ভয়ঙ্কর! গত ৬ মাসে নিঃসঙ্গতায় ৪০ হাজার প্রবীণের মৃত্যু জাপানে!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-নিঃসঙ্গ একাকী জীবন।তার উপর বার্ধক্যের বোঝা।গুরুতর অসুস্থ হলে কাউকে ডাকার মতো লোকও নেই, শুশ্রূষা দূর-অস্ত। অতএব, বার্ধক্য-জ্বরা এবং তার সঙ্গে বিনা চিকিৎসা।আর ঠিক এই কারণেই গত ছয় মাসে জাপানে অন্তত ৪০ হাজার বৃদ্ধ-বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। নিঃসঙ্গতায়,বিনা চিকিৎসায়! খোদ জাপানের ন্যাশনাল পুলিশ ব্যুরো তাদের সাম্প্রতিক রিপোর্টে এমন ‘ভয়ঙ্কর’ তথ্য সামনে এনেছে। এই নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, মৃতদের ৭০ শতাংশের বয়স ৬৫-র বেশি। জাপান পুলিশ জানিয়েছে, ৪০ শতাংশের মারা যাওয়ার কথা একদিনের মধ্যে জানা গেছিল। তবে অন্যদিকে, প্রায় চার হাজারের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় এক মাস পর! এখানেই শেষ নয়, মৃত্যুর এক বছর পর জানা গেছে ১৩০ জনের মৃত্যু সংবাদ।যে পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায়, এলাকার কোনও প্রবীণকে দেখা না গেলে খোঁজখবর নেওয়ার কেউ নেই।
পৃথিবীর বহু শহরকে এখন বৃদ্ধদের নগরী তথা ‘এক্সটেন্ডেড ওল্ড-এজ হোম’ বলা হয়ে থাকে।জাপানকেও তেমনই বলা হয়ে থাকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের দেশ।এ দেশে নতুন প্রজন্মের মধ্যে সন্তান জন্ম দেওয়ার ব্যাপারা তীব্র অনীহা এবং গড় আয়ুর উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির কারণে সত্তরোর্ধ্ব মানষের সংখ্যা ‘সূর্যোদয়ের দেশ’ জাপানে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে। ফলে কমেছে শিশু- কিশোর-তরুণ-যুবার হার। এই কারণে বয়স্কদের মধ্যে নিঃসঙ্গতা মাত্রা ছাড়িয়েছে। লক্ষ লক্ষ বৃদ্ধ- বৃদ্ধা একাকী জীবন কাটাতে বাধ্য হ হচ্ছেন। তাদের অসুখ-বিসুখের খবর পরিচিতরা জানতেও পারছেন না। একা বাড়িতে বিনা চিকিৎসায় কত অসহায় ভাবে তাদের জীবনের
যবনিকাপাত হচ্ছে, এই রিপোর্টে সেটাই উঠে এসেছে।
জাপানে জনসংখ্যা বিষয়ে কাজ করে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ পপুলেশন অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি রিসার্চ। উদ্বেগের তথ্য তুলে ধরে তারা জানিয়েছে, ২০৫০ সাল নাগাদ জাপানের প্রতি পাঁচটি পরিবার পিছু একজনকে একাকী জীবন কাটাতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাপানে জনসংখ্যায় বয়সের ভারসাম্য না থাকার প্রভাব এ দেশের অর্থনীতিতেও পড়তে শুরু করেছে।প্রবীণদের সামাজিক সুরক্ষার দায় রাষ্ট্রের উপর চাপছে।অন্য দিকে, নবীনের সংখ্যা কমে যাওয়ায় শ্রম শক্তিতে বিপুল ঘাটতি দেখা দিয়েছে। জাপানের মতো এতটা তীব্র না হলেও একই সমস্যা দেখা দিয়েছে চিনেও।এছাড়া ইওরোপের বহু দেশেও একই সমস্যায় জেরবার। নব দম্পতিদের মধ্যে সন্তান না নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। বেড়ে চলেছে বিনা বিবাহে একত্রবাসের প্রবণতা।