রাজ্যে সিপিএম-কংগ্রেস জোট সুপার ফ্লপ!!

 রাজ্যে সিপিএম-কংগ্রেস জোট সুপার ফ্লপ!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে বহু প্রতীক্ষিত ভোট গণনা মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। ভোটের ফলাফল থেকে সামগ্রিক যে ছবিটা উঠে এসেছে সেটা হলো বিজেপি বিরোধী ইন্ডি জোট দেশের কয়েকটি রাজ্যে সাফল্য পেলেও আবার বেশ কয়েকটি রাজ্যে তেমন সাফল্য পায়নি। সাফল্য না পাওয়া রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ত্রিপুরা। এই রাজ্যে ইন্ডি জোট অর্থাৎ সিপিএম- কংগ্রেস জোট এককথায় সুপার ফ্লপ। এই রাজ্যে সিপিএম-কংগ্রেস জোটকে রাজ্যবাসী প্রত্যাখ্যান করেছে। সামগ্রিক ভোটের ফলাফল থেকে তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। শুধু তাই নয়, দুই দলের কর্মী সমর্থকদের একটি বড় অংশ তাদের দলের মনোনীত প্রার্থী আশিস কুমার সাহা এবং রাজেন্দ্র রিয়াংকে ভোট দেননি। যদি তারা ভোট দিতেন তাহলে দুই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীর জয়ের ব্যবধান এতটা হতো না। বরং একটা সম্মানজনক এবং হাড্ডাহাড্ডি লড়াই অন্তত হতো। প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী বিশেষ করে পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা আসনে ইন্ডি জোটের কংগ্রেস প্রার্থী তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশিস কুমার সাহার শোচনীয় অবস্থা। পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা আসনের অন্তর্গত ত্রিশটি বিধানসভা রয়েছে। একটি বিধানসভাতেও তিনি লিড নিতে পারেননি। প্রতিটি বিধানসভায় আশিস কুমার সাহা যে ভোট পেয়েছেন, তার তিনগুণ, চারগুণ কোথাও পাঁচগুণ বেশি ভোট পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী বিপ্লব কুমার দেব। একই অবস্থা পূর্ব আসনের বাম প্রার্থী রাজেন্দ্রবাবুরও। যদিও তিনি আশিসবাবুর চাইতে কিছু ভোট বেশি পেয়েছেন। পশ্চিম ত্রিপুরা আসনের বিজয়ী প্রার্থী বিপ্লব কুমার দেব সবথেকে বেশি ভোট পেয়েছেন ১৮ সূর্যমণিনগর বিধানসভায়। প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৩৫,২৫৪। দ্বিতীয় ৩২ নং মাতাবাড়ি, প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৩৪,৯৭৫। তৃতীয় ১৩ নং প্রতাপগড়, প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৩৪,৮৯৭। চতুর্থ ২নং মোহনপুর বিধানসভা, প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৩৪,৮৫২। পঞ্চম ১৪ নং বাধারঘাট বিধানসভা, প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৩৪,৫৮২। ষষ্ঠ থেকে দশম যথাক্রমে ৩৩ নং কাকড়াবন-শালগড়া (ভোট ৩৩,৭৩৩), ৫ নং খয়েরপুর (ভোট ৩৩,৩৮১), ১০ নং মজলিশপুর (ভোট ৩৩,০২১), ১৬ নং বিশালগড় (ভোট ৩২,৮৮৭) এবং ৩০ নং বাগমা (ভোট ৩১,৯৬০)। উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে, ত্রিশটি বিধানসভার মধ্যে বিপ্লব দেব সবথেকে কম ভোট পেয়েছেন
৯নং বনমালীপুর কেন্দ্রে। প্রাপ্ত ভোট ১৯,৩৩৯টি। অথচ এই বনমালীপুর থেকেই ২০১৮-তে তিনি প্রথম বিধায়ক হয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেছিলেন। বনমালীপুর বিধানসভা কেন্দ্রকে তিনি নিজের কেন্দ্র বলে ভালোবাসতেন। বাকি সবগুলি বিধানসভাতে তিনি কুড়ি হাজার থেকে ত্রিশ হাজারের উপরে ভোট পেয়েছেন। ব্যতিক্রম শুধু বনমালীপুর। কেন এমন হলো? দল হয়তো পরে বিষয়টি পর্যালোচনা করবে।
অন্যদিকে, কংগ্রেস প্রার্থী আশিস কুমার সাহা সবথেকে বেশি ভোট পেয়েছেন সুদীপ রায় বর্মণের ৬নং আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রে। ওই নি কেন্দ্রে তার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ১৩,৯০৩। দ্বিতীয় সর্বাধিক ভোট পেয়েছেন ১৪ নং বাধারঘাট কেন্দ্রে। প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ১৩,৭৭৬। তৃতীয় সর্বাধিক ভোট পেয়েছেন ১৩ নং প্রতাপগড় কেন্দ্রে। প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ১২,৭৬২। আশিসবাবু সর্বনিম্ন ভোট পেয়েছেন রাজ্যের বিদ্যুৎ ও কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথের খাসতালুকে। ২নং মোহনপুর কেন্দ্রে আশিসবাবুর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৩৮৮৩। এছাড়াও আশিসবাবু ১৯টি বিধানসভায় দশ হাজারের নিচে ভোেট পেয়েছেন। পোস্টাল ব্যালটে বিজেপি প্রার্থী বিপ্লব কুমার বি দেব পেয়েছেন ১২,৮৫৭টি ভোট এবং আশিষ সাহা পেয়েছেন ৩৪৫১টি ভোট। এই কেন্দ্রে মোট নয়জন প্রার্থীর মধ্যে বাকি সাতজন প্রার্থীরই জামানত জব্দ হয়েছে।
অন্যদিকে পূর্ব আসনে বিজেপি প্রার্থী কৃতি সিং দেববর্মণ সবথেকে বেশি ভোট পেয়েছেন ২৭নং কল্যাণপুর বিধানসভা কেন্দ্রে। প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৩০,৫২৮। দ্বিতীয় ৩৮ নং জোলাইবাড়ি বিধানসভা, প্রাপ্ত ভোট ২৯,৪৩২ এবং তৃতীয় ২৫ নং খোয়াই বিধানসভা, প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ২৯,২৮৪। বিজেপি প্রার্থী কৃতি সিং দেববর্মণ সবথেকে কম অর্থাৎ পরাজিত হয়েছে একটিমাত্র বিধানসভায়। সেটি হলো কংগ্রেস বিধায়ক বীরজিৎ সিনহার খাসতালুক ৫৩ নং কৈলাসহর কেন্দ্রে। ওই কেন্দ্রে কৃতি সিং পেয়েছেন ১৭,৫০২ ভোট, আর সিপিএম প্রার্থী রাজেন্দ্র রিয়াং পেয়েছেন ১৯,৮০৯ ভোট। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে পূর্ব আসনের ইন্ডি জোটের প্রার্থী রাজেন্দ্র রিয়াং অন্তত একটি বিধানসভায় বিজেপি প্রার্থীকে পরাজিত করতে পারলেও পশ্চিম আসনের কংগ্রেস প্রার্থী আশিস কুমার সাহা সেটা পারেন নি। রাজেন্দ্র রিয়াং সবথেকে কম ভোট পেয়েছেন ২৪ নং রামচন্দ্রঘাট বিধানসভা কেন্দ্রে। এখানে তার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৪৪২২।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.