পশ্চিমে শান্তিতেই ভোট ৮১.৫২% !!
অনলাইন প্রতিনিধি :- অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় রাজ্যের ১নং পশ্চিম ত্রিপুরা নির্বাচন ক্ষেত্রে এবং একইসাথে ৭নং রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ভোটকে কেন্দ্র করে কোথাও কোনও অশান্তির খবর নেই। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত পশ্চিম ত্রিপুরা নির্বাচন ক্ষেত্রে ভোটের হার ছিল ৮০.৪ শতাংশ। এই ভোটের হার আরও ২ থেকে ৩ শতাংশ বাড়তে পারে। কারণ নির্ধারিত সময় (৫টা) অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও ৩৩২টি ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের লাইন রয়েছে। অপেক্ষমান ভোটারের সংখ্যা প্রায় ২৩ হাজার। রাতে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী পশ্চিম আসনে ভোটের হার ৮১.৫২ শতাংশ। ৭ নং রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ভোটের হার রেকর্ড হয়েছে ৬৮.৬৪ শতাংশ।
রামনগরেও ভোটের হার আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন পশ্চিম আসনের রিটার্নিং অফিসার ডা. বিশাল কুমার। রামনগরেও একাধিক বুথে বিকেল পাঁচটার পর ভোটাররা লাইনে রয়েছেন। এখানে একসাথে লোকসভা এবং বিধানসভা উপনির্বাচনের ভোট হওয়ার কারণে একটু সময় বেশি | লাগছে। রাতে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ৭ নং রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে ৭১.২১ শতাংশ। সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করে পশ্চিম আসনের রিটার্নিং অফিসার তথা পশ্চিম জেলার জেলাশাসক ডা. এ বিশাল কুমার জানিয়েছেন, সকাল থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ভোটকে কেন্দ্র করে কোনও অশান্তি, হিংসা, বুথ দখল, ছাপ্পা ভোট, ভোটারদের বাধা দেওয়ার কোনও ‘অভিযোগ নেই। সকাল থেকে কিছু কিছু অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু ওইসব অভিযোগ সাথে সাথেই ভেরিফাই করে দেখা গেছে অসত্য। তবে দু’জনকে আটক করা হয়েছে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরির জন্য। এছাড়া রামনগর কেন্দ্রের একটি পোলিং স্টেশনের দুজন ভোটকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কারণ তারা একের অধিক ভোটারকে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করাচ্ছিল। সিসি ক্যামেরায় তা প্ররা পড়ে। অভিযোগ পাওয়ার সাথে লাথেই ওই দুই ভোটকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়। এছাড়া ভোটকে কেন্দ্র করে আর কোনও অভিযোগ নেই। ভোট পুরিপুরি শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু এবং অবাধ বলে দাবি করেছেন রিটার্নিং অফিসার। এরজন্য তিনি সমস্ত রাজনৈতিক দল এবং ভোটারদের অভিনন্দন জানিয়েছেন আরক্ষা কর্মী, ভোট কর্মী থেকে শুরু সংশ্লিষ্ট সকলকে। রিটার্নিং অফিসার ডা. বিশাল কুমার আরও জানিয়েছেন, আশা করা হচ্ছে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচন থেকে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে ভোটের হার আরও বাড়বে। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিম আসনে ভোটের হার ছিল ৮১ শতাংশ। এবার সবথেকে বেশি ভোটার বিলোনীয়া বিধানসভা কেন্দ্রে। এখানে গড়ে ৮৫ শতাংশ ভোট রেকর্ড হয়েছে। আর সব থেকে কম ভোটের হার রেকর্ড হয়েছে রামনগর কেন্দ্রে। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ৬৮.৬৪ শতাংশ। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী এ দিন সকাল সাতটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়।
সকাল থেকেই পশ্চিম আসনের অন্তর্গত প্রতিটি বিধানসভার মোট ১৬৮৬টি পোলিং স্টেশনেই ভোটারদের দীর্ঘ লাইন লক্ষ্য করা গেছে। ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। তবে কয়েকটি পোলিং স্টেশনে ইভিএম গোলযোগের জন্য ভোট প্রক্রিয়া শুরু হতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে কমিশনের প্রক্ষ থেকে সাথে সাথেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বেলা বারোটার পর থেকে ভিড় অনেকটাই কমে যায়। এর পিছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রখর রোদ এবং গরম। রোদ কিছুটা কমতেই বিকেল থেকে আবার ভিড় বাড়তে থাকে। যে কারণে বিকেল পাঁচটার পরেও ৩৩২টি পোলিং স্টেশনে ভোটারদের লাইন রয়ে গেছে। মোট ১৬৮৬টি পোলিং স্টেশনের মধ্যে ১৩৫৪টি পোলিং স্টেশনে বিকেল পাঁচটার মধ্যে ভোট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেছে। এ দিন সকালেই মহারাণী তুলসীবতী বালিকা বিদ্যালয়ে ভোট দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। ওই কেন্দ্রেই ভোট দিয়েছেন পশ্চিম আসনের ইন্ডিয়া জোটের কংগ্রেস প্রার্থী আশিস কুমার সাহা। সকালে মায়ের কাছে আশীর্বাদ নিয়ে উদয়পুর মাতাবাড়িতে গিয়ে ত্রিপুরেশ্বরী মাকে দর্শন করে উদয়পুর ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বুথে গিয়ে ভোট দিলেন পশ্চিম আসনের বিজেপি প্রার্থী প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, শক্তিশালী ভারত এবং শক্তিশালী ত্রিপুরা গঠন এবং তৃতীয়বারের জন্য নরেন্দ্র মোদিকে প্রধানমন্ত্রী করার জন্য ভোট দিলাম। এছাড়াও এ দিন শিশুবিহার স্কুলে সস্ত্রীক ভোট দিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার।ভোট শেষে পশ্চিম ত্রিপুরা নির্বাচন ক্ষেত্রের এবং রামনগর কেন্দ্রের ভোটারদের অভিনন্দন জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি রাজীব ভট্টাচান বলেন, প্রথম দফার ভোট উৎসাহ, উদ্দীপনা এবং উৎসবের আমেজে সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করেন। সমস্ত ভোটকর্মী, আরক্ষা কর্মী এবং সংবাদমাধ্যমে কর্মীদেরও তিনি ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন জানিয়েছেন। একই সাথে বিরোধীদে সমস্ত অভিযোগকে ভিত্তিহীন, অসত্য এবং বিভ্রান্তি বলে দাবি করেছেন। পরাজ নিশ্চিত জেনেই শাসক দলকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই তারা অপপ্রচারের রাস্তা বেছে নিয়েছে বলে দাবি করেন। অপরদিকে, ভোট শেষে ইন্ডিয়া জোটের নেতা সাংবাদিক সম্মেলন করে ভোটকে প্রহসন বলে দাবি করেন। সেই সাথে পশ্চিম আসনের এবং রামনগরের ভোট বাতিলের দাবি জানান।