গ্যারান্টির মন্ত্র।।

 গ্যারান্টির মন্ত্র।।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দেশে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে একদিকে শাসক বিজেপি এবং অন্যদিকে প্রধান বিরোধী শক্তি কংগ্রেস ভোটারদের কাছ গ্যারান্টি স্লোগান নিয়ে মাঠে নেমেছে।প্রথমে কর্ণাটকে এবং পরে তেলেঙ্গানায় বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের জয়ের পেছনে প্রধান অস্ত্র হিসাবে কাজ করেছিল এই গ্যারান্টি প্রতিশ্রুতি।অর্থাৎ আম জনতার জন্য কংগ্রেস কি কি কাজ করবে সেই প্রতিশ্রুতিই দুই রাজ্যে বিধানসভায় নির্বাচনে ম্যাজিকের মতো কাজ করেছিল বলে মনে করছে কংগ্রেস।এবার সেই একই কৌশল লোকসভা ভোটে কংগ্রেস দেশবাসীর জন্য উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।এই অভিযান কর্মসূচিকে কংগ্রেস নাম দিয়েছে ‘ঘর ঘর গ্যারান্টি’।গোটা দেশে কংগ্রেস মোট ১১ কোটি পরিবারের মধ্যে এই গ্যারান্টি কার্ড পৌঁছে দেবে।আগামী শুক্রবার কংগ্রেস তাদের নির্বাচনি ইস্তাহার প্রকাশ করবে।যার নাম দেওয়া হয়েছে ৫ ন্যায় এবং ২৫ গ্যারান্টি।কর্ণাটক ও তেলেঙ্গানা বিধানসভার ভোটেও – একইভাবে গ্যারান্টি কার্ড বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছিল কংগ্রেস। দল ক্ষমতায় এলে সাধারণ মানুষের জন্য কি কি কাজ করবে তার লিখিত গ্যারান্টি ছিল এই ‘গ্যারান্টি কার্ডে।কংগ্রেসের ভোট মেশিনারীতে যুক্ত অনেকের অভিমত হলো- এই গ্যারান্টি কার্ডই দলের সাফল্যের পেছনে প্রধান ভূমিকা নিয়েছে এবং নির্বাচনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।বুধবার এই ভোট কৌশলের সূচনা হিসাবে রাহুল গান্ধী তার লোকসভা আসনে কেরলের ওয়েনাদে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢ়রাকে পাশে নিয়ে পাঁচ ন্যায় এবং পঁচিশ গ্যারান্টির যেমন আনুষ্ঠানিক সূচনা করলেন তেমনি একইদিনে উত্তর-পূর্ব দিল্লীর লোকসভা আসনেও কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ঘর ঘর গ্যারান্টি অভিযানের সূচনা করলেন।দলীয় প্রচারে বলা হয়েছে, ঘরে ঘরে যে গ্যরান্টি কার্ড পৌঁছে দেওয়া হবে,তাতে খাড়গের পাশাপাশি রাহুল গান্ধীর স্বাক্ষরও থাকছে।কংগ্রেস এবছর লোকসভার ৩০০’র বেশি আসনে একা প্রার্থী দিচ্ছে।সেই প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রেই জনসংযোগের জন্য মোট ১১ কোটি গ্যারান্টি কার্ড তৈরি করেছে দল।গ্যারান্টি কার্ড ছাড়াও প্যাঁচ ন্যায় ও পঁচিশ গ্যারান্টির পক্ষে প্রচারের বিষয়টি মানুষকে জানানোর জন্য কংগ্রেস কল সেন্টারকেও কাজে ব্যবহার করবে।
উল্টো দিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবার নির্বাচনে ‘মোদি কি গ্যারান্টি’ বলে প্রচারে নেমেছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রচারে মূল স্লোগানই
হলো’মোদি গ্যারান্টি’।এই স্লোগানের মূল কথা হলো যেখানে অন্যদের কাছ থেকে প্রত্যাশা শেষ হয়,সেখানেই শুরু হয় মোদিরগ্যারান্টি।তাই এই গ্যারান্টিতে বলা হয়,২০১৪ সাল পর্যন্ত এক দশকে ক্ষমতাসীন দল বাজেটে যতগুলো ঘোষণা করেছে, তার চেয়ে বেশি সংখ্যক দুর্নীতিতে লিপ্ত ছিল।২০১৪ সালের আগে দেশের তরুনরা হতাশায় ডুবে ছিল আর তাদের ভবিষ্যৎ ছিল অন্ধকারে।কিন্তু পরিবর্তন পরিস্থিতিকে বদলেছে।ভারতের যুবকরা এখন আরও আত্মবিশ্বাসী, সৎ এবং বলিষ্ঠ।তাই শাসকের কথায় মোদি কি গ্যারান্টি দরিদ্রদের আস্থা, কৃষকদের বিশ্বাস, মহিলাদের আশা, যুবকদের আকাঙ্খা এবং মোদির নেতৃত্বে সরকারের সম্মিলিত প্রত্যয়ের প্রতীক।মোদির উন্নয়নের নিশ্চয়তা থেকে কংগ্রেসের ন্যায় বিচারের নিশ্চয়তা, বেকারত্ব থেকে মূল্যবৃদ্ধি, ধারা ৩৭০ থেকে অভিন্ন সিভিল কোড,রামমন্দির থেকে নির্বাচনি বণ্ড, কৃষক সমস্যা থেকে এমএসপির গ্যারান্টি, অমৃতকাল বনাম অন্যায়কালের বিতর্ক- সব মিলিয়ে লোকসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, প্রতিশ্রুতি বনাম প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগে প্লাবিত হচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গন। এই বিতর্ক ও প্রচারণা যত তীব্র হবে ততই ভারতের ভবিষ্যতের জন্য আদর্শতে লড়াই এবং দৃষ্টিভঙ্গির নতুন নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হবে।এই উচ্চমাত্রার মননের যুদ্ধ ভোটারদের অনুভূতিকে প্রভাবিত করবে। প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের প্রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপে নিজেদের জায়গা সুরক্ষিত করার জন্য এই যুদ্ধকে হাতিয়ার করবে।কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা, নির্বাচনি উন্মাদনা বাড়লেও এই ভোট যুদ্ধের প্রভাব ভোটারদের মধ্যে অনুরণিত হয়ে আদর্শগত অবস্থানের সঙ্গে একত্রিতভাবে সুস্থতার পরিমণ্ডলকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এটাই হোক মূল লক্ষ্য।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.