মানুষকে মৃত্যুর ‘স্বাদ’ দিতে ‘কফিন ক্যাফে’ চালু জাপানে!!

 মানুষকে মৃত্যুর ‘স্বাদ’ দিতে ‘কফিন ক্যাফে’ চালু জাপানে!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে, চিরস্থির কবে নয়ে নীর, হায় রে জীবন-নদে। মাইকেল তবে মধুসুদনের এই অমোঘ কাব্য-পংক্তি পড়েননি এমন বাঙালির সংখ্যা কম। মৃত্যু জীবনের চরম সত্য, তবু আমরা ব্রা সকলে জীবনকেই আঁকড়ে ধরতে চাই। মৃত্যুর ‘স্বাদ’ কেমন, কোনও মানুষের পক্ষেই তা কি বলা সম্ভব? কিন্তু মৃত্যুর পর কফিনের চিরশয্যায় শায়িত হলে কেমন অভিজ্ঞতা হয়, জনগণকে সেই সেই ‘স্বাদ’ দিতে জাপানে চালু হয়েছে এক অভিনব ক্যাফে পরিষেবা। এই পরিষেবার নাম দেওয়া হয়েছে কফিন ক্যাফে। টাকা খরচ করলেই সেই ক্যাফেতে গিয়ে কিছুক্ষণ সময় কাটানো যারে কফিনের মধ্যে। এমন অভিনব পরিষেবা সম্পর্কে কফিন ক্যাফে-র তরফে জানানো হয়েছে, কফিনে শুয়ে জীবন ও মৃত্যু সম্পর্কে নিজেদের চিন্তাভাবনা ঝালিয়ে নিতে পারবেন জীবিত ব্যক্তিরা। কফিন ক্যাফেটি খোলা হয়েছে জাপানের চিবা অঞ্চলের ফুৎসু শহরে। কফিন ক্যাফের মালিক সংস্থাটির নাম কাজিয়া হন্টেন। ১৯০২ সাল থেকে, অর্থাৎ গত ১২২ বছর ধরে জাপানে শেষকৃত্য-সংক্রান্ত পরিষেবা দিচ্ছে এই সংস্থা। এই সংস্থার ‘ফিউনেরাল মি হোম’ জাপানের অন্যতম প্রাচীন। কে মাস দুয়েক আগে সেই সংস্থার এক কর্তার মাথায় কফিন ক্যাফে চালু করার পরিকল্পনা আসে। তাদের যে ভবনে (ফিউনেরাল হোম) মৃতদের শেষকৃতা-সংক্রান্ত পরিষেবা দেওয়া- হয়, সেটিরই দ্বিতীয় তলায় সম্প্রতি খোলা হয়েছে এই ক্যাফে। কফিনে শুয়ে থাকার অভিজ্ঞতা পেতে খরচ করতে হবে ২২০০ জাপানি ইয়েন (১৪ মার্কিন ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় ১১৮২ টাকা)। সোনালি, সবুজ ও হলুদ-তিন রঙের মোট তিনটি কফিন ক্যাফেতে রাখা হয়েছে। প্রতিটি কফিনই সাজানো ফুলসহ বিভিন্ন নকশায়। সেগুলি আরামদায়কও বটে। এরই মধ্যে অনেকেরই নজর কেড়েছে এই কফিন ক্যাফে। এমনকি অনেক প্রেমিক- প্রেমিকাকেও কফিনে শুয়ে সেলফি নিতে দেখা গেছে। চিনা দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট এই কফিন ক্যাফে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, কফিন ক্যাফে চালু করার ভাবনাটি কাজিয়া হন্টেন সংস্থার ৪৮ বছর বয়সি প্রেসিডেন্ট কিয়োতাকা হিরানোর রাল মস্তিষ্কপ্রসূত। কিয়োতাকা বলেন, বেশির ভাগ তরুণ-তরুণী বিয়ে, কেরিয়ার ইত্যাদি সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করেন। খুব সামান্য তরুণ-তরুণীকে মৃত্যু সম্পর্কে ভাবতে দেখা যায়। চীন। কফিন থেকে বের হওয়ার পর পুনর্জন্মের মতো অনুভূতি পেতে পারেন তারা। এ থেকে নতুন করে জীবন শুরু করার অনুপ্রেরণা পেতে পারেন। কফিন ক্যাফে নিয়ে সবিস্তারে একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে জাপানের সংবাদপত্র ‘দ্য নিক্কেই’। সমাজমাধ্যমেও সাড়া ফেলেছে এই খবর। পরিষেবা সম্পর্কে কিয়োতাকা বলেন, ‘নামকরণে ক্যাফে শব্দটা থাকলেও কফিনে শুয়ে কফি খাওয়ার মতো কোনও বিনোদন নেই আমাদের।’

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.