মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, বন্ধ ইন্টারনেট,, কার্ফু জারি!!
সচেতনভাবেই এড়িয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী, অভিযোেগ বিরোধীদের!!
অনলাইন প্রতিনিধি:-রাজ্যে সাম্প্রতিক ‘ভয়াবহ বন্যায় সরকারী ত্রাণ কোথায়?বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি আরও ভয়ানক, সর্বত্র শুধু হাহাকার’ শীর্ষক তথ্যমূলক সংবাদ মঙ্গলবার দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে।এই সংবাদ প্রকাশের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই দিল্লী উড়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। রাজ্যে এই ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের পর বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে তিনদিনের রাজ্য বিধানসভার বর্ষাকালীন অধিবেশন। বিপর্যয়ের পর প্রথম বিধানসভা অধিবেশন এটি। সেই দিক থেকে এই বিধানসভা অধিবেশন নানা দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে আচমকা মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লী চলে যাওয়াকে বিরোধীরা অন্য চোখে দেখছে।বিরোধীদের অভিযোগ,মুখ্যমন্ত্রী সচেতনভাবেই বিধানসভাকে এড়িয়ে গেছেন।যাতে করে বিপর্যয় এবং বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ও প্রশাসনের যাবতীয় ব্যর্থতাগুলি নিয়ে বিধানসভায় বিরোধীদের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে না হয়। বিধানসভায় যাতে বিরোধীদের মোকাবিলা করতে না হয়।তার জন্যই মুখ্যমন্ত্রী এই সময়ে আচমকা বিধানসভাকে এড়িয়ে দিল্লী পাড়ি দিয়েছেন বলে বিরোধীরা অভিযোগের আঙুল তুলেছে।যা নিয়ে রীতিমতো গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
এটা এক প্রকার নিশ্চিতই ছিল যে, রাজ্যে ভয়াবহ বন্যা এবং বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ও প্রশাসনের নানা ব্যর্থতা নিয়ে বিধানসভায় বিরোধীরা ঝড় তুলবে।বিপর্যয় মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি থেকে শুরু করে, সরকারী ত্রাণ বন্টন সহ নানা ইস্যুতে বিরোধীরা সরকারের জবাব চাইবে। বিপর্যয়ের আগাম সতর্কবার্তা ছিলো কিনা?থাকলে সরকার এবং প্রশাসন বিপর্যয় মোকাবিলায় আগাম কোনও প্রস্তুতি – নিয়েছিল কিনা? নিয়ে থাকলে কি ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল? বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে? মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে এখন পর্যন্ত কতটাকা অনুদান জমা পড়েছে?সেটা কোথায় কীভাবে ব্যয় হচ্ছে বা হবে? বিপর্যয়ে রাজ্যের এবং | রাজ্যবাসীর যে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষতিপূরণে সরকার কি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে? ইত্যাদি নানা প্রশ্নের জবাব চাইবে বিরোধীরা। আর এই জবাব দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর।শুধু তাই নয়, এই বিধানসভা অধিবেশনে সাম্প্রতিক বিপর্যয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য সময়ও নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার বিকেলে দিল্লী পাড়ি দিয়েছেন।তিনি কবে ফিরবেন? এই বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। অধিবেশন চলবে তিনদিন।এরমধ্যে তিনি ফিরবেন কিনা?সেটাও নিশ্চিত নয়। ফিরলে বন্যা পরিস্থিতি এবং বিপর্যয় নিয়ে বিধানসভায় বিবৃতি দেবেন কিনা?এই নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে।
রাজ্যে ভয়াবহ বন্যার দুই সপ্তাহ অতিক্রম হয়ে গেছে। এখনও প্রচুর মানুষ ত্রাণ – শিবিরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। বহু মানুষ ত্রাণ শিবির ছেড়ে গেলেও, তারা বাড়ি – ঘরে যেতে পারেননি।কারণ, বন্যার জলে সব ভেসে গেছে।মাথা গোঁজার ঠাঁই — পর্যন্ত নেই। আত্মীয় বাড়ি বা অন্য কোথাও আশ্রয় নিয়েছেন। এই ভয়াবহ – পরিস্থিতিতে সরকারী উদ্যোগে ত্রাণের কোনও উদ্যোগই চোখে পড়েনি।সব – জায়গা থেকে একই অভিযোগ শোনা যাচ্ছে।সরকারের পক্ষ থেকে কোনও সাহায্যই পায়নি অসহায় মানুষরা।এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বেসরকারী উদ্যোগে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে দুর্গত মানুষের কাছে না পৌঁছালে কি ভয়ঙ্কর পরিণত হতো, – তা সহজেই অনুমেয়। মুখ্যমন্ত্রী গত ক’দিন ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে বলছেন, সাম্প্রতিক বন্যায় রাজ্যের বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন যেভাবে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, তা এক কথায় ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে।মানুষের এমন স্বতস্ফূর্ত উদ্যোগ।এর আগে দেখা যায়নি।মুখ্যমন্ত্রী ঠিকই বলছেন।এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।কিন্তু সব থেকে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, রাজ্যের মানুষ এই ইতিহাস সৃষ্টি করতে পারলেও, ডবল ইঞ্জিনের সরকার ও প্রশাসন সেই ইতিহাস সৃষ্টি করতে পারলো না কেন?এর জবাব তো মুখ্যমন্ত্রীকেই দিতে হবে।কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সেই জবাব দেবার আগেই সচেতনভাবে বিধানসভা এড়িয়ে গেছেন বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা।