বিজেপির সমর্থনে গোটা রাজ্যে চলছে জনস্রোত : মুখ্যমন্ত্রী!!

 বিজেপির সমর্থনে গোটা রাজ্যে চলছে জনস্রোত : মুখ্যমন্ত্রী!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-মানুষ সার্বিকভাবেই বিজেপিকে সমর্থন করছে। জাতি এবং জনজাতি অংশের সবারই আস্থা এবং ভরসার কেন্দ্রস্থল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।দেশ এবং রাজ্যের উন্নয়নের নিরিখেই মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিজেপিকে সমর্থন করছেন।কাজের নিরিখেই তারা তৃতীয়বারের মতো নরেন্দ্র মোদিকে প্রধানমন্ত্রীর কুরসিতে দেখতে চাইছেন। শনিবার ধলাই জেলার তিনটি স্থানে রোড শো এবং করমছড়ায় নির্বাচনি সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমনই বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা।

এ দিন ছামনু এবং করমছড়ায় রোড শোতে রীতিমতো জনস্রোত দেখা দেয়। যা প্রত্যক্ষ করে উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা বলেন, পদ্মশিবিরের দিকেই রয়েছে জনতা। বিজেপির সমর্থনে সারা রাজ্যেই হয়েছে জনস্রোত। এ দিনের জনপ্লাবন তারই ইঙ্গিত। মুখ্যমন্ত্রী এদিন সন্ধ্যায় কমলপুরেও রোড শোতে অংশ নিয়েছেন। সেখানেও ছিল জলঢল।
এদিন লোকসভা নির্বাচনে পূর্ব ত্রিপুরা জনজাতি সংরক্ষিত আসনে ভারতীয় জনতা পার্টি মনোনীত প্রার্থী কৃতি সিং দেববর্মণের সমর্থনে করমছড়ায় সুবিশাল নির্বাচনি জনসমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা বলেন, ২০২৩ সালের পর হিংসা মুক্ত নির্বাচন করে আরেকটি ইতিহাস তৈরি করেছে ত্রিপুরা।কীভাবে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করা যায় সেটা এই সরকার করে দেখিয়েছে। কমিউনিস্ট কংগ্রেসের কুশাসন, রাজনৈতিক হিংসা এবং নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাস থেকে মুক্ত হয়ে এখন ডবল ইঞ্জিন সরকারের বিকাশের দিশায় এগিয়ে চলেছে ত্রিপুরাবাসী।এর ফলে উন্নত হচ্ছে জনজাতিদের জীবনমান। সুশাসনের এই ধারাকে অব্যাহত রাখতে মোদি সরকারই একমাত্র ভরসা।
সমাবেশে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য বিরোধী দলগুলির প্রবল সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।তিনি বলেন, ইন্ডিয়া জোট তাদের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন সেটা পর্যন্ত নির্ধারণ করতে পারেনি।কারণ তারা এই ইন্ডিয়া জোট সঠিকভাবে গঠন করতে পারেনি।কেরালা ও পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম ও কংগ্রেস একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। আর ত্রিপুরায় তারা একসাথে লড়ছে। তাই এই জোটের কোনও ভিত্তি নেই।
মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা বলেন, ২০১৪ সালের আগে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে পড়েছিল।কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরেন্দ্র মোদি আসার পর সবকিছু বদলে গেছে।আগে গোটা দেশ ও উত্তর পূর্বাঞ্চলে অস্থির পরিস্থিতি ছিল।কিন্তু এখন সর্বত্র শান্তি সুস্থিতি বিরাজ করছে।অন্যান্য দেশের নেতারা প্রধানমন্ত্রী মোদিকে মিস্টার বস বলে সম্মান করেন।প্রধানমন্ত্রী মোদি সবসময় মহিলা, যুবক, কৃষক এবং দরিদ্রদের জন্য কাজ করেন।তিনি বলছেন যে,এই চারটি শ্রেণীর বিকাশ হলে দেশ উন্নত হবে। আগে অনেক মানুষ উত্তর-পূর্ব সম্পর্কে সচেতন ছিলেন না। প্রধানমন্ত্রী মোদি ক্ষমতায় আসার পর উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উন্নয়নে বিশেষ জোর দিয়েছিলেন।তিনি রাজ্যকে হিরা মডেল, অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি দেন। যার জন্যই ব্যাপক উন্নয়নের সাক্ষী হয়েছে রাজ্যবাসী।
সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলগুলির কাজই হচ্ছে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি
সৃষ্টি করা। আমরা প্রত্যক্ষ করেছি সিপিএমের শাসনামলে এই রাজ্যে কীভাবে হিংসার ঘটনা হতো। তখন বিরোধী দলের নেতাদের রাজ্য পর্যন্ত ছাড়তে হয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় জনতা পার্টি নেতৃত্বাধীন সরকার রাজ্যে শান্তির পরিবেশ কায়েম রেখেছে। একটি উন্নত জাতি গঠনের জন্য এই লোকসভা নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিরোধীরা দাবি করছে যে ত্রিপুরায় নাকি গণতন্ত্র নেই। কিন্তু তাদের সময়ে বহু মানুষ খুন হয়েছে। এমনকী তাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পর্যন্ত খুন করা হয়েছে। সরকারী কর্মকর্তাদেরও খুন করা হয়েছে। এই নির্বাচনের পরে রাজনৈতিক খুনের মামলাগুলি পুনঃতদন্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
ডা. সাহা বলেন, এই সরকার সর্বদা জনগণের সমস্যা সমাধানে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে হিংসা মুক্ত নির্বাচনের আরও একটি ইতিহাস তৈরি করেছে। ২০২৩ সালের পরে শুক্রবারও ইতিহাস তৈরি হয়েছে। পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা আসনের নির্বাচনে সহিংসতার একটি ঘটনাও ঘটেনি।বিজেপি হিংসার তীব্র বিরোধী। মনুঘাটের টাউন হল সংলগ্ন মুক্তমঞ্চ আয়োজিত সমাবেশে বিধায়ক শম্ভু লাল চাকমা, বিজেপির ধলাই জেলা সভাপতি পতিরাম ত্রিপুরা, তিপ্রা মথা জেলা কমিটির সভাপতি রতি ত্রিপুরা, আইপিএফটির জেলা সভাপতি কর্ণ দেববর্মাসহ অন্যরা ছিলেন। লংতরাইভ্যালি মহকুমার দুটি রোড শোতে মন্ত্রী টিংকু রায়, যুব নেতা নবাদল বণিক, স্থানীয় বিধায়ক সহ অন্যরা ছিলেন।
লংতরাই মহকুমার কর্মসূচি শেষ করে সন্ধ্যায় কমলপুর মহকুমা সদরে লোকসভার পূর্ব আসনের প্রার্থী কৃতি সিং দেববর্মণের সমর্থনে রোড শো করেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা।সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী শ্রীসাহা কমলেশ্বরী কালী বাড়িতে পুজো দেন।সঙ্গে ছিলেন বিধায়ক মনোজ কান্তি দেব সহ দলের অন্য নেতৃত্ব। এরপর সাংবাদিকদের সামনে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষ স্বউদ্যোগে বিজেপির কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন। দলের গঠনমূলক ভূমিকাকে সমর্থন করেছেন।পূর্ব আসনের নির্বাচনও শান্তিপূর্ণভাবে হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।এরপর শুরু হয় রোড শো। মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে রেখে মিছিল এগিয়ে যায় শহরের পথ দিয়ে।শেষ হয় ফুলছড়িতে।রবিবার মুখ্যমন্ত্রী সুরমা কেন্দ্রে আসবেন, মরাছড়া দ্বাদশে প্রকাশ্য জনসভায় তিনি বক্তব্য রাখবেন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.