ইস্যু অনুপ্রবেশ!!

 ইস্যু অনুপ্রবেশ!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

বিহার ভেঙে ঝাড়খণ্ড হয়েছিল সেই ২০০০ সালে। তখন কেন্দ্রে বিজেপি সরকার।অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী।এর সঙ্গে আরও ২টি রাজ্য ভেঙে নয়া রাজ্য গঠিত হয়েছিল। এর একটি উত্তরপ্রদেশ ভেঙে উত্তরখণ্ড এবং মধ্যপ্রদেশ ভেঙে ছত্তিশগড়।দীর্ঘ দাবি আন্দোলনের ফসল এই রাজ্যগুলির গঠন।এরপর দেশের গঙ্গা,যমুনা দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গেছে। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার অবিস্মরণীয় নেতা শিবু সোরেন আজও জীবিত। তার পুত্র বর্তমানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।ঝাড়খণ্ড গঠন হবার পেছনে এই জেএমএমের আন্দোলন এক বিরাট ভূমিকা নিয়েছিল।ঝাড়খণ্ডে বর্তমানে জেএমএম পরিচালিত সরকার।সঙ্গে রয়েছে কংগ্রেস এবং বামেরা।সেই ঝাড়খণ্ডকে এবার টার্গেট করেছে বিজেপি বিধানসভা নির্বাচনে।আগামী ১৩ এবং ২০ নভেম্বর এই রাজ্যে বিধানসভা ভোট।ঝাড়খণ্ডে এ সময় ভোট হবার কথা ছিল না।কিন্তু মহারাষ্ট্রের ভোটের সাথে ঝাড়খণ্ডের ভোটকে এগিয়ে এনে বিজেপি তুখোড় চাল দিয়েছে।
ঝাড়খণ্ডের উত্তরে হচ্ছে বিহার,উত্তর পশ্চিমে উত্তরপ্রদেশ,পশ্চিমে ছত্তিশগড়,দক্ষিণে ওড়িশা এবং পূর্বে পশ্চিমবঙ্গ।অর্থাৎ এই রাজ্যের সাথে পড়শি দেশের কোনও সীমানা নেই। তবুও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী এ রাজ্যের ভোটে এবার অন্যতম প্রধান ইস্যু।আসামে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে বেজায় সরব সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এবার তাকে ঝাড়খণ্ডে বিজেপি দায়িত্ব দিয়েছে সে রাজ্যকে জেএমএমের কাছ থেকে ছিনিয়ে আনতে। তাই অন্তত বছরখানেক আগে থেকেই প্রায় ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করছেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা।তিনিই প্রথম রাজ্যে গিয়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও ঝাড়খণ্ডে ভোট প্রচারে গিয়ে সে রাজ্যের সরকারকে দায়ী করে গর্জন করেছেন।তার দাবি, ঝাড়খণ্ডের উপজাতিদের অধিকার ছিনিয়ে নিচ্ছে এই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা।এজন্যই রাজ্যের আর্থ সামাজিক অবস্থানও পাল্টে গেছে বলে কেন্দ্রের দাবি।সেজন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কড়া আইন আনার কথা বলেছেন। একই সাথে উপজাতিদের জমির অধিকার দেবার কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। একই সাথে বলেছেন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর বিষয়েও।
তবে বিজেপিকে যা ভাবাচ্ছ এবারের নির্বাচনে তা হলো বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ। ঝাড়খণ্ডের সাথে প্রতিবেশী বাংলাদেশের কোনও সীমান্ত না থাকলেও পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে এ রাজ্যে প্রচুর বাংলাদেশি নাগরিকের অনুপ্রবেশ ঘটছে। বিজেপি এটা বরাবরই দাবি করে আসছে।জেএমএম সরকার বরাবরই এটাকে ভোটব্যাঙ্ক হিসাবে ব্যবহার করে আসছে বলে বিজেপি দাবি করছে।সুতরাং এবারের ভোটে ঝাড়খণ্ডে যে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ অন্যতম একটি ইস্যু তা বলার অপেক্ষা রাখে না এবং এ নিয়ে সরকারকে চেপে ধরতে চাইছে বিজেপি। এজন্যই আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে বেজায় প্ল্যান করেই বিজেপি ঝাড়খণ্ডের পর্যবেক্ষক করে পাঠিয়েছে এবং হিমন্তও অনেক আগে থেকেই এটাকে ইস্যু করেছেন রাজ্যে এবং ভোটের মুখে বিজেপি এই ইস্যুকে উসকে দিয়েছে।
যদিও ঝাড়খণ্ডে বিজেপি এর আগেও বেশ কয়েকবার বাঁকাপথে সরকার ফেলার চেষ্টা করেছে কিন্তু সফল হয়নি।মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত
সোরেনকে পর্যন্ত জেলে যেতে হয়েছে।কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ দাখিল করতে পারেনি।ফলে তাকে জামিনে ছাড়তে হয়েছে।মাঝে চম্পাই সোরেনকেও দলে টেনে বিজেপি একটা চেষ্টা করেছিল।
কিন্তু সফল হয়নি।সব মিলিয়ে বলা যায়,বিজেপি ঝাড়খণ্ডকে ছিনিয়ে নিতে এবার চক্রব্যূহ রচনা করেছে যা ভেদ করে জেএমএম বের হতে পারবে কি না তা সময়ই বলবে।আপাতত ৮১ সদস্যক ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে সবার লক্ষ্য রয়েছে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.