বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ ৪ জুলাই: রতন!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য কৃষি দপ্তরে গ্রেড ওয়ান অফিসার পদে আরও ৫৯ জনকে শীঘ্রই নিয়োগপত্র দেওয়া হবে।বর্তমানে অফার তৈরির কাজ চলছে।চেষ্টা চলছে পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণার আগেই তাদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার। বুধবার মহাকরেণ এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই কথা জানান কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ।এই প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী শ্রী নাথ আরও জানান,২০২৩ সালে কৃষি দপ্তরে গ্রেড ওয়ান অফিসার পদে ৬০ জনকে নির্বাচিত করার জন্য টিপিএসসির কাছে রিকুইজিশন পাঠানো হয়েছিল।টিপিএসসি যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করে ৫৯ জনকে নির্বাচিত করে দপ্তরের কাছে
তালিকা পাঠিয়েছে।এক্স-সার্ভিসম্যানদের জন্য একটি পদ সংরক্ষিত ছিল। সেখানে কোনও যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী পাওয়া যায়নি।ফলে ৫৯ জনকে নিয়োগপত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে দপ্তর।
মন্ত্রী জানান,মোট পদ ছিল ৬০টি।এরমধ্যে ইউআর ৪০টি, এসটি ১২টি এবং এসসি ৮টি। এই চাকরি প্রদানে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৩৩ শতাংশ মহিলা সংরক্ষণ কঠোরভাবে পালন করা হয়েছে।যে ৫৯ জন নিয়োগপত্র পাচ্ছেন তাদের মধ্যে মহিলা হচ্ছেন ২১ জন। নির্বাচিতদের মধ্যে পশ্চিম জেলায় রয়েছে ১৮ জন,দক্ষিণ জেলায় ১৩ জন, খোয়াই জেলায় ১১ জন, গোমতী জেলায় ৮ জন, সিপাহিজলা জেলায় ৩ জন, উত্তর জেলায় ৩ জন, ধলাই জেলায় ২ জন এবং ঊনকোটি জেলায় ১ জন।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে কৃষি মন্ত্রী জানান, গত বছর নভেম্বর মাসের ১৬, ১৭ এবং ১৮ তারিখ রাজ্যে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রচুর ফসল নষ্ট হয়েছে। যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষে এখন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রদান করা হবে।মন্ত্রী জানান, আগামী চার জুলাই জোলাইবাড়িতে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি অর্থ প্রদান করা হবে।মন্ত্রী জানান, দুই পদ্ধতিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ফসলের ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়।একটি হচ্ছে রাজ্য সরকারের এসডিআরএফ অর্থাৎ স্টেট ডিজাস্টার রিলিফ ফাণ্ড থেকে, অন্যটি প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা থেকে। রাজ্য কৃষি দপ্তরের এবং প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনার সাথে যুক্ত বিমা কোম্পানির প্রতিনিধিদের যৌথ পর্যবেক্ষণ সম্পন্ন করা হয়েছে আগেই।
মন্ত্রী জানান, গত বছরের ওই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে রাজ্যের মোট ২৩ হাজার ১৭১ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫৮ হাজার ২১০ জন কৃষক। রাজ্য সরকার ও কৃষি দপ্তর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতি হেক্টর জমির ফসল অর্থাৎ ধানের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে ৮,৫০০ টাকা করে।এতে মোট ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে ১৪ কোটি ৫৮ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা।দক্ষিণ ত্রিপুরাতে সব থেকে বেশি ১৪,৮০১ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। দ্বিতীয় গোমতী ৯,৯১৬ জন। তৃতীয় পশ্চিম জেলায় ৬,৭৩৬ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।এসডিআরএফ থেকে এই অর্থ মঞ্জুরি দেওয়া হয়েছে।
ওই তিনদিনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে শুধু ধানই নয়, ব্যাপকভাবে ক্ষতি হয়েছে আলু, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মরিচ, শশা, পান, ফুল ইত্যাদি চাষিদেরও। হর্টিকালচার দপ্তর এর জন্য পৃথক পর্যবেক্ষণ করেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২০,০৭৮ জন কৃষক।এদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে ৭ কোটি ৩৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা।এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনায় বিমা কোম্পানি ৮৭৪ জন কৃষককে ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রদান করবে।মন্ত্রী জানান,এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে ৩০ টন করে আনারস বিদেশে রপ্তানি করা হবে।সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। আজ বুধবারও নেরাম্যাক ৩০ টন কিউ আনারস বাইরে রপ্তানি করেছে।পাশাপাশি লেবু, কালিখাসা চাউল এবং কাঁঠালও রপ্তানি হচ্ছে।মন্ত্রী জানান, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে জার্মানির ‘একোয়া’ নামে একটি সংস্থা আগরতলায় একটি আন্তর্জাতিক ক্রেতা-বিক্রেতা সম্মেলন করবে।উদ্দেশ্য একটাই রাজ্যের কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করা এবং কৃষকদের কল্যাণ।