এক যুগ ধরে দিনে মাত্র ৩০ মিনিট ঘুমিয়েই ‘সুপারফিট’ জাপানের হরি!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-কে না জানে যে শরীর সুস্থ রাখতে দরকার পর্যাপ্ত ঘুম। চিকিৎসকেরা নিদান দেন, পূর্ণবয়স্ক একজন মানুষের দিনে কমপক্ষে সাত ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। আবার অনেকে কাজের চাপে ঘুমাতে পারেন বড়জোর তিন ঘণ্টা।যেমন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অথবা ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। তবে সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুম যে জরুরি, সেই ধারণা বেমালুম পাল্টে দিয়েছেন দাইসুকো হরি।অল্প ঘুমেই তুষ্ট তিনি। কতটা অল্প ঘুম? ইন্টারনেটে পাওয়া দাইসুকো হরির জীবনবৃত্তান্ত বলছে, গত ১২ বছর ধরে তিনি প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিট ঘুমিয়েছেন।কারণ কী?হরির বক্তব্য, তিনি আরও বেশি সময় কাজে সক্রিয় থাকতে চান। অধুনা চল্লিশ বছরের হরি নিছক একজন সাধারণ মানুষ নন,তিনি ‘সুপারফিট’ বডিবিল্ডার। ফলে দৈহসৌষ্ঠব করতে হলে পর্যাপ্ত ঘুম আবশ্যক, এই সাবেক তত্ত্বকেই নস্যাৎ করে দিয়েছেন হরি।
দাইসুকো হরির বাড়ি জাপানের পশ্চিমাঞ্চলের হিয়োগো অঞ্চলে পেশায় তিনি শিল্পোদ্যোগী। তবে ভালোবাসেন ছবি আঁকতে, গানবাজনা করতে এবং বডিবিল্ডিং করতে। সারা দিনে মাত্র আধ ঘণ্টা ঘুমিয়েই পরদিন সকালে শরীরচর্চা হরির মাস্ট।পাশাপাশি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ক নকশা তৈরিও তার পছন্দের কাজ।মাত্র তিরিশ মিনিট ঘুমিয়েও তিনি কী ভাবে এত চমমনে, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী সেই প্রশ্নেই তিনি সম্প্রতি সংবাদ শিরোনামে এসেছেন।এই বিষয়ে হরি জানান যে, তিনি কম ঘুমের জন্য তার শরীর ও মনকে পুরোপুরি প্রশিক্ষিত করেছেন।দৈনন্দিন জীবনে কর্মঘণ্টা বাড়ানোর জন্যই তিনি অভ্যাস রপ্ত করেছেন। তার ফিটনেসের রহস্য কী?
চিনা দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে প্রকাশ, ১২ বছর আগে কম ঘুমানোর অভ্যাস শুরু করেছিলেন হরি।২০১৬ সালে, তিনি জাপান শর্ট স্লিপারস ট্রেনিং অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি সংগঠন চালু করেন,যেখানে তিনি মানুষকে স্বাস্থ্য এবং ঘুম সংক্রান্ত ক্লাস দেন।তিনি প্রতিদিন জিমে এক ঘণ্টার বেশি সময় দেন।
হরি বলেন, ‘দিনে মাত্র ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট ঘুমাই। শরীর ও মস্তিষ্ককে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দিয়েছি, যেন কম ঘুমেও ক্লান্তি না আসে।’ তিনি বলেন, ‘যারা কাজে মনোযোগ দিতে চান, তাদের জন্য দীর্ঘ সময় ঘুমের চেয়ে অল্প সময়ে উচ্চমানের ঘুম বেশি প্রয়োজন।যেমন চিকিৎসক ও দমকল-কর্মীরা কম বিশ্রাম নেন।কিন্তু ওই স্বল্প বিশ্রামই তাদের কাজে উৎসাহ জোগায়।’
ইন্টারনেটে হরির একটি জীবনবৃত্তান্ত রয়েছে।তাতে লেখা, কীভাবে কম সময় ঘুমিয়ে টিকে থাকা যায় সেই কৌশল ২,১০০ জনের বেশি মানুষকে শিখিয়েছেন হরি। এমনই একজন জাপানের ইয়োমিউরি বলেছেন, হরির কাছ থেকে শিখে এখন দিনে মাত্র ৯০ মিনিট ঘুমান।। তিনি। চার বছর ধরে এভাবেই চলছে।তার স্বাস্থ্যও ভালো আছে।
এদিকে হরির দীর্ঘদিনের এই অভ্যাস নিয়ে সামাজিক মাধ্যমেও চর্চা চলছে। সেখানে তার তিরিশ মিনিটের ঘুম-তত্ত্ব নিয়ে পাওয়া গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। চিকিৎসকেরা বলছেন, কম ঘুমের সঙ্গে সবাই খাপ খাইয়ে নিতে পারেন না। জাপানি চিকিৎসক। গুয়ো ফেই বলেন, প্রাপ্তবয়স্কদের। দিনে সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। সক্রিয় থাকার পর শরীর ও মস্তিষ্ককে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ঘুমের এই নিয়ম মানা গুরুত্বপূর্ণ।