বিমান সংস্থার উদ্ভট নিয়মে স্ট্রেচারে রোগী নিতে বিপত্তি!!

 বিমান সংস্থার উদ্ভট নিয়মে স্ট্রেচারে রোগী নিতে বিপত্তি!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-আগরতলা থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্ট্রেচারে গুরুতর অসুস্থ ও মুমূর্ষু রোগীকে বিমানে কলকাতা বা অন্য জায়গায় নিতে সুবিধা কমে যাওয়ায় বিপত্তি দেখা দিয়েছে।বিমান সংস্থাগুলি স্ট্রেচারে রোগী নিতে উদ্ভট ও জটিল সব নিয়ম চালু করে রাখায় এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।তাতে এখন আর স্ট্রেচারে আগের মতো রোগী পাঠানো যাচ্ছে না।বিমান সংস্থাগুলির উদ্ভট ও জটিল নিয়মের কারণে বাধ্য হয়ে রোগীর আত্মীয় আগরতলা থেকে ট্রেনে বহিঃরাজ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্ট্রেচারে রোগী নিচ্ছেন। ট্রেনে আবার শীততাপ নিয়ন্ত্রিত সংরক্ষিত কামরায় স্ট্রেচারে রোগী নিতে গিয়ে তৎক্ষণাৎ টিকিট পেতেও সঙ্কটে পড়তে হচ্ছে।ট্রেনে গুয়াহাটি ও কলকাতায় যেতে ভিন্ন ক্যাটাগরির ট্রেন রয়েছে।আগরতলা থেকে গুয়াহাটি পৌছতে ন্যূনতম বারো- চৌদ্দ ঘন্টা লাগছে। কলকাতায় পৌঁছতে সময় লাগছে ন্যূনতম ৩৫-৩৬ ঘন্টার মতো।ট্রেনে স্ট্রেচারে গুরুতর অসুস্থ ও মুমূর্ষু রোগী নিতে সময় বেশি লাগায় অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।কারণ সময় লাগছে অনেকটা।আগরতলা থেকে গুয়াহাটির এইমস হাসপাতালে ও গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজে যেমন উন্নত চিকিৎসার জন্য ট্রেনে রোগী নেওয়া হচ্ছে, তেমনি কলকাতারও বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী নেওয়া হচ্ছে।ট্রেনে স্ট্রেচারে রোগী নিতে বিমানের মতো জটিল ও উদ্ভট নিয়ম নেই।তবে একটা সাধারণ গোছের নিয়ম রয়েছে ট্রেনে স্ট্রেচারে রোগী নিতে।বিমানের জটিল ও উদ্ভট নিয়মের কারণে বাধ্য হয়ে গত বেশ কয়েক মাস ধরে প্রায়দিনই স্ট্রেচারে আগরতলা থেকে রোগী যাচ্ছে।স্ট্রেচারে রোগীর সঙ্গে রোগীর আত্মীয় দু’তিনজনের পাশাপাশি একজন চিকিৎসককেও যেতে হয়। এদিকে,বিমানে আগে বিশেষ করে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে আগরতলা থেকে কলকাতা বা অন্য জায়গায় স্ট্রেচারে রোগী নিতে সুবিধা চালু থাকায় রোগী নিতে কোনও সমস্যায় পড়তে হতো না। এয়ার ইন্ডিয়া সবসময় স্ট্রেচারে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রোগী উড়িয়ে নিতো।তাতে রাজ্যের মানুষ ও রোগীর আত্মীয়রা স্ট্রেচারে এয়ার ইন্ডিয়াতে রোগী নিতে পারায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতো।কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এয়ার ইন্ডিয়াকে জনগণের আপত্তি সত্ত্বেও তাকে এড়িয়ে একতরফাভাবে বেসরকারী টাটা কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেয়।তারপর থেকে প্রাইভেট বাণিজ্যিক পলিসি নিয়ে পরিষেবা চালু করে এয়ার ইন্ডিয়া।তাতেই এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে স্ট্রেচারে রোগী নিতে আগের সুবিধা উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ন্যূনতম বাহাত্তর ঘন্টা আগে স্ট্রেচারে রোগী নিতে হলে এয়ার ইন্ডিয়াকে জানাতে হবে।তারপর এয়ার ইন্ডিয়ার দিল্লী অফিস থেকে সবুজ সংকেত মিললে পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু হয়।স্ট্রেচারের ভাড়াও খুব চড়া।শুধু রোগীর জন্য স্ট্রেচারের ভাড়া ১ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা।সঙ্গে একজন চিকিৎসক ও আত্মীয়স্বজনের ভাড়া আলাদা।সমস্যা রয়েছে আরও।তাহলো এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে স্ট্রেচারে রোগীর জন্য অক্সিজেন পাওয়া এখন দুষ্কর হয়ে পড়েছে।অক্সিজেনের সঙ্কটে বিমানে মুমূর্ষু রোগী নেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।যদিও আগামী এক ডিসেম্বর থেকে আগরতলা থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান পরিষেবা গুঁটিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বেসরকারী ইন্ডিগো ও এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের বিমানেও স্ট্রেচারে কলকাতা বা অন্য জায়গায় রোগী নিতে উদ্ভট উদ্ভট ও জটিল সব নিয়ম চালু করে রেখেছে।ইন্ডিগো ও এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের বিমানে স্ট্রেচারে রোগী নিতে অক্সিজেনও মিলছে না। স্ট্রেচারে ভাড়াও ভিন্ন ভিন্ন। চড়া ভাড়া। এই অবস্থায় বাধ্য হয়ে যাদের ভালো টাকা আছে বহিঃরাজ্য থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে আগরতলায় এনে কলকাতা বা অন্য জায়গায় স্ট্রেচারে রোগী নিচ্ছেন।এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে একজন রোগী নিতে ন্যূনতম ৯-১০ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়।স্ট্রেচারে উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগী নিতে বিমানে এত সব কঠিন ও জটিল ব্যবস্থা চালু করে রাখায় রাজ্য সরকারও কোনও টু শব্দ করছে না। রাজ্য সরকারকে বিমানের এইসব জটিল নিয়ম বাদ দিয়ে স্ট্রেচারে রোগী যাতে সহজ মাধ্যমে নেওয়া যায় সেই বিষয়ে বিমান সংস্থাগুলির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলার দাবি উঠেছে। ডবল ইঞ্জিন সরকারকে বিমানে স্ট্রেচারে রোগী নেওয়ার ক্ষেত্রে সহজ ও সরল নিয়ম ও ভাড়া কমানোর সব উদ্যোগ নিতে হবে বলে রোগীর আত্মীয়দের দাবি।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.