জিবিতে জল সংকটে ব্যাহত ডায়ালিসিস, বিপাকে রোগী!!

 জিবিতে জল সংকটে ব্যাহত ডায়ালিসিস, বিপাকে রোগী!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের
প্রধান সরকারী হাসপাতাল জিবিতে কিডনি রোগীর ডায়ালিসিস চিকিৎসা পরিষেবা মুখ থুবড়ে পড়েছে। তাতে কিডনির রোগীরা ডায়ালিসিস করাতে না পেরে অবর্ণনীয় শারীরিক কষ্ট ও যন্ত্রণায় পড়েছেন। হাসপাতালের ডায়ালিসিস ইউনিটে জলের চরম সংকটে রোগীর ডায়ালিসিস করানোর কাজ প্রচণ্ডভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।তাতে রবিবার শুধু এক শিফটে কোনওভাবে আঠারোজন কিডনি রোগীকে পুরো সময় ডায়ালিসিস না করিয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে শেষ করার পরই দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকে।ডায়ালিসিস ইউনিটের রুটিন অনুযায়ী দিনভর কিডনির রোগীরা প্রচণ্ড শারীরিক সমস্যা যন্ত্রণা নিয়ে ডায়ালিসিস ইউনিটে উপস্থিত হয়ে ডায়ালিসিস করাতে অপেক্ষায় থাকেন।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, হাসপাতালের ডায়ালিসিস ইউনিটে অনেকদিন ধরেই জলের সংকট চলছে। ডায়ালিসিস করার জন্য হাসপাতালের নিজস্ব বিশেষ একটি ডিপটিউবওয়েল থেকে পাইপ লাইনে জল সরবরাহ করা হয়।রোগীর ডায়ালিসিস করানোর সময় নানা কাজে এই জল ব্যবহৃত হয়।কিন্তু অনেকদিন ধরেই জলের প্রচণ্ড সমস্যায় ধুঁকছে ডায়ালিসিস ইউনিট।সেই কারণে রোগীর ডায়ালিসিস করানোর কাজ প্রচণ্ডভাবে ব্যাহত ও বিঘ্নিত হচ্ছে। রোগীর অভিযোগে জানা যায় যে রোগীকে তিন ঘন্টা ডায়ালিসিস করানোর কথা সেই রোগীকে এক ঘন্টা কমিয়ে দুই ঘন্টা ডায়ালিসিস করানো হয়।আবার যে রোগীকে চার ঘন্টা ডায়ালিসিস করানোর কথা সেই রোগীকে এক ঘন্টা কমিয়ে তিন ঘন্টা ডায়ালিসিস করা হয়।নির্দিষ্ট সময় ডায়ালিসিস না করিয়ে তার থেকে কম সময় ডায়ালিসিস করানোয় রোগীর শরীরের সমস্যা দূর হচ্ছে না বলেও রোগীর অভিযোগ।তাতে কিডনির রোগীরা চরম সমস্যায় পড়েছেন।এমনীতেই কিডনি খারাপ হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসকের রুটিন অনুযায়ী কদিন পর পর কিডনির রোগীদের ডায়ালিসিস করাতে হচ্ছে।কিন্তু গত কিছুদিন ধরে ডায়ালিসিস ইউনিটে জলের সংকটে কিডনি রোগীর ডায়ালিসিস করানোর মতো চিকিৎসা পরিষেবার কাজ সঠিকভাবে না হওয়ায় হাসপাতালের ভূমিকায় কিডনি রোগী ও তাদের আত্মীয়রা প্রচণ্ড হতাশ ও ক্ষুব্ধ।রবিবার দুপুরের পর জলের অভাবে ডায়ালিসিস করানো বন্ধ হয়ে পড়ে।বেলা তিনটা থেকে রাত সাতটা পর্যন্ত ডায়ালিসিস করানো হয়নি কিডনির রোগীদের। রুটিন অনুযায়ী রোগীরা এসে উপস্থিত থাকলেও ডায়ালিসিস করানোর জন্য ভেতরে ডায়ালিসিস শয্যায় নেওয়া হচ্ছিল না।