বিপর্যস্ত পাহাড়ি রেলপথে পণ্য পরিবহণ বন্ধে দুর্ভোগ

 বিপর্যস্ত পাহাড়ি রেলপথে পণ্য পরিবহণ বন্ধে দুর্ভোগ
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

বিপর্যস্ত পাহাড়ি রেলপথের কারণে বিপদ বাড়ছে রাজ্যের । নানাদিক থেকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে রাজ্যবাসীকে । বিপর্যস্ত পাহাড়ি রেলপথের কারণে ১৪ মে থেকে বন্ধ হয়ে আছে দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল । গুয়াহাটি , কলকাতা , ভোপাল , নয়াদিল্লী , সেকেন্দ্রাবাদ , বেঙ্গালুরু , পাটনা , কানপুর সহ দেশের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে রেলপথে রাজ্যের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে । ফলে নিতান্ত নিরুপায় সাধারণ মানুষ চড়া মূল্যের টিকিট কেটে বিমানে চলাচল করতে হচ্ছে । ফলে দুর্ভোগ সইতে হচ্ছে রাজ্যবাসীকে । রেলপথ বন্ধ থাকার কারণে রাজ্যবাসীকে বিপাকে পড়তে হচ্ছে অন্যদিক থেকেও । এই কারণে রাজ্যে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী আসার ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটছে প্রচণ্ডভাবে । ব্যাঘাত ঘটছে রাজ্যের ব্যবসায়ীদের বহিঃরাজ্যে বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী রপ্তানির ক্ষেত্রেও । আগরতলা স্টেশনে প্রায় বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে ট্রেনের কোচ । বিপর্যস্ত পাহাড়ি রেলপথের কারণে বিপাকে রয়েছে মিজোরাম , মণিপুরের পশ্চিমাংশ ও দক্ষিণ আসামের মানুষ । সব মিলিয়ে দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রায় দুই কোটি মানুষের সমস্যা হচ্ছে উল্লিখিত কারণে । ১৪ মে থেকে পয়লা জুলাই পর্যন্ত এই অঞ্চলে সব ধরনের দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে আছে । আগরতলার সঙ্গে শুধু স্বল্প দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করছে দক্ষিণ আসামের শিলচর ও মণিপুরের জিরিবামে ।

এছাড়া নয়াদিল্লী – সংলগ্ন আনন্দ বিহার , পাঞ্জাবের ফিরোজপুর ক্যান্টনমেন্ট , কর্ণাটকের বেঙ্গালুরু ক্যান্টনমেন্ট , পশ্চিমবঙ্গের শিয়ালদহ , তেলেঙ্গানার, সেকেন্দ্রাবাদ , মধ্যপ্রদেশের রাণী কমলাপতি , বিহারের দেওঘরে রাজ্যের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে আছে । টানা প্রায় কুড়ি দিন ধরে মোট আটজোড়া দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে আছে রাজ্যে । উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের ঘোষণা অনুসারে পয়লা জুলাই পর্যন্ত টানা আটচল্লিশ দিন এসব ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে । এ সব ট্রেনে যাত্রীর পাশাপাশি নিয়মিত পণ্যসামগ্রী আসা- যাওয়া করে । এর মধ্যে রাজ্যে আসে প্রধানত ডিম , মাছ , আলু , পেঁয়াজ , রসুন , টমেটো , কাঁচালঙ্কা , মিষ্টি কুমোড় , বেগুন সহ নানা ধরনের সবজি । আসে আঙুর , আপেল , আম সহ নানা ধরনের করতে ফল । আসে তৈরি পোশাক সহ কাপড়চোপড় , জুতা , মাছ ধরার জাল , মাছ ও মোরগের খাবার , বৈদ্যুতিক ও বৈদ্যুতিন সামগ্রী , চাল , ওষুধ , প্যাকেটজাত দুধ ইত্যাদি । আগরতলা সহ ত্রিপুরা থেকে যায় প্রধানত রাবার পুরোনো প্লাস্টিক , টিন , স্টি ও লোহার সামগ্রী । দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেনের সামনে ও পেছনে লাগানো বিশেষ ধরনের কোচ তথা রেলের পরিভাষায় লিজ ভিপিতে করে এসব পণ্য সামগ্রী আসা যাওয়া করে বলে জানা যায় । এসবই অবশ্য ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকার সময়ের ঘটনা । বর্তমানে দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় এসব পণ্যসামগ্রীর আসা- যাওয়াও বন্ধ হয়ে আছে । নিয়মিত ট্রেন চলাচলকালে সেকেন্দ্রাবাদ ও বেঙ্গালুরু ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে প্রচুর পরিমাণ মিষ্টি কুমোড় , আঙুর ও ডিম আসে নিয়মিত । নয়াদিল্লী সংলগ্ন আনন্দবিহার থেকে আসে তৈরি পোশাক , কাটা কাপড় , বৈদ্যুতিক ও বৈদ্যুতিন সামগ্রী সহ অন্যান্য জিনিস । শিয়ালদহ থেকে আসে ফল থেকে শুরু করে প্রায় সবকিছু । মালদহ থেকে আসে মাছ ও অন্যান্য সামগ্রী ।

নিউ জলপাইগুড়ি ও গুয়াহাটি থেকে আসে কাপড়চোপড় ও নানা ধরনের সবজি সহ বিভিন্ন সামগ্রী । সবজি সবচেয়ে বেশি আসে অবশ্য লামডিঙ থেকে । এছাড়া বিভিন্ন স্টেশনকে ভিত্তি করে আলু , পেঁয়াজ , রসুন , টমেটো ইত্যাদি আসে । রেলপথে পণ্য সামগ্রী আনার নানা সুবিধা রয়েছে । সবচেয়ে বড় কথা যাত্রী ট্রেনে মালপত্র আসা – যাওয়ার সময় লাগে সড়কপথের তিন ভাগের এক ভাগেরও কম । ভাড়াও লাগে অনেক কম । রেলপথে পণ্য পরিবহণে ঝুঁকি নেই সড়ক পথের মতো । ফলে দেশের অন্যান্য রাজ্যের মতো ত্রিপুরাতেও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সড়কপথে পণ্য আমদানিতে আগ্রহ বেড়েছে বলে জানা গেছে । প্রাপ্ত খবর অনুসারে যাত্রী ট্রেনের মাল বহনকারী প্রতিটি কোচের পণ্য পরিবহণ ক্ষমতা ২৩ টন করে । প্রতিটি দূরপাল্লার ট্রেনে এই কোচ থাকে সর্বনিম্ন ১ টি থেকে সর্বাধিক চারটি পর্যন্ত । ফলে দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় এদিক থেকে বিপদ বেড়েছে বলে খবর । এর প্রভাব রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে পড়তে শুরু করেছে বলে জানা গেছে ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.