ভোটের পরই অশুভ জোটের দুর্দশা দেখবে জনতা : মুখ্যমন্ত্রী!!

 ভোটের পরই অশুভ জোটের দুর্দশা দেখবে জনতা : মুখ্যমন্ত্রী!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের ষাটটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে সিপিএম দল দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর ধরে একুশ থেকে গুনতো।কারণ তারা মনে করতো রাজ্যের কুড়িটি জনজাতি সংরক্ষিত আসনই তাদের রিজার্ভ ছিল।এতটা বছর জনজাতিদের ভোটে ক্ষমতা দখল করে সিপিএম জনজাতিদের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য কিছুই করেননি।বরং জনজাতিদের একপ্রকার বাক্সবন্দি করে রেখেছিল তারা। ২০১৮ সালে রাজ্য সরকার পরিবর্তনের পর প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে রাজ্যের জনজাতিদের প্রকৃত বিকাশের কাজ শুরু হয়। ২০১৮-তে বিজেপি দলের সাথে ছিল আইপিএফটি। এবার সঙ্গে এসেছে তিপ্রা মথাও।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সিপিএম- কংগ্রেসের অশুভ জোটকে পরাস্ত করতে তিন শক্তিধর দলই যথেষ্ট। লোকসভা নির্বাচনের পর এই অশুভ জোটের কী দুর্দশা হবে তা দেখবে রাজ্যের জনগণ। বুধবার সকালে আশারামবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের রামমানিক সর্দার পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজিত ত্রিদলীয় জোটের জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা এ কথাগুলো বললেন।তিনি এ দিন পশ্চিম লোকসভা আসনের মতো পূর্ব ত্রিপুরা আসনেও বিপুল হারে ভোট চেয়েছেন বিজেপি প্রার্থীর পক্ষে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতবর্ষের কোনও প্রধানমন্ত্রীকে এর পূর্বে গ্যারান্টি দিয়ে কাজ করার কথা বলতে শোনা যায়নি।একমাত্র ব্যতিক্রমী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজি। তিনি দেশের জনগণকে গ্যারান্টি দিয়ে কাজ করছেন। রাজ্যের উন্নয়নে সার্বিক চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, দুই হাজার পাঁচশোজন কৃষককে কিষান সম্মাননিধি বাবদ ৬৮৫ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে এ রাজ্যে। পাঁচ লক্ষ বারো হাজার পরিবারকে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে যুক্ত করা হয়েছে।২০১৭ সালে যে জায়গায় স্বসহায়ক দল ত্রিপুরাতে ছিল মাত্র চার হাজার সে জায়গায় গত ছয় বছরে স্বসহায়ক দল তৈরি করা হয়েছে ছাপ্পান্ন হাজার। এই স্বসহায়ক দলের মাধ্যমে রাজ্যের জনজাতি অংশের মায়েরা ও বোনেরা নিজেরা স্বাবলম্বী হয়েছেন। রাজ্যে লাখপতি দিদির সংখ্যা তিরাশি হাজারেরও বেশি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রত্যেকটি প্রকল্পে রাজ্যের জনজাতিরা উপকৃত হচ্ছেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী যে নীতি ও আদর্শে দেশকে পরিচালনা করছেন সেই নীতি অনুসরণ করে রাজ্য সরকারও চলছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শক্তিশালী ভারত তৈরির লক্ষ্যে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরেন্দ্র মোদির যতটা গুরুত্ব একইরকমভাবে ত্রিপুরার সার্বিক বিকাশের ক্ষেত্রে জনজাতিদের উন্নয়নও ততোটাই গুরুত্বপূর্ণ।
