৭ বছরেও রেগার মজুরি হলো না ৩৪০!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-বিজেপির
ভিশন ডকুমেন্টে রেগার মজুরি ৩৪০ টাকা করার প্রতিশ্রুতি ও ঘোষণা কলাপাতায় পরিণত হয়েছে। বিজেপি ঘোষণা করেছিল ও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ক্ষমতায় এসেই রেগার মজুরি ৩৪০ টাকা করা হবে।বাস্তবে হলো উল্টো ফল।বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর সাত বছরে রেগার মজুরি ১৭২ টাকা থেকে বেড়ে হলো ২১২ টাকা! বিজেপি সরকারের রেগা শ্রমিকদের সঙ্গে এ ধরনের ভূমিকায় রাজ্যব্যাপী সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।ক্ষোভ ও অসন্তোষের বড় কারণ হলো সাত বছরেও রেগার মজুরি ৩৪০ টাকা তো হলোই না, উল্টো বছর বছর বিজেপি সরকার রেগার শ্রমদিবস কমিয়ে তলানিতে নিয়ে এসেছে।
এদিকে রেগার কাজ তেমন না থাকায় শারদ উৎসবের মুখে গ্রাম-পাহাড়ে দেখা দিয়েছে চরম আর্থিক সংকট।তেমনি অন্য কোনও সরকারী কাজও নেই।মানুষ আর্থিক সংকটে দিশাহারা। রেগার কাজও তেমন নেই। যেখানে বামফ্রন্টের সময়ে বছরে গড়ে ৯০-৯৫ দিন রেগার কাজ পেতেন মানুষ, এখন বছরে ৪০-৪৫ দিনও রেগার কাজ পাচ্ছেন না গ্রামের মানুষ।মাঝেমধ্যে রেগার কাজ ভাগ্যে জুটলেও পাচ্ছেন না পুরো মজুরি। চলতি বছরে বন্যায় গ্রাম-পাহাড়ের মানুষ সবশ্বান্ত হলেও তেমন সরকারী সাহায্যও ভাগ্যে জুটছে না মানুষের।মাঝেমধ্যে এক দুই দিন রেগার কাজ মিললেও মজুরি মিলছে না।মজুরির জন্য পঞ্চায়েত অফিস,ব্লক অফিস ঘেরাও করতে হচ্ছে। পথ অবরোধ পর্যন্ত করতে হচ্ছে।সবমিলিয়ে গোটা রাজ্যের গ্রামীণ গরিব মানুষ এক দুর্বিষহ আর্থিক যন্ত্রণার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। পরিস্থিতি এতটাই বেহাল যে গ্রামের গরিব মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা জানানোর লোক পর্যন্ত পাচ্ছেন না মানুষ।পঞ্চায়েতের প্রধান-উপপ্রধান থেকে মেম্বারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনও সমস্যার কথা জানিয়ে তার সুরাহা পাচ্ছেন না মানুষ।গ্রামবাসীর অভিযোগ,নিজেদের আর্থিক লাভালাভের কোনও বিষয় না থাকলে কোনও কাজেই মানুষ পঞ্চায়েত সদস্য থেকে প্রধান-উপপ্রধান কাউকেই কোনও কাজে পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে পঞ্চায়েত অধিকর্তা অফিসের তথ্যে দেখা গেছে চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ছয় মাস এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত রাজ্যে ব্লক ভিত্তিক রেগার কাজ হয়েছে গড়ে ১৫ থেকে ২৭ দিন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে রাজ্যের গ্রাম পাহাড়ের গরিব মানুষের রোজগারের সবচেয়ে বড় অবলম্বন ছিল রেগার কাজ। তখন মানুষ আর্থিকভাবে অনেকটাই সচ্ছল হয়ে উঠেছিলেন। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী বছরে রেগার কার্ড হোল্ডাররা বছরে রেগা কর্মচারীদের দাবি ও চাহিদা অনুযায়ী ন্যূনতম ১০০ দিনের কাজ পাওয়ার কথা থাকলেও রাজ্যে ২০১৮ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে তা দিন দিন কমতে কমতে তলানিতে এসে ঠেকেছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ২০১৮ সালে নির্বাচনের মুখে বিজেপি ভিশন ডকুমেন্টে রেগার কাজের মজুরি ৩৪০ টাকা করার ঘোষণা দিয়েছিল। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর সাত বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও বিজেপি সরকার তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করেনি। উল্টো রেগার কাজের দিনের সংখ্যা বছর বছর কমিয়ে দিয়ে গ্রামবাসীদের ভাতে মারার কাজ করছে। রেগার কার্ড হোল্ডারদের অভিযোগ বিজেপি সরকার গরিব গ্রামবাসীদের স্বার্থবিরোধী কাজ করে তাদের আর্থিকভাবে পঙ্গু করে দিয়েছে। রেগার কার্ড হোল্ডারদের অভিযোগ, নির্বাচনের মুখে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিজেপি নেতারা গরিব মানুষকে বিভ্রান্ত করতে নানা মনমোহনী প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে বিজেপি সরকার ধনী-শিল্পপতিদের স্বার্থে কাজ করে।
এদিকে পঞ্চায়েত অধিকর্তা অফিস এবং আর ডি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে বর্তমানে দপ্তরের কাজকর্মের প্রতি সরকারের তেমন কোনও নজরদারিও নেই। দপ্তরের কাজকর্ম নিয়েও কোনও পর্যালোচনা বৈঠক হচ্ছে না। প্রশাসনিক অচলাবস্থায় চলছে পঞ্চায়েত এবং আর ডি দপ্তর। সরকারের নজরদারি না থাকায় দপ্তরের সকল শ্রেণীর কর্মচারী থেকে আধিকারিকরা মর্জিমাফিক চলছেন। রুটিন ওয়ার্কের বাইরে কর্মচারী অফিসে কোনও কাজ করছেন না। অভিযোগ, রেগার কাজের শ্রমদিবস এবং মজুরি বাড়ানোর কোনও উদ্যোগ নেই সরকারের।