মাধ্যমিকে পাসের হার ৮৭.৫৪%, দ্বাদশে ৭৯.২৭% সাফল্যে এগিয়ে মেয়েরা!!

 মাধ্যমিকে পাসের হার ৮৭.৫৪%, দ্বাদশে ৭৯.২৭% সাফল্যে এগিয়ে মেয়েরা!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-দেশে লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন সময়েই ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত দশম ও দ্বাদশের ফলাফল প্রকাশিত হলো শুক্রবার। এ বছরও রাজ্যে সার্বিক পাসের হারে ছেলেদের তুলনায় ফের এগিয়ে রইলো মেয়েরা।দশম শ্রেণীর পরীক্ষায় পাসের হার ৮৭.৫৪ শতাংশ। ২০২৩ সালে পাসের হার ছিল ৮৬.৩২ শতাংশ। দশম শ্রেণীর সার্বিক পাসের হার বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র ১.২২ শতাংশ। এ বছর দশমে ছাত্রীদের পাসের হার ৮৭.৭৫ শতাংশ ছাত্রদের পাসের হার ৮৪.২১ শতাংশ। মাধ্যমিক পরীক্ষায় ১০৫৭টি স্কুলের ৩৩ হাজার ৭৩৯ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসেছিলেন।এর মধ্যে ২৯ হাজার ৫৩৪ জন ছাত্রছাত্রী দশম শ্রেণীর পরীক্ষায় পাস করেছে। আর দশম মানের পরীক্ষায় ফেল করেছে ৪২০৫ জন ছাত্রছাত্রী।শুধু তাই নয় এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যের ১৬টি সরকারী স্কুলে ১ ছাত্রছাত্রী ও পরীক্ষায় পাস করেনি।তবে ৩১০টি সরকারী স্কুলে আবার ১০০ শতাংশ পড়ুয়া পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়েছে। দশম শ্রেণীর প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী গোমতী জেলার স্থান প্রথম।এই জেলা থেকে ৯২.৯৬ শতাংশ ছাত্রছাত্রী পাস করেছে।দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দক্ষিণ জেলা।এই জেলার পাসের হার ৯২.৯১ শতাংশ।তৃতীয় স্থানে আছে পশ্চিম জেলা। পাসের হার ৯১.১৩ শতাংশ।
দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় পাসের হার ৭৯.২৭ শতাংশ। যদিও ২০২৩ সালে রাজ্যে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৮৩.৫২ শতাংশ।তবে এ বছর উচ্চমাধ্যমিকে পাসের হার ৩.৯৮ শতাংশ কমে গিয়েছে।উচ্চ মাধ্যমিকেও ছাত্রদের সার্বিক পাসের হারে এগিয়ে রইল ছাত্রীরা। এ বছর ছাত্রীদের পাসের হার ৮১ শতাংশ।আর ছাত্রদের পাসের হার ৭৭ শতাংশ।আজ ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ড. ধনঞ্জয় গণচৌধুরী এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান উচ্চ মাধ্যমিকে ৪০৯ টি স্কুলের ২৫ হাজার ৩৫০ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসেছিলেন।এরমধ্যে পাস করেছেন ২০ হাজার ৯৫ জন ছাত্রছাত্রী। দ্বাদশের পরীক্ষায় ১২০১৫ জন ছাত্রের মধ্যে ৯২৬৯ জন ছাত্র পাস করেছে।আর ১৩৩৩৪ জন ছাত্রীর মধ্যে ১০৮২৫ জন ছাত্রী উত্তীর্ণ হন। দ্বাদশের পরীক্ষার ফেল করেছে ৪২৫০ জন পড়ুয়া।তিনি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সচিব ড. দুলাল দে- কে পাসে বসিয়ে আরও জানান এ বছর উচ্চমাধ্যমিকে ৩৯টি স্কুলের ছাত্রছাত্রী ১০০ শতাংশ পাস করেছে।তবে ১৩টি স্কুলের একজন পড়ুয়াও উচ্চমাধ্যমিকে পাস করেনি।উচ্চমাধ্যমিকের প্রকাশিত ফলাফলের নিরিখে প্রথম স্থান অধিকার করেছে সিপাহিজলা জেলা।এই জেলার ৮৪.২৫ শতাংশ পাস করেছে।দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিম জেলা।পাসের হার ৮২.৯৭ শতাংশ।তৃতীয় স্থানে রয়েছে দক্ষিণ জেলা।পাসের হার ৮২.৯১ শতাংশ। মাদ্রাসা ফাজিল পরীক্ষায় ১৩০ জন বসেছিলেন।পাস করেছেন ৯৯ জন পড়ুয়া।দিব্যাঙ্গন পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৫৯ জন।