দেনার দায়ে জর্জরিত আম্বানি-আদানি

 দেনার দায়ে জর্জরিত আম্বানি-আদানি
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

মুকেশ আম্বানি এবং গৌতম আদানি ভারতের দুই ধনকুবের। এই দুজনের সম্মিলিত আয় ২০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের চেয়েও বেশি। তাদের সংস্থার মোট রোজগার ৩৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। কিন্তু দেশের মোট বৈদেশিক ঋণের এক বিরাট অংশ এই দুজনের কাঁধে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার রিপোর্টে এমনটা জানা গিয়েছে। বিদেশ থেকে যদি ৫ ডলার দেশে ঋণ হিসেবে নেওয়া থাকে তবে তার মধ্যে অন্তত ১ ডলার আদানি-আম্বানি নিয়েছেন। এই সমীক্ষার ফল বাইরে আসতেই হইচই পড়ে গিয়েছে আর্থিক মহলে।
গৌতম আদানি করোনা পরবর্তীকালে একের পর এক ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সাফল্য পেয়েছেন আকাশছোঁয়া। ধনীতমদের তালিকায় ৬ নম্বরে উঠে এসেছেন তিনি। সম্প্রতিকালের অম্বুজা সিমেন্ট কিনে গৌতম পিছিয়ে নেই কোথাও। তার ব্যবসায়িক বৃদ্ধির সঙ্গে তাল না রাখতে পেরে ক্রমশ লড়াই থেকে ছিটকে গিয়েছে বাকি সংস্থাগুলি। শেষ দু বছরে প্রায় রকেটের গতিতে উত্থান গৌতমের। কিন্তু এর পাশাপাশি, অন্য বাস্তবতাও আছে। একদিকে যেমন বিপুল ব্যবসায়িক বৃদ্ধি, তেমনই আদানি গোষ্ঠীর ঋণের পরিমাণেও বিপুল বৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। শেষ দুই বছরে আদানি গোষ্ঠীর ঋণের পরিমাণ লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে।

ভারতের বিভিন্ন কোম্পানির বৈদেশিক মুদ্রায় নেওয়া ঋণের পরিমাণ হল ৩৮,২০০ কোটি মার্কিন ডলার। এই ৩৮,২০০ কোটি মার্কিন ডলারের মধ্যে আদানি-আম্বানির তৈরি করা কোম্পানিগুলোর নেওয়া ঋণের পরিমাণ ৮,৫০০ কোটি মার্কিন ডলার।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সমীক্ষা অনুযায়ী বলা যায়, মুকেশ আম্বানি এবং গৌতম আদানি দেশের ধনীতম ব্যক্তি। দেশের সবথেকে বেশি ঋণ গ্রহণকারী ব্যক্তিও দুজনে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেন এত বেশি বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নিয়ে থাকেন মুকেশ আম্বানি এবং গৌতম আদানি? তার একটা বড় কারণ বৈদেশিক মুদ্রায় নেওয়া যে ঋণ, যাকে ‘ এক্সটারনাল কমার্শিয়াল বরোয়িং’ বা ইসিবি বলা হয় এর সুদের হার বেশ কম।
বিশেষত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনের মতো দেশের ব্যঙ্কগুলো থেকে নেওয়া সুদের হার বেশ কম। তাই বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নিতে পছন্দ করে থাকেন মুকেশ আম্বানি এবং গৌতম আদানি। যদিও এই সুদের হার আর অল্প থাকবে বলে মনে করা হছে না। আন্তর্জাতিক স্তরে যে পরিস্থিতি চলছে, তাতে শীঘ্রই মন্দার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্তরে ব্যাঙ্কগুলো বড় সুদের হার বৃদ্ধি করতে পারে।

সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, শেষ দুই বছরে এই আদানি গোষ্ঠীর ঋণ চড় চড় করে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বছরের শেষে মার্চ মাসে আদানি গোষ্ঠীর ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লক্ষ ২২ হাজার কোটিতে। গত বছর এই ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ৫৭ হাজার কোটি।
এক লাফে ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি ঋণের ক্ষেত্রে। এখানেই শেষ নয়। গৌতম আদানির আদানি গোষ্ঠীর মোট ঋণের পরিমাণেও বদল এসেছে।
আদানি গোষ্ঠীর হাতে একের পর এক নতুন ব্যবসায়িক ক্ষেত্র উন্মোচিত হচ্ছে। একের পর এক ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে পা রাখছেন আদানি।সেই কারণে মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ প্রয়োজন।
স্বাভাবিকভাবেই, এই বিনিয়োগ আদানি নিজের পকেট থেকে করবেন না। ব্যাঙ্কের ঋণ লাগবে। তাই ঋণের মাত্রা একটু বেশিই উপরের দিকে গৌতম আদানি গোষ্ঠীর। প্রায় একই অবস্থা মুকেশের ক্ষেত্রেও।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.