আগষ্টেই লোক চলাচল শুরু!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-ভিসা নিয়ে আসা ভারতীয় যাত্রীদের আদরে, সাদরে গ্রহণ করতে প্রস্তুত বাংলাদেশ সরকার। ভারত-বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যয়, প্রত্যাশার বৃত্ত অবশেষে সম্পূর্ণ। আগামী ১৪ আগষ্ট মৈত্রী সেতু দিয়ে লোক চলাচল শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশ ল্যান্ড পোর্ট অথরিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান চৌধুরী সরকারীভাবে গতকাল ঢাকায় জানিয়েছেন, ভারতের ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান আদিত্য মিশ্র-এর চিঠি বাংলাদেশ পেয়েছে।রামগড় স্থলবন্দর মৈত্রী অভ্যন্তরীণভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে উদ্বোধন হয়ে গেছে আগেই।বাংলাদেশের দিক থেকে প্রস্তুতি চূড়ান্ত।এদিকে, সাব্রম স্থলবন্দরের কাজ সম্পূর্ণ। মৈত্রী সেতু তার লম্বা দৌড় শুরু করার জন্য মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে মৈত্রী সেতু উন্মুক্ত করে দিয়েছেন আগেই। কিন্তু দু’দেশের স্থলবন্দর প্রস্তুত না হবার ফলে মৈত্রী সেতু দিয়ে লোক চলাচল শুরু হয়নি। এদিকে, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভারত ও বাংলাদেশ স্থলবন্দর, রামগড় ও সাব্রুম পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে গেছে। এখন শুধু লোক চলাচলের জন্য মৈত্রী সেতু খুলে দেওয়ার অপেক্ষায়।বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশ চাইছে দ্রুত মৈত্রী সেতু চালু হয়ে যাক।তারা তাদের দিকের কাজ আগে শেষ করে নিয়েছে।ভারতের এলপিআই চেয়ারম্যান আদিত্য মিশ্র বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন ভাতদের দিক থেকে সমস্ত কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের চিঠি পাওয়ার পর বাংলাদেশ সম্ভাব্য উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করেছে আগামী ১৪ আগষ্ট। দু’দেশের স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ আগামী ১৪ আগষ্টকে উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করে সমস্ত রকম কাজকর্ম চালাচ্ছে।তবে এই ক্ষেত্রে দুই দেশের সরকারের সর্বোচ্চ স্তরের সিদ্ধান্তের পরে ১৪ আগষ্টে সিলমোহর দেওয়া হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে লোক চলাচল শুর হওয়ার পর, পরের ধাপ আন্তর্জাতিক পণ্য বাণিজ্য। দুই দেশ চাইছে ২০২৪ সাল হয়ে উঠুক ঐতিহাসিক বছর। আন্তর্জাতিক পণ্য বাণিজ্যের নতুন পরিসর এই মৈত্রী সেতু। ভারত- বাংলা সম্পর্কের উষ্ণতায় এই সেতুর গুরুত্ব আগামী দিন অপরিসীম। চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দর ভৌগোলিক সুবিধায় উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের এক নতুন প্রক্যুতপূর্ণ বাঁক করত চলছে।সাব্রুম থেকে চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দরের দূরত্ব মাত্র ৭৫ কিলোমিটার।ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের পণ্যসামগ্রী একটা বড় অংশ এই পথ ধরে আগামী দিন আসবে।দক্ষিণ ভারত সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের পণ্য সামগ্রী বঙ্গোপসাগর ভেসে চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দরে চলে আসবে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সরাসরি পণ্যসামগ্রী চলে আসবে মৈত্রী সেতু ডিঙিয়ে ভারতে। ভারতের অংশে যোগাযোগের পরিকাঠামো একদম জুতসই অবস্থায় রয়েছে।সাব্রম- আগরতলা জাতীয় সড়ক পুরোপুরি প্রস্তুত ও মসৃণ অবস্থায় রয়েছে।তাছাড়া রয়েছে সাব্রম রেলস্টেশন। রেলে পণ্য পরিবহণের নিরঙ্কুশ সুবিধা ইতিমধ্যে গড়ে উঠেছে। সে লক্ষ্যে সাব্রুম রেলস্টেশনকে আধুনিক রূপ দেওয়া হচ্ছে।ইতিমধ্যে দূরপাল্লার ট্রেন চালু হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আসা পণ্যসামগ্রী রেলের পরিকাঠামোর সুবিধা নিয়ে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে পৌঁছে যাবে। শুধু আন্তর্জাতিক পণ্য বাণিজ্য নয়, পর্যটন ক্ষেত্রে এই পথ পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। বাংলাদেশে এশিয়ার অন্যতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। মৈত্রী সেতু সেতু দিয়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পৌঁছতে খুব কম সময় লাগবে। আর্থিক দিক থেকেও লাভবান হবে।সাব্রুম স্থবন্দরে গড়ে উঠছে অত্যাধুনিক আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাল। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার নতুন প্রবেশদ্বার সাব্রুমের এই মৈত্রী সেতু। এই পথ ধরে আগামী দিন উন্নয়নের কালো ঘোড়া ছুটবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লুক ইস্ট (পুবে তাকাও) নীতির ফলিত রূপ হয়ে উঠতে পারে ত্রিপুরার ফেনী নদীর উপর নির্মিত ভারত বাংলা মৈত্রী সেতু। চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দরের সুবিধা ভারতকে দেওয়ার ঘোষণা শেখ হাসিনা আগেই দিয়েছিলেন। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বঙ্গোপসাগরের সমুদ্রপথ ধরে পণ্যসামগ্রী নোঙর করবে চট্টগ্রাম বন্দরে। বন্দর থেকে সরাসরি চলে আসবে ত্রিপুরায়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা একাধিকবার সাক্রমে দাঁড়িয়ে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঐকান্তিক উদ্যোগে এতদিন পিছিয়ে পড়া উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের বহুমাত্রিক উন্নয়নের নতুন ঠিকানা হতে চলছে ত্রিপুরার এই মৈত্রী সেতু। রাজ্যবাসীর স্বপ্নের মৈত্রী সেতু উন্নয়নের গেম চেঞ্জার-এর ভূমিকায় উত্তীর্ণ।