শিক্ষা দপ্তরের অর্থভাণ্ডার শূন্য হাজারো কর্মচারীর বেতন অধরা!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের অর্থভাণ্ডার শূন্য।এই অজুহাতে আবারও তিন মাস ধরে মিড-ডে মিল কর্মচারীদের বেতন প্রদান হচ্ছে না।বর্তমানে পরিস্থিতি এমন জায়গায় এসে ঠেকেছে।রাজ্যে একপ্রকার বন্ধের পথে মিড-ডে মিল প্রকল্প!তবে এরপরও এক অদৃশ্য কারণে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ উঠেছে।ফলে পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন হাজারো মিড-ডে মিল কর্মচারীরা।শুধু তাই নয়, আর্থিক সংকটের অজুহাতে প্রায় ৪৮৮ জন মিড-ডে মিল কর্মচারীকে ছাঁটাই পর্যন্ত করেছে শিক্ষা দপ্তর।যদিও কেন্দ্রীয় সরকার বছরে দুবার মিড-ডে মিল খাতে শিক্ষা দপ্তরকে আর্থিক সাহায্যও প্রদান করছে বলে খবর।তবে কেন মিড-ডে মিল কর্মচারীদের বেতন প্রদান সঠিকভাবে হচ্ছে না।উল্টো তাদের ধাপে ধাপে ছাটাই হচ্ছে।এ প্রশ্নের উত্তর আবার শিক্ষা দপ্তরের কাছে নেই। তাই হাজারো মিড ডে মিল কর্মচারীদের ক্ষোভ চরমে উঠেছে।
অবাক করার বিষয় হলো গত ফেব্রুয়ারী মাসেও মিড-ডে মিল কর্মচারীদের প্রায় ৫ মাসের বেতন আটকে রেখেছিল দপ্তর।এরপর কর্মচারীদের বিক্ষোভ ও সংবাদপত্রে খবর প্রকাশের পরই শিক্ষা দপ্তরে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়।এক প্রকার চাপে ওই সময়ে তাদের বেতন প্রদান হয়।অভিযোগ,ওই সময়ে ৫ মাসের পরিবর্তে মাত্র ৩ মাসের বকেয়া বেতন দেওয়া হয়েছিল।এখন আবার তিন মাসের বেতনভাতা মিড-ডে মিল কর্মচারীদের প্রদান হচ্ছে না।এমনকী আগের বকেয়া ২ মাসের বেতনও দিল না দপ্তর। মিড-ডে মিল কর্মচারীদের অভিযোগ,লোকসভা নির্বাচনের অজুহাতে এবং শিক্ষা দপ্তরে এই প্রকল্পের জন্য কেন্দ্র থেকে অর্থ আসেনি।এই অজুহাতে তাদের বেতনভাতা প্রদান হচ্ছে না।
শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, সরকারী স্কুলে বছরের পর বছর চাকরি করলেও তাদের এক অদৃশ্য কারণে নিয়োগপত্র পর্যন্ত প্রদান করা হয়নি।মিড-ডে মিলে কর্মচারীদের নিয়মিতকরণ তো দূরঅস্ত।উল্টো তাদের মাসিক বেতন পর্যন্ত দিতে পারছে না দপ্তর।শিক্ষা দপ্তর মিড-ডে মিল কর্মচারীদের মাথাপিছু প্রত্যেক মাসে প্রায় ২ হাজার ৫০০ টাকা বেতন প্রদানে ব্যর্থ হচ্ছে।শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর ২০২২ সালের এপ্রিল মাস থেকে রাজ্যে মিড-ডে মিল কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রদান সঠিকভাবে হচ্ছে না। তাই মিড-ডে মিল প্রকল্পে নিযুক্ত প্রায় ১০ হাজার ৮৮৮ জন কর্মচারীর দিশাহারা অবস্থা। প্রত্যেক মাসে ২ হাজার ৫০০ টাকা বেতনের জন্য তাদের শিক্ষা দপ্তরে দৌড়ঝাঁপ করতে হচ্ছে।এদিকে, শিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, রাজ্যে মিড-ডে মিল প্রকল্পের প্রথম ধাপে বাজেট প্রায় ৬৪ কোটি টাকা। প্রথম ধাপে এই টাকা সঠিক সময়ে পাচ্ছে না রাজ্য সরকার।ফলে তাদের বেতন দিতে ব্যর্থ শিক্ষা দপ্তর। রাজ্যের যে পরিস্থিতি যে কোনও মুহূর্তে এই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে বলে খবর। জানা গিয়েছে, রাজ্যের প্রায় ১১ হাজার স্কুলে মিড-ডে মিল প্রকল্প চলছে। বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে তারা কাজ করছেন। তবে এখন এই কর্মচারীদের বেতন প্রদান বন্ধ।এমনকী কবে নাগাদ বেতনভাতা প্রদান করা হবে, তার পর্যন্ত সঠিক উত্তর শিক্ষা দপ্তরের কাছে নেই।আর এখন তো পরিস্থিতি এমন জায়গায় এসে ঠেকেছে, মিড-ডে মিল কর্মচারীদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হচ্ছে প্রধান শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষিকারা। শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা তো মিড-ডে মিল কর্মচারীদের দেখলেই অফিস থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন।কারণ তাদের কাছে কোনও উত্তর নেই।এমনকী তাদের সাথে শিক্ষা সচিব পর্যন্ত দেখা করছেন না।২০১৮ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৮৮ জন মিড-ডে মিল কর্মচারীকে ছাটাই করা হয়েছে।তবে প্রতিশ্রুতি থাকলেও তাদের এখন পর্যন্ত নিয়মিত করা হয়নি।রাজ্যের গ্রাম, পাহাড়, জেলা, মহকুমা এবং বিশেষ করে এডিসি এলাকার স্কুলগুলির তো আরও ভয়াবহ অবস্থা।
এদিকে, সিআইটিইউ রাজ্য সভাপতি মানিক দে আরও জানান, মিড-ডে মিল প্রকল্পে গরিব শ্রমিকদের যাতে অবিলম্বে বেতন প্রদান করা হয়।তিনি রাজ্য সরকারের কাছে এই দাবি জানান।তবে শিক্ষা দপ্তরের এই দৈন্যদশার বিরুদ্ধে মিড-ডে মিল কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।