হয়েছে যার সঙ্গে ইনকাম ট্যাক্সের বিষয় জড়িত রয়েছে।আর কোনও অ্যাকাউন্টই ফ্রিজ করা হয়নি।সবগুলিই সচল। কংগ্রেসের অ্যাকাউন্টে ১০০০ কোটি টাকার উপর রয়েছে বলে দাবি সম্বিৎ পাত্রার।তাহলে প্রশ্ন ওঠেছে, সম্বিৎ পাত্রা বা বিজেপি এতোদিন পর লাগাতর কংগ্রেসের অভিযোগের জবাব দিলেন কেন?প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেখানে কংগ্রেসের জবাব দিতে এক ঘন্টাও দেরি করেন না,সেখানে কংগ্রেসের মতো শতাব্দীপ্রাচীন দেশের প্রধান বিরোধী দল মারাত্মক অভিযোগ আনার পর তারা কেন চুপ? ইনকাম ট্যাক্স বা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলি এমর্মে চুপ কেন?যদি ধরে নেওয়া যায় সম্বিৎ পাত্রার দাবি সঠিক হয় তাহলে কংগ্রেস এতোদিন ধরে এত মারাত্মক অভিযোগ করছে কেন?শুধু তাই নয়, কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী স্বয়ং প্রথমবারের মতো কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা নিয়ে বেজায় আক্রমণ করেছেন মোদিকে।সোনিয়া গান্ধী বলেছেন, সরকারী সিস্টেমকে কাজে লাগিয়ে কংগ্রেসকে আর্থিকভাবে পঙ্গু করার প্ল্যান করেছেন প্রধানমন্ত্রী।ঘৃণায় ভরপুর এক আসুরিক শক্তি গণতন্ত্রকে খুন করছে।তারপর মোদি- শাহ দেশে গণতন্ত্র রয়েছে বলে দাবি করছেন- তা সর্বৈব মিথ্যা।দেশে গণতন্ত্র নেই।
মূলত ১৯৯৪-৯৫ সালে কংগ্রেসের তৎকালীন সভাপতি সীতারাম কেশরীর আমলে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সম্প্রতি আয়কর দপ্তরের নোটিশ পাঠানো হয়েছে কংগ্রেসকে।আর এ জন্যই কংগ্রেসের অভিযোগ, ত্রিশ বছর পরে হঠাৎ করে কোথা থেকে এই অভিযোগ এলো। এতদিন সরকার কী করছিল? হঠাৎ করে লোকসভা ভোটের
মুখে এই নোটিশ পাঠানোর অর্থ কী?
অন্যদিকে, ২০১৭-১৮ সালে কংগ্রেস তাদের তহবিলে চৌদ্দ লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা নগদে জমা করেছিলো।সেই অপরাধে কংগ্রেসের চারটি ব্যাঙ্কের এগারোটি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে আয়কর দপ্তর।জরিমানা করা হয়েছে ২১০ কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, ব্যাঙ্ক ম্যানেজারদের ভয় দেখিয়ে দলের অ্যাকাউন্ট থেকে ১১৫ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কংগ্রেসের কাছ থেকে।
কংগ্রেসের অভিযোগ,এটা নজিরবিহীন ঘটনা।এটা কি গণতন্ত্রের নমুনা?বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে। অন্যদিকে দেশের প্রধান বিরোধী দলকে পঙ্গু করার চক্রান্ত চলছে। রাহুল গান্ধী বলেছেন এখনও দেশের কুড়ি শতাংশ মানুষের ভোেট রয়েছে আমাদের।অথচ আমাদের এখন এমন অবস্থা যে দুই টাকা খরচ করার সামর্থ্য নেই।এটা ক্রিমিন্যাল অফেন্স বলে মনে করেন তিনি।
দেশের শাসক বিজেপিকেই এটা পরিষ্কার করতে হবে কেন কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে রাখা হয়েছে।বিশেষ করে ভোটের মুখে কোনও দলের কাছে টাকা না থাকলে কীভাবে তারা ভোটের খরচ জোগাবে।বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।কংগ্রেসের অভিযোগ আরও – নির্বাচনি বন্ড থেকে বেশিরভাগ অর্থই পেয়েছে বিজেপি।আর কংগ্রেসের টাকা আটকে রাখা হচ্ছে আয়কর দপ্তরকে দিয়ে।এটা নজিরবিহীন। লোকসভা নির্বাচনে এর জেরে রাজনীতি সরগরম হয়ে ওঠেছে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.