পাস করেছেন ১১১ জন।উচ্চমাধ্যমিকে এডিসি এলাকায় পাসের হার ৮৫.০১ শতাংশ এবং মাধ্যমিকে পাসের হার ৮৬.১৫ শতাংশ।উচ্চমাধ্যমিকে বাণিজ্য বিভাগে ৫১০ জন, বিজ্ঞান বিভাগে ২৯৩৭ জন, কলা বিভাগে ১৬৫৭৮ জন পাস করেছে।তিনি জানান আগামী সপ্তাহ থেকে ছাত্রছাত্রীদের মার্কশিট প্রদান করা হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে পর্ষদ সচিব ড. দুলাল দে বলেন, এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় ধলাই জেলার আনন্দমোহন রোয়াজা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র পরিতোষ নাথ সংশোধনাগার থেকে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।মাধ্যমিক ও উচ্চতর মাধ্যমিকস্তরে বছর বাঁচাও পরীক্ষার জন্য যোগ্যতা রয়েছে যথাক্রমে ৩,২১৩ জন এবং ৪,২৩৫ জন ছাত্রছাত্রীর।তিনি বলেন, এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ২ মার্চ এবং শেষ হয় ২৩ মার্চ।মোট ৬৯টি কেন্দ্রে মাধ্যমিক পরীক্ষা গৃহীত হয়।মোট মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে রেগুলার ৩২,১৯৩ জন, কন্টিনিউইং ৩১৬ জন, কম্পার্টমেন্টাল ১,০২৬ জন, এক্সার্টানাল ১৭৪ জন এবং অন্যান্য ৩০ জন ছাত্রছাত্রী ছিল। মাদ্রাসা আলিম বিভাগে পরীক্ষার্থী ছিল ১৩০ জন এবং পাস করেছে ৯৯ জন।এছাড়াও দিব্যাঙ্গজন পরীক্ষার্থী ছিল ১৫৯ জন এবং তাদের মধ্যে পাস করেছে ১১১ জন।ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদ এলাকায় পাসের হার ৮৫.০১ শতাংশ। এছাড়াও তিনি বলেন, রাজ্যে উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয় ১ মার্চ এবং শেষ হয় ৩০ মার্চ।মোট ৬০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা গৃহীত হয়। মোট উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে রেগুলার ২৪,২৬৬ জন, কন্টিনিউইং ৩৩৯ জন, কম্পার্টমেন্টাল ৫২৬ জন, এক্সটার্নাল ১৯২ জন এবং অন্যান্যদের মধ্যে ২৭ ছাত্রছাত্রী ছিল।
মাদ্রাসা ফাজিল আর্টস বিভাগে ২২ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসে এবং সবাই পাস করেছে।মাদ্রাসা ফাজিল থিওলজি বিভাগে ৪৯ জন পরীক্ষায় বসে এবং ৪৮ জন পাস করেছে।এবারের উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৯২ জন দিব্যাঙ্গজন পরীক্ষায় বসে এবং পাস করে ৫৮ জন।তাছাড়াও এ বছর একজন তৃতীয় লিঙ্গের পরীক্ষার্থীও উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয় এবং পাস করে।ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদে এক্ষেত্রে পাসের হার ৭০.৫৭ শতাংশ।তিনি আরও বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজ গত ২৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয়।শেষ হয় ১২ মে।
সাংবাদিক সম্মেলনে পর্ষদ সভাপতি ড. ধনঞ্জয় গণচৌধুরী, এবারের সকল পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিযুক্ত প্রায় ২,৫০০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ধন্যবাদ জানান।রাজ্যের প্রথম সারির ১২৫টি বিদ্যালয় বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের আওতায় চলে যাওয়ার পরও পর্ষদের ফলাফল নিয়ে পর্ষদ সভাপতি সন্তোষ প্রকাশ করেন।এছাড়াও তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে পরীক্ষার কাজের সাথে যুক্ত সকলস্তরের কর্মীগণকে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আরক্ষা বাহিনীকেও ধন্যবাদ জানান।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.