বিহার নয়, বাংলা থেকে লিচু যাবে ইউরোপের দেশে!!

 বিহার নয়, বাংলা থেকে লিচু যাবে ইউরোপের দেশে!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-বাংলার লিচু যাবে লন্ডনে!বিলেতের পাশাপাশি পৌঁছে যাবে জার্মানি, ইতালিতেও।ব্রিটেন, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ডের প্রবাসী ভারতীয়দের মন মজবে বাংলার লিচুতে।এর আগেও মালদহের লিচু বিদেশে রপ্তানি হয়েছে।কাতার,বাহরিনে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মালদহের লিচু।এবার বরাত এসেছে ব্রিটেন, ইংল্যান্ড ও জার্মানি থেকে।
এতো মজফ্ফরপুরের দিন বিহারের লিচুতেই মন মজেছিল বিদেশিদের।কিন্তু বিহারের সেই লিচুতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক এবং রঙের প্রমাণ মেলায় সেই লিচু রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।স্বাভাবিক ভাবেই শিকে ছিঁড়েছে বাংলার। এতদিন পশ্চিমবঙ্গের মালদহ থেকে আম যেতে এশিয়া এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। ইউরোপীয় দেশগুলিতে অবশ্য লিচু কোনদিন যায় নি। সেদিক থেকে দেখলে;এই প্রথমবার বঙ্গ থেকে লিচু যাবে জার্মানি, ইতালি, ব্রিটেন, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ডে।আসলে গত কয়েক বছরে পশ্চিমী দুনিয়াতে তাপমাত্রা বাড়তেই সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে ডি-হাইড্রেশনের প্রবণতা যত বেড়েছে ততই বেড়েছে লিচুর কদর।শরীরকে ডি-হাইড্রেট প্রবণতা যত বেড়েছে ততই বেড়েছে লিচুর কদর। শরীরকে ডি-হাইড্রেট হওয়া থেকেও রক্ষা করে এই রসালো ফলটি।তাই আমের থেকেও গুরুত্ব পাচ্ছে লিচু।
মালদহের উদ্যানপালন দপ্তরের উপ-অধিকর্তা সামন্ত লায়েক জানিয়েছেন, ‘মুম্বইয়ের কয়েকটি সংস্থা ইতিমধ্যেই মালদহ থেকে লিচু নিয়ে গিয়ে ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলিতে পাঠানো শুরু করে দিয়েছে।কাতার, বাহরিন, দুবাইয়েও যাচ্ছে বাংলার লিচু।এর মধ্যেই কলকাতার একটি রপ্তানিকারক সংস্থা মালদহ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইউরোপীয় দেশগুলিতে লিচু রপ্তানির উদ্যোগ নিয়েছে।ব্রিটেন,জার্মানিতে নিয়ে যাবে।রাজ্যের উদ্যানপালন ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ দপ্তর থেকে তাদের সব রকম সহযোগিতা করা হচ্ছে।
আমের পর লিচুও বিদেশে পাড়ি দেওয়ার ঘটনা দ্বিতীয় বার। মালদহ থেকে প্রথমে মুম্বই যাবে ফলগুলি। তারপর মুম্বই থেকে ভূমধ্যসাগরীয় দেশেগুলিতে।মালদহ এমনিতেই আম এবং আমের উপজাত খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুততে বিখ্যাত।পশ্চিমবঙ্গের এই জেলা থেকে গরমের চার মাস যেমন আম যায়,তেমনই বছরের বাকি সময়টায় আমের উপজাত যেমন; আমস্বত্ব, আমের মোরব্বা, আমের চাটনি রপ্তানি হয়।
আমের জেলার লিচুর কদর এখন তুঙ্গে।ধীরে ধীরে বিদেশের বাজারে যে মালদহের লিচু ছড়াচ্ছে, তা জেনে খুশি জেলার উদ্যান পালন দফতরের কর্তারা।গত বছর বাহারিন, কাতার থেকে বরাত এসেছিল।সেই বছর ছয় থেকে সাত টন লিচু রপ্তানি হয়েছিল।এবার আশার কথা, পশ্চিমী দুনিয়া এবং ইউরোপের দেশগুলি থেকেও বরাত এসেছে।উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলায় প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমিজুড়ে লিচু চাষ হয়।যার মধ্যে কালিয়াচক ১, ২ এবং ৩ নম্বর ব্লকেই লিচু চাষ বেশি হয়।এর বাইরে ইংলিশবাজার, রতুয়া, চাঁচোল ও ওল্ড মালদহ ব্লকে লিচু চাষ হয়।কালিয়াচকের তিনটি ব্লকে লিচু চাষের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।তবে এখন জেলার প্রায় প্রতিটি ব্লকেই কমবেশি লিচুর চাষ হচ্ছে। প্রতি বছর এই জেলায় লিচুর গড় উৎপাদন হয় ১৬ হাজার মেট্রিক টন।এবারও জেলায় লিচুর ফলন খুব ভাল হয়েছে। লিচুর উৎপাদন আগের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিতে চলেছে বলেই মনে করছেন জেলা উদ্যানপালন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তরের উপ-অধিকর্তা সামন্তবাবু। তিনি জানান, ‘মালদহে আমের পরেই লিচুর স্থান। জেলার গঙ্গা নদী সংলগ্ন কালিয়াচকের তিনটি ব্লকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে বোম্বাই জাতের লিচু উৎপাদন হয়।’বোম্বাই প্রজাতির লিচু অত্যন্ত উন্নতমানের।পাতলা খোসা, শাঁসও অনেক বেশি থাকে।রসে ভরপুর।বাজারে এই লিচুর খুব চাহিদা রয়েছে।
কয়েক বছর আগে মালদহের লিচু মূলত পাঠানো হয়েছিল মুম্বাইয়ের বাজারে।এছাড়া ত্রিপুরা, অসম, বিহার, ঝাড়খন্ডেও লিচু রপ্তানি হয়েছে।মুম্বই থেকে বিদেশে বছর চারেক আগে প্রথম লিচু যাওয়ার পরেই তার কদর বেড়ে যায়।সেই ব্যবসায়ীরা আরব-বাহারিন জুড়ে ব্যবসা করতে শুরু করে।এর কয়েক বছরের মধ্যেই কলকাতার একটি ফুড এক্সপোর্টার্স সংস্থার মাধ্যমে লিচু পৌঁছায় ইউরোপীয় দেশগুলিতে। এবার অর্ডার আসতেই কলকাতার ওই এক্সপোর্টার্স সংস্থার মাধ্যমে লিচু যাচ্ছে বিদেশে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.