শিক্ষা দপ্তরের অমানবিকতার শিকার শিশুরা, অভিভাবক মহলে তীব্র ক্ষোভ!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-শিক্ষা দপ্তরের অমানবিকতার শিকার হচ্ছে রাজ্যের কচিকাঁচা শিশুরা।গত ৭ আগষ্ট শিক্ষা দপ্তরের জারি করা এক নির্দেশে রাজ্য সরকারের এই অমানবিক ভূমিকা সামনে এসেছে।শিক্ষা দপ্তর ওইদিন এক নোটিশ জারি করে জানিয়ে ছিল এখন থেকে নার্সারি বিভাগের শিশুদের সাড়ে আটটার বদলে বিদ্যালয়ে সকাল সাড়ে দশটা পর্যন্ত থাকতে হবে। অথচ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে পাঠরত শিশুদের আবার সকাল ৯.৩০ মিনিটে ছুটির সিদ্ধান্ত নিল শিক্ষা দপ্তর। আর রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের এই তুঘলকি সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসতেই অভিভাবক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।রাজ্যবাসী, অভিভাবক মহলে প্রশ্ন উঠেছে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী কী করে দপ্তরের এ ধরনের অমানবিক নির্দেশে সবুজ সংকেত দিলেন?
শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর গত ৭ আগষ্ট No.F.2(96)-EDN(W)/Sama- gra/Pre-Pry/2020 (Vol-l) /14967-15028 এই সেহামূলে নোটিশ জারি করে বলেছে, রাজ্যের সরকারী স্কুলে নার্সারি বিভাগের শিশুদের এবং কেজি -১-এ পাঠরত শিশুদের সকাল ১০.৩০ মিনিট পর্যন্ত বিদ্যালয়ে থাকতে হবে।যদিও এতকাল নার্সারি ও কেজি ১-এ পাঠরত কচিকাঁচাদের সকাল ৭ টা থেকে ৮.৩০ টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে থাকার নিয়ম ছিল।এই নিয়মে সকাল
৮ টায় স্কুল ছুটির পর কচিকাঁচাদের ৮.৩০ মিনিট পর্যন্ত মিড-ডে-মিল প্রদান হতো।ফলে মাত্র আড়াই তিন বছরের শিশুদের সকাল ৭ টা থেকে ৮ টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে থাকা বাধ্যতামূলক ছিল।তবে হঠাৎ করে কেন মাতৃদুগ্ধ পান করা শিশুদের বিরুদ্ধে এই তুঘলকি সিদ্ধান্ত রাজ্যে হল? এ প্রশ্নের উত্তর শিক্ষা দপ্তরের কাছে নেই।অথচ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়ে ৯.৩০ মিনিট পর্যন্ত থাকতে হবে।আর তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ছুটি হবে ১০.৩০ মিনিটে।
অভিযোগ নার্সারি, কেজি ১ সহ প্রতি বিভাগে পাঠরত কচিকাঁচাদের সাথে স্কুলগুলিতে অমানবিক আচরণ হচ্ছে।রাজধানীর মহারাণী তুলসীবতী বালিকা বিদ্যালয়, উমাকান্ত স্কুল (বাংলা ইংরেজি), শিশু বিহার স্কুল, নেতাজী সুভাষ বিদ্যানিকেতন এর মধ্যে অন্যতম।এছাড়া রাজধানী সহ রাজের অন্যান্য জেলা ও মহকুমার স্কুল
রয়েছে, যেগুলিতে অমানবিক নির্যাতন চলছে। এই সবগুলিতে নার্সারি, কেজি- ১ সহ প্রাতবিভাগের কচিকাঁচাদের সকাল ৬ টার মধ্যে বিদ্যালয়ে আনা হচ্ছে। এরপর বিদ্যালয়ের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। অবাক করার বিষয় হলো নার্সারি, কেজি-১ সহ অন্যান্য কচিকাঁচাদের এই সময়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।
অথচ অনেক শিশু এর মধ্যে মাতৃদুগ্ধ পান করছে। তবে তাদের কাছ থেকে সেই অধিকার কেড়ে নিচ্ছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়ে থাকাকালীন সময়ে শিশুদের শৌচালয়ে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত হচ্ছে না। তাদের পানীয় জল ও খাবার পর্যন্ত সঠিক ভাবে প্রদান হচ্ছে না।এক প্রকার জেলবন্দি অবস্থায় শিশুদের রাখা হচ্ছে।অথচ অভিভাবকরা গেটের বাইরে বসে থাকছেন।এর মধ্যে প্রত্যেকদিন শিশুরা নানাভাবে অসুস্থ হচ্ছে।আর মিড-ডে-মিলের নামেও শিশুদের অস্বাস্থ্যকর খাবার প্রদান হচ্ছে।যা সারা দেশের মধ্যে ব্যতিক্রম। অভিভাবকদের কেন স্কুলের ভিতরে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না- এ নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে।
এদিকে এখন শিক্ষা দপ্তরের নতুন তুঘলকি সিদ্ধান্তে জন্যে এএমসির ১৬ টি স্কুল, বামুটিয়ায় ৩টি স্কুলে, বেলবাড়ি ২ টি স্কুলে, ডুকলি ৬ টি স্কুলে, হেজামারা ১ টি স্কুল, জিরানীয়া ৭ টি স্কুলে, লেফুঙ্গা ৩ টি স্কুলে, পুরাতন আগরতলা ১ টি স্কুলে, আরএমসি ১ টি স্কুলে, মান্দাই ২ টি স্কুলে, এমএমসি ৩টি স্কুলে, মোহনপুর ৩ টি স্কুলে সহ রাজ্যব্যাপী বিক্ষোভ হচ্ছে।
অভিভাবকদের অভিযোগ এ নির্দেশ আসার পর স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের
উপর অমানবিক নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যাবে। রাজ্যে বর্তমানে জনগণের সরকার বলে কিছু নেই।এই
রাজ্যে একটি দুর্ভোগের সরকার চলছে।তাই এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে, শিশুদের কোনভাবে স্কুলে
পাঠানো হবে না। এমনই হুঁশিয়ারি অভিভাবকদের।