ক্ষমতাচ্যুতির আশঙ্কা থেকেই বিজেপির হামলা-হুজ্জতি: মানিক!!

 ক্ষমতাচ্যুতির আশঙ্কা থেকেই বিজেপির হামলা-হুজ্জতি: মানিক!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-সীতারাম
ইয়েচুরির অনুপস্থিতি আমাদের অনুভূত হবে।তবে হতাশ হলে চলবে না। এমনকী সময়ও নষ্ট করা যাবে না। মঙ্গলবার রাজধানীর রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের এক নং সভাগৃহে আয়োজিত প্রয়াত সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির স্মরণসভায় এমনটাই বললেন সিপিএমের দুই পলিটব্যুরো সদস্য প্রকাশ কারাত ও মানিক সরকার। তারা বলেন, এই মুহূর্তে দলের শক্তি বৃদ্ধিতে তরুণ প্রজন্মকে শামিল করতে হবে।শুধু তাই নয়, বামেদের সাথে ধর্মনিরপেক্ষ দলের ঐক্যকে সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যেও আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে।
স্মরণসভায় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য মানিক সরকার। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বিজেপি সরকার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বেকার, শিক্ষক-কর্মচারী, শ্রমিক, কৃষক, জুমিয়া সহ রাজ্যবাসীর বিরুদ্ধে একের পর এক জনবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়ে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।রাজ্যের
মানুষের প্রতি তাদের কোনও আস্থা নেই টিকে আছে রাজ্যের বিজেপি সরকার। আসলে সরকারটা নিখোঁজ? তাই এদের প্রতারণার বিরুদ্ধে বেকার,শিক্ষক-কর্মচারী সহ রাজ্যবাসী রাজপথে নেমে গিয়েছেন।যারা বিজেপির প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে ২০১৮ সালে বিভ্রান্ত হয়েছিলেন তারাও এখন আমাদের কাছে ফিরে আসছেন।তাই ক্ষমতাচ্যুতির আশঙ্কায় শাসকদল এখন রাজ্যের সংবাদপত্র, সাংবাদিক, সংবাদমাধ্যমের উপর পর্যন্ত হামলা চালাচ্ছে। বিরোধী দলের কর্মীদের উপর হামলা চালাচ্ছে। তাতেই প্রমাণিত রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার কোনও অস্তিত্ব নেই। জঙ্গলের শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়েছে। ক্ষমতার দম্ভে শাসক দল ভুলে গিয়েছে যে ক্ষমতা পরিবর্তনশীল।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন,রাজ্যে মা বোনদের সম্ভ্রমের ওপর প্রত্যেক দিন হামলা হচ্ছে। অবাক করার বিষয় হলো, সরকার প্রধান হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী ভয়ে একটি কথাও বলছেন না। এমনকী নিন্দা পর্যন্ত করেননি।তাই রাজ্যব্যাপী সমাজবিরোধীরা উৎসাহিত হচ্ছে।এটাই কি গণতন্ত্র?মুখ্যমন্ত্রী যে পদের অধিকারী সেখানে তাকেই এই বিষয়গুলো দেখতে হতো, তবে তিনি পারছেন না। কেন এটা হবে তা রাজ্যবাসীকে জানাতে হবে।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে টিকে থাকাটা চিরস্থায়ী ‘নয়। বিজেপি সরকার ও দুর্নীতি এখন সমার্থক, পয়সা ছাড়া কোনও কাজ হয় না।আমরা এসব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখবো?এসব হবে না। আমাদের এখন রাস্তায় নামতে হবে। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির উল্লেখ করে মানিক সরকার অভিযোগ করেন, থাকার ঘরের ব্যবস্থা না করে বন্যায় আক্রান্তদের জোর করে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে শিবির ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে।৮২ সালের পর এমন বন্যা ত্রিপুরার মানুষ দেখেনি। ৩৭ জন মানুষ মারা গেছেন, ১৯ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। সরকার কোথায়?সরকারের হাতে টাকা নেই, অথচ ৫৬৪ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন।প্রকাশ কারাত বলেন, দলের মতাদর্শগত কর্মসূচিগত ও রাজনৈতিক অবস্থানের পেছনে সীতারাম ইয়েচুরির ছিল অমূল্য অবদান। সীতারাম ফ্যাসিবাদী হিন্দুত্ব মহাদর্শের বিরুদ্ধে তীব্র মতাদর্শগত লড়াই করেছেন। ১৯৯২ সালে মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত চতুর্দশ পার্টি কংগ্রেসে সোভিয়েত পতনের পর ওই পরিস্থিতিতে পার্টির মতাদর্শগত অবস্থান কী হবে তারও রূপরেখা থেকে প্রস্তাব উত্থাপন, জবাবি ভাষণ, সহ উপসংহারে আসা সবটাই সীতারাম করেছিলেন। তিনি বলেন, সীতারাম ইয়েচুরি কমিউনিস্ট আন্দোলনের সামনে যেমন শিক্ষণীয়। পঞ্চাশ বছর যা শিখেছেন, বহুকিছু রেখে যেমন গেছেন, তেমনি অসম্পূর্ণ কাজ সমাপ্ত করার দায়িত্ব দিয়ে গেছেন আমাদের সকলকে।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন চৌধুরী বলেন, দেশের বর্তমান অবস্থায় মার্ক্সবাদ ও লেনিনবাদকে পাথেয় করে কীভাবে লড়াই করতে হবে-তা দেখিয়েছেন সীতারাম।তিনি বলেন, রাজ্যের বিজেপি সরকার সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ। মানুষের ক্ষোভকে বিক্ষোভে পরিণত করে এগিয়ে যাবার লক্ষ্যে সীতারামকে পাথেয় করে “সকলকে রাজপথে নামার তিনি আহ্বান জানান। সভায় সভাপতিত্ব করেন অঘোর দেববর্মা।সীতারাম ইয়েচুরির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন অন্যান্য রাজ্য নেতৃত্ব।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.