মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, বন্ধ ইন্টারনেট,, কার্ফু জারি!!
রাজ্যে বেকার সমস্যা, শূন্যপদ পূরণ ইস্যুতে তপ্ত বিধানসভা!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যে
বেকার সমস্যা এবং শূন্যপদে নিয়োগ সংক্রান্ত উত্থাপিত জরুরি জনস্বার্থ বিষয়ক প্রশ্নে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় সরব হয়েছে বিরোধীরা।পাশাপাশি বেকার সমস্যা এবং শূন্যপদে নিয়োগ নিয়ে বিরোধীদের উত্থাপিত যাবতীয় অভিযোগের পাল্টা জবাবও দিয়েছে শাসক শিবির।প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে আলোচনাকালে মাঝে মাঝে উত্তপ্ত হয়েছে বিধানসভা। বিরোধীরা যেমন তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন।তেমনি
শাসক দলের পক্ষ থেকেও বিরোধীদের উত্থাপিত অভিযোগ খন্ডন করে বেকার সমস্যা নিরসনে এবং কর্মসংস্থানে সরকারের যাবতীয় প্রয়াসের তথ্য তুলে ধরেছেন।সবশেষে গত ছয় বছরে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন দপ্তর (সরকারী-বেসরকারী) কর্মসংস্থানের যাবতীয় তথ্য তুলে ধরেন কর্ম বিনিয়োগ মন্ত্রী টিংকু রায়।মন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে।তার মধ্যে দুই বছর চলে গেছে কোভিড মহামারিতে।মূলত ২০২০ সাল থেকে রাজ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।এই কম সময়ের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সরকারী ও বেসরকারীভাবে যে পরিমাণ নিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা মোটেও নিরাশাজনক নয়। ৩১ মার্চ ২০১৮ পর্যন্ত রাজ্যের কর্ম বিনিয়োগ কেন্দ্রগুলিতে নথিভুক্ত বেকারের সংখ্যা ছিল ৭,৪১,৩০৫ জন। অন্যদিকে, ৩১ মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত ন্যাশনাল ক্যারিয়ার সার্ভিস পোর্টালে রাজ্যের নথিভুক্ত কর্ম প্রত্যাশী বেকারের সংখ্যা হল ৩,০৯,৪৮২ জন। এ দিন বিধানসভায় বিষয়টি উত্থাপন করেন কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মণ।
আলোচনা করতে গিয়ে শ্রী বর্মণ বলেন, গোটা রাজ্যে ভয়াবহ বেকার সমস্যা।
হাজার হাজার শিক্ষিত বেকার হতাশায় নিমোজ্জিত। শিল্প নেই, আইটি শিল্পে
কর্মসংস্থানের জন্য সরকারের কোনও উদ্যোগ নেই।প্রতি বছর শত শত কর্মচারী অবসরে যাচ্ছে। হাজার হাজার শূন্যপদ পড়ে রয়েছে।কোনও নিয়োগ নেই।
ইন্টারভিউ হয়,নিয়োগ পরীক্ষা হয়, কিন্তু ফল প্রকাশ করতে তিন-চার বছর লেগে
যায়।বেকাররা আজ হতাশ। ডা. মানিক সাহা মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষা দপ্তরের দায়িত্ব
নেওয়ার পর একজনও শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। বিভিন্ন দপ্তরে ইঞ্জিনীয়ারদের
১৮০০ পোস্ট শূন্য পড়ে আছে।দশ বছর ধরে পি আই নিয়োগ বন্ধ।ফায়ার সার্ভিসে পরীক্ষা নিয়ে ফল প্রকাশ করা হয়নি।এক হাজার পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ ২০২২ সাল থেকে ঝুলে আছে। তিনি আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ
বাতিল করার দাবি তুলেন। কলেজগুলিতে নিয়োগ নেই। স্বাস্থ্য দপ্তরে নিয়োগ নেই। এসটিজিটি নিয়োগ কৌশল করে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেন।প্রশ্ন তুলেন টিপিএসসির ভূমিকা নিয়ে।আলোচনায় তিনি আরও একাধিক অভিযোগ তুলেন।
বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন,তীব্র বেকার সমস্যার কারণেই সমাজে উচ্ছৃঙ্খলতা বাড়ছে।নেশার বাড় বাড়ন্ত।যুব সমাজ নেশায় ডুবছে।ক্ষমতায় আসার এক বছরের মধ্যে পঞ্চাশ হাজার শূন্যপদ পূরণের প্রতিশ্রুতি ছিল।ছয় বছর হয়ে গেছে।সর্বশেষ পাঁচ বছরে কয়টা শূন্যপদ পূরণ করেছে সরকার? পাঁচ বছরে রাজ্যে কয়টা শিল্প এসেছে? বেকার সমস্যা নিরসনে সরকারের কী উদ্যোগ? কিছুই তো হয়নি।
কংগ্রেস বিধায়ক গোপাল রায় বলেন, ১০,৩২৩ চাকরিচ্যুত শিক্ষককে আপনারা স্থায়ী সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।কথা রেখেছেন আপনারা,এখন পর্যন্ত ১৭০জনকে স্থায়ী সমাধান করেছেন বটতলায়। মুখ্যমন্ত্রী ভালো মানুষ, কিন্তু প্রোডাক্টিভিটি কোথায়? রাজ্যে বেকার সমস্যা ও কর্মসংস্থান নিয়ে তিনি শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান। এ দিন আলোচনায় এছাড়াও অংশ নেন শাসক দলের বিধায়ক রঞ্জিত দাস, কিশোর বর্মণ, বিরোধী দলের বিধায়ক নয়ন সরকার প্রমুখ। পরে দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায় রাজ্যে কর্মসংস্থানের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিরোধীদের অভিযোগ খন্ডন করেন।