অবসর নিলেন অলিম্পিয়ান দীপা কর্মকার!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-অনেক চিন্তা করার পর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমি জিমনাস্টিকস থেকে অবসর নেব।তবে আমার পক্ষে এই কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়া কিন্তু মোটেই সহজ ছিল না কিন্তু আমি মনে করি যে এটাই আমার জন্য আদর্শ সময় ফ্লোর থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়া।আমার জীবনের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে এই জিমনাস্টিক্স।তবে আমি কিন্তু ফ্লোর থেকে একজন প্রতিযোগী হিসেবে সরে গেলেও জিমনাস্টিকস থেকে সরে যাচ্ছি না।বলতে পারেন দীপা কর্মকারের জিমনাস্টিক্স এ আজ থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হচ্ছে। আজ থেকেই আমি নিজেকে কোচিং এ সঁপে দিলাম।রাজ্য এবং গোটা দেশ থেকেই নতুন নতুন প্রতিভাবান জিমনাস্ট তুলে আনার জন্য আমার নতুন ইনিংস শুরু হলো বলতে পারেন।সোমবার দুপুরে হঠাৎ দীপা কর্মকারের ফোন পেয়ে প্রথমে খানিকটা অবাক হয়েছিলাম।ফোন ধরতেই দীপা বলল দুর্গাপুজোর চতুর্থীতে আমার জন্য ভালো এবং খারাপ খবর আছে।হঠাৎ করে এই কথায় খানিকটা হতচকিত হয়ে গিয়েছিলাম। পাল্টা প্রশ্ন করতেই দীপা জানালো তার অবসর গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত। বলতে দ্বিধা নেই যে দীপা কর্মকারের এই অবসর গ্রহণের সিদ্ধান্তে খানিকটা ধাক্কা লাগল।জিগ্যেস করলাম কেন এই সিদ্ধান্ত। দীপার সোজা সাপটা জবাব। দু’দুটি অপারেশন এবং আমি মনে করি যে একদিন না একদিন যখন থামতেই হবে তখন আজ নয় কেন।জানি আমার জন্য কঠিন ছিল এই সিদ্ধান্ত নেওয়া,তারপরও সিদ্ধান্ত নিলাম এবার আদর্শ সময় ফ্লোর থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়া।তবে এখন কোচিং এ নিজেকে সঁপে দিতে ফ্লোরে থাকবো।এই রাজ্যের ছেলে মেয়েদের পাশাপাশি ভারতীয় জুনিয়র জিমনাস্টি তৈরির কাজে আমাকে ডাকলে আমি হাজির হবো।২০০৭ সালে জলপাইগুড়িতে জাতীয় জুনিয়র জিমনাস্টিক্স আসরে দীপা কর্মকারে উত্থান শুরু।এরপর দীপা কর্মকারের কাঁধে ভর দিয়েই ভারতীয় মহিলা জিমনাস্টিক্স এগিয়ে গেছে।২০১৬ সালে রিও অলিম্পিক গেমসে প্রথম ভারতীয় মহিলা জিমনাস্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করেছিলেন দীপা কর্মকার। সেদিন দীপা কর্মকারের যখন তার প্রিয় ভল্ট ইভেন্টে অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া হয় তখন গোটা দেশের মানুষের চোখে জল দেখা গিয়েছিল।তবে দুর্ভাগ্য যে এরপর শরীরে বাধা সৃষ্টি করায় দীপা কর্মকার দ্বিতীয়বার আর অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায়নি।তবে রিও অলিম্পিক গেমস থেকে অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া হলেও দীপা কর্মকার কিন্তু দেশবাসীর মন জয় করে নিয়েছিলেন সেদিন।এরপর অর্জুন পুরস্কার, রাজীব গান্ধী খেলরত্ন পুরস্কার এবং পদ্মশ্রী পুরস্কার দীপা কর্মকারের হাতে উঠে।এবছর তাসখন্দ এ এশিয়ান জিমনাস্টিক্স এ দীপা কর্মকার তার জীবনের শেষ সোনা জিতে।তারপর আজ অবসরগ্রহণের সিদ্ধান্ত। দীপা দৈনিক সংবাদকে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে, তার জিমনাস্ট হয়ে উঠা থেকে শুরু করে আজকের দীপা হয়ে উঠার জন্য যারা সব সময় সময় পাশে ছিল এবং দেশের অগণিত মানুষের যে ভালোবাসা সে পেয়েছে তারজন্য সে চিরকৃতজ্ঞ থাকবে।দীপা সবার আশীর্বাদ চান যাতে তার দ্বিতীয় ইনিংসে ও সেই রাজ্য এবং দেশকে সাফল্য এনে দিতে পারেন।১৭ বছরের কেরিয়ারে দেশের মহিলা জিমনাস্ট এ একের পর এক রেকর্ড ধরা দিয়ছে দীপার র্যালিতে,জাতীয় এবং আর্ন্তজাতিক আসরে এখন পর্যন্ত দীপা কর্মকারই দেশের সেরা মহিলা জিমনাস্ট বলা চলে।