সুশাসনে আইটিতে বড় ঘোটালা তিনবার টেন্ডার বাতিল কার স্বার্থে!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-সরকারী কাজে দুর্নীতি রুখতে এবং স্বচ্ছ প্রশাসন উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১৮ সালে রাজ্যে প্রথম বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ই-টেন্ডার চালু করা হয়েছিল। কিন্তু সর্ষের মধ্যে সেখানে ভুত লুকিয়ে আছে সেখানে দুর্নীতি রুখবে কে?ফলে যত দিন গড়িয়েছে ই-টেন্ডারকে সমনে রেখে দুর্নীতিবাজরা নানা কৌশলে, নতুন নতন কৌশল অবলম্বন করে দুর্নীতি চালিয়ে গেছে।এখন সেই দুর্নীতি একেবারে জাঁকিয়ে বসেছে প্রশাসন ও প্রশাসনের বাইরে। সম্প্রতি এমনই এক দুর্নীতি প্রকাশ্যে এসেছে রাজ্য সরকারের আইটি দপ্তরে।দপ্তরের একাংশ দুর্নীতিবাজ অফিসার ও সরকারী কর্মীদের যোগসাজশে ভুয়ো কাগজ জমা দিয়ে কোটি টাকার কাজ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি সংস্থার বিরুদ্ধে। বিস্ময়কর ঘটনা হলো, এই কেলেঙ্কারি দপ্তরের নজরে আসার পরও রহস্যজনকভাবে ওই সংস্থাটির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি আইটি দপ্তর।এখানেই শেষ নয়, ওই সংস্থার চাপের কাছে নতি স্বীকার করে উল্টো টেন্ডারই বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। যাতে পরবর্তীকালে ওই সংস্থাটিই পুনরায় কাজ হাতিয়ে নিতে পারে। মোদ্দাকথা ওই জালি সংস্থাটিকে বাঁকা পথে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য কোনও বৈধ কারণ ছাড়াই টেন্ডার বাতিল করা হয়েছে বলে অভিযোগ।আরও বিস্ময়কর ঘটনা হলো, অন্য একটি সংস্থা এই কাজের জন্য যোগ্য বিবেচিত হয়েছে বলে দপ্তরের পক্ষ থেকে ঘোষণা করার পরও এবং যাবতীয় তথ্য পোর্টালে আপলোড করে দেওয়ার পরও, রহস্যজনকভাবে টেন্ডার বাতিল করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের আইটি দপ্তর থেকে একটি টেন্ডার (No.26(6)/DIT/MYGOV/2022) আহ্বান করা হয়েছিল ‘Selection of Agency for Engaging Man- power for Operation And Social Media Managment of MYGOV – Tripura.’ ই-বিড জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ১৬ অক্টোবর ২০২৩ বেলা ১টা পর্যন্ত।তার আগে ১০ অক্টোবর সকাল সাড়ে এগারোটায় প্রি-বিড মিটিং অনুষ্ঠিত হয়।এই টেন্ডার নিয়েই একের পর এক কেলেঙ্কারি ঘটে চলেছে। অভিযোগ, ‘ট্রিনিটি ফিল্মস’ নামে রাজ্যের একটি সংস্থাকে বাঁকা পথে কোটি টাকার কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্যই দপ্তরের একাংশ আধিকারিক উঠেপড়ে লেগেছে।
জানা গেছে, প্রথমবার টেন্ডারে যেমন শর্ত ছিল, তাতে রাজ্যের সংস্থাটি (ট্রিনিটি ফিল্ম) অংশ নিতে পারছিল না।কেন না,এই ধরনের কাজ করার জন্য যে যোগ্যতাবলি আবশ্যক, সেই সব যোগ্যতা সংস্থাটির নেই। ফলে প্রি- বিড মিটিং এরপরই রহস্যজনকভাবে প্রথমবারের টেন্ডার বাতিল করে দেওয়া হয়।দ্বিতীয়বার টেন্ডার আহ্বান করার পরও, সেই টেন্ডার বাতিল করা হয়। তৃতীয়বার যখন টেন্ডার আহ্বান করা হয়, তখন টেন্ডারে অনেক শর্ত শিথিল করে দেওয়া হয়, যাতে রাজ্যের ওই সংস্থাটি অংশ নিতে পারে। তৃতীয়বার টেন্ডারে যথারীতি তিনটি সংস্থা অংশ নেয়।এরমধ্যে রাজ্যের ‘ট্রিনিটি ফিল্মস’ সংস্থাটিও রয়েছে।বাকি দুটি সংস্থা বহি:রাজ্যের।রাজ্যের সংস্থাটির কর্ণধার যিনি বাম জমানায় প্রয়াত গৌতম দাসের ভাবশিষ্য ছিলেন।রাম জমানায় রাতারাতি জামা পাল্টে এখন রামভক্ত বলে পরিচিত।বর্তমানে তার এতটাই ক্ষমতা যে, সরকারী দপ্তরের টেন্ডার পর্যন্ত বাতিল করিয়ে নিতে পারেন।
এরপরের ঘটনা আরও বিস্ময়কর।যা চোখ কপালে উঠার মতো। (চলবে)।