এদিনের জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পূর্ব ত্রিপুরা আসনের প্রার্থী কৃতি সিং দেববর্মণ, মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, এমডিসি অনন্ত দেববর্মা, টিআইডিসির চেয়ারম্যান নবাদল বণিক সহ তিন রাজনৈতিক দলের অন্যান্য নেতৃত্ব।এ দিন ভোট প্রচারের শেষ মুহূর্তেও মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা জনসমর্থনের ঝড় তোলেন।
লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় পর্যায়ের ভোটের সরব প্রচারের শেষলগ্নে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা কুমারঘাটে রোড শো করেন। বুধবার দুপুরে কুমারঘাটের পাবিয়াছড়া দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে এই রোড শো শুরু হয়।বিজেপি পাবিয়াছড়া মণ্ডল কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত উক্ত রোড শোতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিজেপি ত্রিপুরা প্রদেশ কমিটির সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, পাবিয়াছড়া বিধানসভার বিধায়ক ভগবান চন্দ্র দাস।এ দিন পাবিয়াছড়া স্কুল মাঠ থেকে মিছিল বের হয়ে কুমারঘাট শহরের বিভিন্ন রাস্তা পরিক্রমা করে বিজেপি কুমারঘাট অফিসের সামনে এসে মিছিলটি শেষ হয়।পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে বলেন, বিজেপি এবার চারশো আসন পাচ্ছে এবং নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি দল তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসছে।তিনি বলেন,মোদির নেতৃত্বে দেশ উন্নতির শিখরে পৌঁছাবে। ভোট প্রচারের শেষলগ্নে এ দিনের এই রোড শো-তে দলীয় কর্মীদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য।
নির্বাচনি প্রচার সমাপ্ত হয়েছে।
গোলযোগের কোনও খবর নেই।শাসকদল বড় ধরনের কোনও প্রচার শেষ দিনটিতে করেনি।কমলপুর ও সুরমায় ঘরোয়া সভা ও বাড়ি বাড়ি জনসংযোগ করেছে। কলাছড়িতে হয়েছে যোগদান সভা। ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থীর সমর্থনে কমলপুর ও সুরমায় হয়েছে রোড শো।বিভিন্ন স্থানে পথসভা।জোটের পক্ষে ছিলেন সিপিএমের মহকুমা সম্পাদক অঞ্জন দাস।বেলা এগারোটায় সুরমা কেন্দ্রের হালহুলীতে এক কর্মী সভায় বক্তব্য রাখেন ইন্ডিয়া জোটের পক্ষে আশিস সাহা।তিনি কর্মীদের উদ্দেশে বলেন,এই নির্বাচন দেশ বাঁচানো ও সংবিধান রক্ষার নির্বাচন। পরে শ্রীসাহা সাংবাদিকদের বলেন, প্রথম দফার নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোট আশি-বিরাশিটি আসন দখল করবে।এবারের নির্বাচনে মোদি সরকার বিদায় নেবে। ইন্ডিয়া জোটের সরকার আসবে।
সরব প্রচার শেষে নির্বাচনি বিধিনিষেধ নিয়ে বুধবার বিকাল তিনটায় উত্তর জেলার জেলাশাসকের কনফারেন্স হলে এক সাংবাদিক সম্মেলন করলেন উত্তর জেলার নির্বাচনি কর্মকর্তা তথা জেলাশাসক ও সমাহর্তা দেবপ্রিয় বর্ধন সহ জেলা পুলিশ সুপার আইপিএস ভানুপদ চক্রবর্তী। জেলাশাসক জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী ভোট গ্রহণের আটচল্লিশ ঘন্টা আগে সরব প্রচার শেষ। প্রশাসনিক বিধিনিষেধ সহ সিআরপিসির ১৪৪ ধারা লাঘু করা হয়েছে। এই বিধিনিষেধ বুধবার পাঁচটা থেকে সাতাশ এপ্রিল সকাল ছয়টা পর্যন্ত জারি থাকবে। তিনি জানিয়েছেন, পানিসাগর মহকুমার শেরেচন্দ্র পাড়া থেকে একটি খবর এসেছিল সেখানে কিছু লোক ভোট দেবেন না বা ভোট বয়কটের কথা বলেছেন এরকম একটা খবর এসেছিল প্রশাসনের কাছে। এরপর প্রশাসনের তরফে ব্লক আধিকারিক সহ ডিডব্লিউএস ও পূর্ত দপ্তর থেকে একটি দল সেখানে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলেছেন।তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় তাদের একটি অভিযোগ ছিল জলের সমস্যা। সে সঙ্গে কিছুদিন আগে প্রচন্ড ঝড়বৃষ্টিতে তাদের একটি রাস্তা ভেঙে যায়। তাদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে এবং তাদের সেই সমস্যা সমাধান করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং পানীয় জলের সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। এখন তারা সন্তুষ্ট। তারা সকলেই লোকসভা নির্বাচনে ভোটদানে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।
পূর্ব ত্রিপুরা উপজাতি সংরক্ষিত সংসদীয় আসনের অন্তর্গত অমরপুর বিধানসভা কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে বুথে বুথে মিছিল ও জমায়েতের মাধ্যমে অমরপুরে সরব প্রচারের অবসান করলো বিধায়ক রঞ্জিত দাসের নেতৃত্বে বিজেপির অমরপুর মণ্ডলের নেতৃত্ব। বুধবার দুপুরে একযোগে অমরপুর মণ্ডলের তিপ্পান্নটি বুথেই বিজেপি দলের কর্মী সমর্থকরা দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে জাঁকজমকপূর্ণ মিছিল সংঘটিত করে। অমরপুর মোটরস্ট্যান্ডে, বামপুর, রাঙ্গামাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের সরব প্রচারের সর্বশেষ মিছিলে অংশগ্রহণ করেছেন বিধায়ক রঞ্জিত দাস, দলের রাজ্য কমিটির সম্পাদক রতন ঘোষ,যুব মোর্চার অমরপুর মণ্ডল সভাপতি লিটন সাহা প্রমুখ। অরপরদিকে সরব প্রচারের শেষলগ্নে ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থীর সমর্থনে সিপিএম
অমরপুর মহকুমা কমিটির উদ্যোগে বামপুর এবং রাঙ্গামাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের চারটি স্থানে পথসভা সংঘটিত করেছে।পথসভায় জোটের প্রার্থীর সমর্থনে ভোটদানের আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য রাখেন দলের মহকুমা নেতৃত্ব তথা প্রাক্তন মন্ত্রী রঞ্জিত দেবনাথ, দলের মহকুমা সম্পাদক ও প্রাক্তন বিধায়ক পরিমল দেবনাথ, দলের মহকুমা কমিটির সদস্য মুসলেম আহমেদ, শিমূল চক্রবর্তী, নারীনেত্রী বাসনা দাস সূত্রধর প্রমুখ।
কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবেই অমরপুর বিধানসভা এলাকায় সাধারণ নির্বাচনের সরব প্রচারের আনুষ্ঠানিক অবসান হয়েছে।সংবাদ লেখা পর্যন্ত কোথাও কোনও প্রকার রাজনৈতিক হানাহানির খবর নেই।
সরব প্রচারের শেষদিনে ঋষ্যমুখ বিধানসভায় ঝড়ো প্রচার করলেন শাসক বিজেপি দল। উপজাতি এলাকায় হারানো জমি পুনরুদ্ধারের জন্য লোকসভার ভোটকে পাখির চোখ করে প্রচার চালাচ্ছে জিতেন চৌধুরীরা।এই বিধানসভা কেন্দ্রে আমজাদনগর এলাকায় সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে। সংখ্যালঘু ভোট নিজেদের অনুকূলে আনতে শাসকদল শেষ মুহূর্তে ময়দানে ব্যাপকভাবে নেমেছেন। বুধবার সকালে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় বড় মিছিল করেন শাসকদল। এছাড়া বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ করা হয়। উপস্থিত ছিলেন বিজেপি রাজ্য নেতা প্রাক্তন বিধায়ক সুবল ভৌমিক। সুবলবাবু সংখ্যালঘু লোকদের সঙ্গে নিয়ে সমগ্র এলাকায় মিছিল করেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.