এসপিকে নোটিশ কমিশনের বাড়িতে ছুটে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী!!

 এসপিকে নোটিশ কমিশনের বাড়িতে ছুটে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-উদয়পুরে শিক্ষক অভিজিৎ দে হত্যাকাণ্ডে এবার নড়েচড়ে বসলো রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করে গোমতী জেলার পুলিশ সুপারকে নোটিশ ইস্যু করেছে।জেলার পুলিশ সুপারকে কমিশন নির্দেশ দিয়েছে চার সপ্তাহের মধ্যে ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়া জন্য।কেন না, এই ঘটনায় প্রতি পদেপদে পুলিশের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে।গত ৮ আগষ্ট শিক্ষক অভিজিৎ দে-কে প্রচণ্ড মারধর করার পর থানায় নিয়ে আসে।সেই রাতে প্রয়াত অভিজিৎবাবু থানার লকআপে পুলিশের হেফাজতেই ছিল।পরদিন পুলিশ অভিজিৎবাবুকে আদালতে হাজির করে। আদালতে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি রক্তবমি করেন। আদালত থেকেই অভিজিৎবাবুকে নিয়ে যাওয়া হয় গোমতী জেলা হাসপাতালে।সেখান থেকে জিবি হাসপাতালে।পরদিন জিবি হাসপাতালেই তিনি মারা যান। অভিযোগ, এরপরই পুলিশ পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।পুলিশ হেফাজতে থাকা একজন অভিযুক্তকে চিকিৎসার জন্য জিবি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো।সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হলো। অথচ তার ময়নাতদন্ত না করেই দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে?এখানে শুধু পুলিশ নয়, জিবি হাসপাতালের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে।স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, কেন জিবি হাসপাতালে তার ময়নাতদন্ত করা হয়নি? পুলিশ কি কিছু লুকোতে চেয়েছিল? অভিজিৎ দে’র শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন থাকা সত্ত্বেও পুলিশ এবং চিকিৎসক কেউই এই বিষয়ে গুরুত্ব দেয়নি। ময়নাতদন্ত না করেই দেহ পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে। খবরে প্রকাশ, অভিজিৎ দে’র মৃত্যুর কারণকে পাল্টে দেওয়ার একটা চক্রান্ত চলছে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।লিভার খারাপ ছিল, এমন একটি প্রচার চালানো হচ্ছে। লিভার খারাপ থাকলেও একজন ব্যক্তির এভাবে আচমকা মৃত্যু হয় না। যদি সেটাই তার মৃত্যুর কারণ হয়, তাহলে তো মারধর করার অভিযোগে যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে বিচারের কী হবে? তারা তো এমনিতেই ছাড়া পেয়ে যাবে।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী রবিবার প্রয়াত শিক্ষক অভিজিৎ দে’র বাড়িতে যান।সাথে ছিলেন এলাকার বিধায়ক মন্ত্রী প্রাণজিৎ সিংহ রায়। বিধায়ক অভিষেক দেব রায়, বিধায়ক জিতেন মজুমদার, বিধায়ক রঞ্জিৎ দাস সহ আরও অনেকে।মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষক অভিজিৎ দে’র স্ত্রী সাথে একান্তে কথা বলেন এবং প্রয়োজনীয় সকল সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।বেড়িয়ে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন,ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। ঘটনা শোনার পরই তিনি এই ব্যাপারে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।আইন আইনের পথে চলবে এবং দোষীদের যাতে সঠিক সাজা হয়, সেটা তিনি দেখবেন বলে জানান। কিন্তু বিস্ময়ের ঘটনা হলো,পুলিশ এবং চিকিৎসকের কর্তব্যে গাফিলতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী একটি শব্দও বলেননি।কেন জিবি হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হলো?এই বিষয়ে একটি কথাও বলেননি মুখ্যমন্ত্রী।একটা লোকাকে প্রচণ্ড মারধর করার পর পুলিশ সেই লোককে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। অথচ চিকিৎসক কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করেই ছেড়ে দিলেন।তাদের কেন এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?ফলে বিচার কোন্ পথে এগোবে?সেটাই এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন।
একই দিনে বামপন্থী আইনজীবী সংগঠনের একটি প্রতিনিধি দল এবং বামপন্থী ছাত্র যুব সংগঠনের একটি প্রতিনিধি দল নিহত শিক্ষকের বাড়িতে যায়।তারা পরিবারের সাথে কথা বলেন এবং সমস্ত রকম আইনি সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।জানা গেছে, খুব শীঘ্রই এই ব্যাপারে উচ্চ আদালতে মামলা করা হবে।শুধু তাই নয়, উক্ত ঘটনার মূল অভিযুক্ত শংকরের বাড়ির অন্যান্য সদস্যদেরও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি উঠেছে। অন্যদিকে, প্রয়াত শিক্ষক এবং ছাত্রীর একটি ভুয়ো অডিও রেকর্ডিং সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল করা হয়েছে।যে অডিও নিয়ে এতবড় কাণ্ড ঘটে গেছে। এই বিষয়েও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।কিন্তু পুলিশের ভূমিকা যেখানে শুরু থেকেই প্রশ্নের মুখে, সেখানে এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ কতটা মসৃণ হবে? তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ তৈরি হয়েছে। এদিকে শিক্ষক অভিজিৎ দে হত্যাকাণ্ড মামলার তদন্ত সিআইডি’র হাতে দেওয়ার দাবি তুলেছে সিপিআই (এমএল)।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.