কৃষি ও কৃষক কল্যাণে রাজ্যভিত্তিক রিভিউ বৈঠকে একাধিক সিদ্ধান্ত!!

 কৃষি ও কৃষক কল্যাণে রাজ্যভিত্তিক রিভিউ বৈঠকে একাধিক সিদ্ধান্ত!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-বর্তমানে রাজ্যে দুই লক্ষ বাহান্ন হাজার নয়শ সাতজন কৃষক প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মাননিধি প্রকল্পে বছরে ছয় হাজার টাকা করে পাচ্ছে।এই প্রকল্পে রাজ্যের প্রকৃত কৃষক যারা তাদের একজনও যাতে বাদ না থাকে তার জন্য আরও কৃষককে এই প্রকল্পে অন্তর্ভূক্ত করার উদ্যোগ নেবে রাজ্যের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তর। বুধবার এডি নগর কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে রাজ্যভিত্তিক পর্যালোচনা বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে পৌরোহিত্য করেন কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ। উপস্থিত ছিলেন কৃষি ও হর্টিকালচার দপ্তরের অধিকর্তা সহ রাজ্যের সমস্ত কৃষি ও হর্টির আধিকারিকরা। পর্যালোচনা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তৃতীয়বার শপথ নিয়ে প্রথম যে ফাইলটি স্বাক্ষর করেছেন সেটি হলো দেশের কৃষক কল্যাণের। প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মাননিধি প্রকল্পে দেশের নয় কোটি ত্রিশ লক্ষ কৃষককে কুড়ি হাজার কোটি টাকা (১৭তম কিস্তি) মঞ্জুরি দিয়েছেন।এর মধ্যে ত্রিপুরার কৃষকরাও রয়েছে। এই রাজ্যে দুই লক্ষ বাহান্ন হাজার নয়শ সাতজন কৃষক ষোলতম কিস্তি পর্যন্ত ৬৮৭ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা পেয়েছে।মন্ত্রী বলেন,আমরা চেষ্টা করছি আরও বেশি কৃষককে এই প্রকল্পে অন্তর্ভূক্ত করতে। প্রকৃত কৃষক একজনও যাতে বাদ না থাকে।
মন্ত্রী বলেন, ফসল বিমা যোজনাতেও বড় পরিবর্তন আনার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।এখন বিমা কোম্পানি থেকে কৃষকরা টাকা পায়। এতে বিভিন্ন সময় নানা অভিযোগ শোনা যায়। তাই আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি কৃষকরা যাতে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সরাসরি অর্থ পায়।কেননা, বিমার অর্থ সরকারই দিচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, ২০১৩ থেকে ২০১৭ বাম আমলে পাঁচ বছরে ২৩ হাজার ৪৫৪ জন কৃষক বিমার আওতায় এসেছে। বর্তমান সরকার পাঁচ বছরে ১৩ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮১ জন কৃষককে ফসল বিমা যোজনার আওতায় এনেছে। বাম আমলে পাঁচ বছরে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা।বর্তমান সরকার পাঁচ বছরে ৯ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, কিষান ক্রেডিট কার্ড প্রদানের ক্ষেত্রেও বড় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আজকের বৈঠকে আরও বেশি কৃষককে এই প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য। বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বর্তমান সরকার পাঁচ বছরে ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার ৭৮৯ জন কৃষককে কিষান ক্রেডিট কার্ড দিয়েছে।এতে ঋণ প্রদান করা হয়েছে ১৮২২ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা।মন্ত্রী বলেন, গত পাঁচ বছরে ১ লক্ষ ৯২ হাজার মেট্রিকটন ধান ক্রয় করা হয়েছে।এতে ১ লক্ষ ৩২৩ জন কৃষক উপকৃত হয়েছেন। কৃষকরা ধান বিক্রি করে ৩৭১ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা পেয়েছে। গত পাঁচ বছরে ১ লক্ষ ৭৩ হাজার ৫১৯ জন কৃষককে সয়েল হেলথ কার্ড দেওয়া হয়েছে।এ বছর আরও চল্লিশ হাজার কৃষককে দেওয়া হবে।মন্ত্রী জানান, বাম আমলে পাঁচ বছরে ২৬১১ জন কৃষককে ২৮ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকার কৃষি যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়েছিল। বর্তমান সরকার পাঁচ বছরে ৩৮,৬৮১ জন কৃষককে ২০০ কোটি ৪২ লক্ষ টাকার কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদান করেছে। বাম আমলে মাত্র আটটি ছিল ফার্ম মেশিনারি ব্যাঙ্ক। বর্তমান সরকার পাঁচ বছরে ৫১১টি ফার্ম মেশিনারি ব্যাঙ্ক গড়েছে।এ বছর আরও ৫৮টি এ ধরনের ব্যাঙ্ক গঠন করা হবে। প্রতিটি ফার্মে দশ জন করে কৃষক রয়েছে। প্রতিটি গ্রুপকে দশ লক্ষ টাকার কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদান করা হয়। গত পাঁচ বছরে বর্তমান সরকার কৃষিজাত ফসল বাজারজাত করার জন্য ১৬৭ কোটি ১১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা খরচ করেছে। আরও ৮৬টি বাজার গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজ্যে ৯ লক্ষ ৫৩ হাজার মেট্রিকটন খাদ্যশস্য এবং ৮ লক্ষ ৭৫ হাজার মেট্রিকটন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। আজকের বৈঠকে এই সমস্ত বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.