বিদেশি আমন্ত্রণ।।

 বিদেশি আমন্ত্রণ।।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের,গণতন্ত্রের মহোৎসব শুরু হয়ে গেছে।সাত দফার ভোটে আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ শুরু হলেও, প্রবীণ বয়স্ক ও দিব্যাঙ্গ নাগরিকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটগ্রহণ করার পর্ব শুরু করে দিয়েছে নির্বাচনের কাজে নিযুক্ত ভোটকর্মীরা।এরমধ্যে নতুন খবর সামনে এসেছে। ভারতের গণতন্ত্রের মহোৎসব পরিদর্শনের জন্য এবার বিশ্বের ২৫টি প্রথমসারির রাজনৈতিক দল ও দলের নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে পদ্ম শিবির।আগামী ১৯ এপ্রিল সাত দফার ভোটের প্রথম পর্ব শুরু হবে। তার আগে দফায় দফায় বিদেশি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের ভারতের নির্বাচন ব্যবস্থার খুঁটিনাটি পরিদর্শনের ব্যবস্থা করেছে বিজেপি।

খবরে প্রকাশ, আমন্ত্রিত বিদেশি রাজনৈতিক দলের নেতা- নেত্রীদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা নির্বাচনি সভাতেও নিয়ে যাওয়া হবে।পাশাপাশি বিদেশি রাষ্ট্রদূতদেরও নির্বাচন সহ ভারতীয় জনতা পার্টির যাবতীয় কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।খবরে আরও প্রকাশ, এই ব্যাপারে বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা সম্প্রতি দিল্লীতে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সাথে বৈঠক করেছেন।বেশিরভাগ দেশেরই শাসক ও প্রধান বিরোধী দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।তবে চিন বা পাকিস্তানের কোনও দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কার্যত ওই দুই দেশকে বয়কট করেছে পদ্ম শিবির। প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লিগকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও বিরোধী দল বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।বাংলাদেশে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাককে পরোক্ষে সমর্থন এবং ভারত বিরোধিতায় বরাবরই সক্রিয় এই দলটি।এই কারণেই বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে খবরে প্রকাশ।
পদ্ম শিবিরের এমন উদ্যোগ প্রথম না হলেও, এতোবড় আয়োজন অতীতে হয়নি বলে অনেকের অভিমত। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, দেশের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে এতগুলি বিদেশি রাজনৈতিক দলকে কেন আমন্ত্রণ জানিয়েছে বিজেপি? এর পিছনে কি এমন উদ্দেশ্য রয়েছে?এই নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে বিভিন্ন রকম অভিমত ব্যক্ত করা হচ্ছে।একটি মহল মনে করছে, দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারি,ভারতে গণতন্ত্র নিয়ে বিরোধী দলগুলির সমালোচনা,সংখ্যালঘু পীড়ন ইত্যাদি অভিযোগ ও সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে পদ্ম শিবির দেখাতে চাইছে – মোদি জমানায় ভারত আসলে অতীতের অন্ধকার ছাপিয়ে আলোর পথে হাঁটছে। যাবতীয় অভিযোগ এবং সমালোচনা আদতে অসত্য। বিশ্বের সামনে ভারতের মহান গণতন্ত্রকে কালিমালিপ্ত করার প্রয়াস ছাড়া আর কিছুই নয়।অপর একটি মহল মনে করছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতকে যে বিশ্বগুরু করে তোলার সংকল্প নিয়েছেন, এটি তারই প্রয়াস। তাই বিজেপি ও মোদি লোকসভা নির্বাচনকেই হাতিয়ার করেছে। কেননা, এতো বড় নির্বাচনি আয়োজন বিশ্বের কোনও দেশে নেই। ফলে এটা উত্তম সময়, ভারতের গণতন্ত্রকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার।এমনিতেই প্রধানমন্ত্রী মোদি গোটা বিশ্বের সামনে ভারতকে গণতন্ত্রের মাতৃভূমি হিসেবে তুলে ধরেন। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, মোদি জমানায় সেই গণতন্ত্রই আজ সবচেয়ে বেশি বিপন্ন। ধর্মনিরপেক্ষতা বিপন্ন।মোদি সরকার দেশের সংবিধান বদলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিরোধীরা। এই অভিযোগ অসত্য প্রমাণ করতেই পদ্মশিবিরের এমন মেগা আয়োজন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তবে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, ভারতের গণতন্ত্রের মহোৎসব পর্যবেক্ষণ করার জন্য প্রতিবেশী চিন ও পাকিস্তানকে ব্রাত্য রাখা হলেও,নির্বাচনি প্রচারে কিন্তু ওই দুই দেশকে কিছুতেই ব্রাত্য রাখা যাচ্ছে না। প্রচারে শাসক- বিরোধী সব দলের নেতা-নেত্রীদের ভাষণে ঘুরে ফিরে আসছে চিন ও পাকিস্তানের নাম।তবে যে যাই বলুক, এতবড় আয়োজনের পিছনে প্রধানমন্ত্রী মোদির যে একটি বৃহৎ উদ্দেশ্য আছে,সেটা কিন্তু অস্বীকার করার উপায় নেই।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.