মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, বন্ধ ইন্টারনেট,, কার্ফু জারি!!
ছোটদের ফ্যাটি লিভারের সমস্যা!!
অনলাইন প্রতিনিধি:-ছোটদের মধ্যে ফ্যাটি লিভারের প্রবণতা এখন খুব বেশি দেখা যাচ্ছে। তার সঙ্গে জুড়ে যাচ্ছে নানা রোগবালাই।এর কারণ খুঁজতে গেলে দেখা যাবে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনই তার অন্যতম প্রধান কারণ।
ছোটদের মধ্যে ফ্যাটি লিভার বাড়ছে কেন?
ফ্যাটি লিভার এক ধরনের ক্রনিক লিভার ডিজিজ। বড়দের ক্ষেত্রে অ্যালকোহলিক লিভার ডিজিজ।ছোটদের ক্ষেত্রে এটা নন-অ্যালকোহলিক লিভার ডিজিজ।বর্তমান সময়ে বাচ্চারা প্রচুর পরিমাণে জাঙ্ক ফুড খাচ্ছে।এখনকার বাচ্চারা মল-কালচারে অভ্যস্ত।ফলে সেখানে গিয়েই পিৎজা, বার্গার, কোল্ড ডিঙ্কস, কেক-পেস্টির মতো এনার্জি ডেনস খাবার খাচ্ছে।এর ফলে শরীরের ইনসুলিন সিক্রিশন বেড়ে যায়।তার সঙ্গে বাইরে থেকে যে ফ্যাটি অ্যাসিডগুলো আসছে, তার ফলে লিভার লাইপোজেনোসিস করছে। ফলে লিভার সেলের হেপাটোসাইটিসের মধ্যেই ফ্যাট জমা হচ্ছে।এই রোগের মূল কারণ হল ওবেসিটি, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স ও ফিজিক্যাল ইনঅ্যাক্টিভিটি। বেশির ভাগ বাচ্চারই এখন সময় কাটে চার দেওয়ালের মধ্যে।স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে একটু ঘুম,তার পরেই উঠে পড়তে বসা আর অবসরে টিভি বা মোবাইল দেখা। দৌড়ঝাঁপ করে নিয়মিত খেলার অভ্যেস প্রায় নেই-ই। তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড।সব মিলিয়ে যে জীবনযাপনে তারা অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে,তা থেকেই নানা রোগের সূত্রপাত।তবে এর সঙ্গে যদি কিছু জেনেটিক্যাল রোগ বা মেটাবলিক ডিজিজ থাকে, তা হলে রোগটা
ট্রিগার করে।যেমন প্রেডার উইলি সিনড্রোম,গ্লাইকোজেন স্টোরেজ ডিজিজ, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম, প্রভৃতি থাকলে সেই শিশুর ফ্যাটি লিভারের প্রবণতা থাকবে।তবে শুধু ফ্যাটি লিভারের প্রবণতা থাকলে তা কম ক্ষতিকর। তার সঙ্গে যদি ইনফ্লামেশন দেখা দেয়,তা হলে কিন্তু খারাপ।তা থেকে পরে ফাইব্রোসিস,সিরোসিস অব লিভার হতে পারে।বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই প্রবণতা কম,তবে সতর্ক থাকতে হবে।
লক্ষণ :ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত বাচ্চারা অত্যন্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতায় ভোগে।যা কর্মক্ষমতায় প্রভাবিত করতে পারে।শিশুদের অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যায়।ফ্যাটি লিভারের কারণে বাচ্চার পেটের উপরের ডান দিকে অস্বস্তি বা হালকা ব্যথা হতে পারে।প্রায়ই এরকম ব্যথা হলে সতর্ক হতে হবে।ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় শিশুর খিদে কমে যেতে পারে।চিকিৎসা:চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ যেমন চলবে, তার সঙ্গে জীবনযাপনে বদল আনাও প্রয়োজন।শুধু ওষুধে নির্ভর করে থাকলে হবে না। প্যাকেটজাত,ভাজাভুজি, চিজযুক্ত খাবার, অতিরিক্ত চকলেট খাওয়া বন্ধ করতে হবে।তার বদলে সুষম আহার দরকার।রোজ প্রচুর পরিমাণে আনাজপাতি,ফল খাওয়ান সন্তানকে।পেঁপে, গাজর, বিনস, পটল ইত্যাদি মরসুমি আনাজ দিয়ে মাছের ঝোল রাঁধতে পারেন।খেয়াল রাখবেন,একগাদা তেলে যেন ঝোলের আনাজ ভাজা না হয়। এতে খাদ্যগুণ নষ্ট হয়। শশা, পেঁয়াজ, টমেটো, লেটুস দিয়ে স্যালাড করে দিতে পারেন।১-২ টি করে মরসুমি
ফল রাখুন রোজ খাদ্যতালিকায়।তা হলেই দেখবেন সন্তানদের পেট বেশ ভরা থাকবে।আর স্ন্যাকস জাতীয় খাবারের জন্য শুকনো কড়াইয়ে নাড়া মুড়ি, চিঁড়ে মাখা রাখতে পারেন। স্বাদের জন্য নয়, স্বাস্থ্যের জন্য ভাল, এমন খাবার নির্বাচন করতে হবে। শরীরচর্চা বা খেলাধুলোও দরকার।দিনের একটা সময় বাচ্চার খেলার জন্য ধার্য করতে হবে।খোলা মাঠে দিনে অন্তত এক ঘণ্টা যেন সে দৌড়াদৌড়ি করে খেলে। তার সুযোগ না থাকলে দিনে এক ঘণ্টা সাঁতার বা কোনও ব্যায়ামের অভ্যেস গড়ে তুলতে হবে।তবে সবটাই রুটিনে বেঁধে ফেললে বাচ্চার মানসিক ক্লান্তি দেখা দেবে।তাই তার মনের খোরাক যেন মেলে,সে ভাবেই অভিভাবককে পুরোটা পরিকল্পনা করতে হবে। জীবনযাপন নিয়ন্ত্রিত হলে, রোগবালাইও ধীরে-ধীরে কমতে থাকবে।তবে সন্তানের ওজন নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে মাপতে হবে। ওবেসিটি দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন লক্ষণভিত্তিক ধাতুগত চিকিৎসা। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় শিশুর ফ্যাটি লিভারের সমস্যা থেকে আরোগ্য লাভ সম্ভব।