দুপুরের পরই রুটিনের সব রোগী ডায়ালিসিস করানোর জন্য চলে আসেন।গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ঘন্টার পর ঘন্টা ডায়ালিসিসের অপেক্ষায় থেকে আরও অসুস্থ হয়ে উঠেন।এদিকে আবার ডায়ালিসিস করানোর অপেক্ষায় থাকার জন্য যে জায়গা রয়েছে তাতে দশ- বারোজনের বেশি রোগী বসার কোনও ব্যবস্থা নেই। চব্বিশ শয্যায় রোগীর ডায়ালিসিস করানোর জন্য রোগীর সঙ্গে রোগীকে নিয়ে শুধু একজন করে যদি আত্মীয় আসেন তাহলে অপেক্ষা থাকার রুমে আটচল্লিশটি বসার চেয়ার প্রয়োজন।আছে শুধু দশ-বারোটি চেয়ার।
এই ডায়ালিসিস ইউনিটের এই চরম অব্যবস্থা ও বেহাল দশায় গুরুতর অসুস্থ রোগী ও আত্মীয়দের ফ্লোরে বসে ডায়ালিসিসের অপেক্ষায় কাটাতে হচ্ছে।যা খুব অমানবিক।প্রচণ্ড গরম সত্ত্বেও এসি দূরের কথা, অপেক্ষার রুমে পর্যাপ্ত ফ্যানও নেই। শৌচালয়েরও বেহাল দশা। নোংরা,জলও থাকে না। শৌচালয়ের দরজায় ছিটকানি পর্যন্ত নেই। ভেতরদিকে দরজা আটকানো যাচ্ছে না।তাতে শৌচালয়ে গিয়ে রোগী বা রোগীর আত্মীয়রা বিশেষ করে মহিলারা পড়েছেন প্রচণ্ড বিপাকে।এদিকে, রবিবার বিকালে হাসপাতালের মেডিকেল সুপার ডা. শংকর চক্রবর্তী জানান, জলের মোটর খারাপ হয়ে যাওয়ায় ডায়ালিসিস ইউনিটে জল সংকট দেখা দিয়েছে। সুপারের দাবি, শনিবার জলের মোটর খারাপ হয়ে যায়। শনিবার থেকে ডায়ালিসিস ইউনিটে জল সংকটে ডায়ালিসিস করানোর ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে হাসপাতাল সুপার দাবি করলেও রোগীদের অভিযোগ, গত বেশ কিছুদিন ধরেই জলের সমস্যার জন্য ডায়ালিসিস করানোর কাজ প্রচণ্ডভাবে ব্যাহত হচ্ছে।কেন অচল জলের মোটর দ্রুত সারাই করা হচ্ছে না তাতে হাসপাতাল সুপার জানান, এই মোটর আগরতলায় পাওয়া যায় না।বাইরে থেকে আনতে হবে।মোটর এলে তারপর মোটর লাগিয়ে সঠিকভাবে জল সরবরাহ করার কাজ শুরু হবে।কবে মোটর আসেব তা তিনি জানাতে পারেননি।এক প্রশ্নের উত্তরে সুপার ডা. চক্রবর্তী জানান, হাসপাতালের ডায়ালিসিস করানোর কাজ বেসরকারী সঞ্জীবনী সংস্থার হাতে চলে গেছে।এই সংস্থা এখানে চব্বিশ শয্যার ডায়ালিসিস ইউনিট ও হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি ভবনের আরও পাঁচ শয্যার ডায়ালিসিস করানোর দায়িত্ব পায়। রোগীরা বিনা পয়সায় ডায়ালিসিস করাতে পারবেন। এখন যেভাবে বিনা খরচে ডায়ালিসিস করান সেভাবেই বিনা খরচে করাবেন সঞ্জীবনী সংস্থার পরিচালনায়।এই সংস্থা কয়েকদিনের মধ্যে ডায়ালিসিস করানোর কাজ শুরু করবে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.