ভুঁইফোড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ৫ কোটি বরাদ্দ, উঠল প্রশ্ন!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের
এক ভুঁইফোড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আবারও প্রায় ৫ কোটি টাকার উপর বরাত দিল উপজাতি কল্যাণ দপ্তর। তবে কোন্ যোগ্যতার মূলে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে গত সাত বছর ধরে একের পর এক বরাত দিচ্ছে দপ্তর।এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও উপজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রীকে ঘুমে রেখে এভাবে গত ৭ বছরে প্রায় ৫০ কোটি টাকার অর্থ নয়ছয় হয়েছে উপজাতি কল্যাণ দপ্তরে। আর এই দুর্নীতির সাথে উপজাতি কল্যাণ দপ্তরে একাংশ অফিসার জড়িত রয়েছেন।তবে এই ভাবে ভুঁইফোড় সংস্থাকে কোটি টাকার বরাত দিলেও এর কোন সুফল রাজ্যের উপজাতি ছাত্রছাত্রীরা পাচ্ছেন না।উল্টো কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ উপজাতি কল্যাণের নামে লুটপাট চলছে।
এদিকে উপজাতি কল্যাণ দপ্তরের রাজ্যের উপজাতি ছাত্রছাত্রীদের সাথে এই অবহেলার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন তিপ্রা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ।তিনি জানান একজন কেও ছাড়া হবে না।উপযুক্ত পদক্ষেপের তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
আর এই কেলেঙ্কারির দৌলতে রাজ্যের প্রায় ১ লক্ষ উপজাতি ছাত্র ছাত্রী বিপাকে পড়েছেন।অবাক করার বিষয় রাজ্যের উপজাতি দরদের নামে শাসকদল থেকে বিরোধী দল মাঠে।
ময়দানে প্রায় প্রত্যেকদিন প্রচারে ব্যস্ত।তবে একবার ভোট পার হয়ে গেলে আর উপজাতি ছাত্রছাত্রীদের কীভাবে ঠকানো হচ্ছে এ নিয়ে বিরোধী শাসক সব রাজনৈতিক দল কুম্ভনিদ্রায় আচ্ছন্ন।ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।
মহাকরণ সূত্রে খবর,সম্প্রতি রাজ্যের উপজাতি কল্যাণ দপ্তর তরফে রাজ্য সরকারের ১০০টি উপজাতি ছাত্রাবাসের পঠন-পাঠনের মান উন্নয়নের জন্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়।এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। তবে বর্তমান এই প্রকাশিত দরপত্র মূলে বরাত পাওয়া রাজধানীর মেলারমাঠে সংলগ্ন ‘ইনস্টিটিউট’- কেরিয়ার’ অ্যাডভান্সমেন্ট’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ্যে আসতেই মহাকরণজুড়ে আলোরণ সৃষ্টি হয়েছে।উপজাতি কল্যাণ দপ্তরের এই বরাতের মূল্য হলো ৪ কোটি ৪৫ লক্ষ ৪২ টাকা।এই দরপত্র মোতাবেক উল্লেখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রাজ্য সরকারের ১০০ টি উপজাতি হস্টেলের ছাত্রছাত্রীদের অনলাইন প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে। প্রথম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের এই প্রশিক্ষণ প্রদান হবে।
মহাকরণ সূত্রে খবর, যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এর জন্য বরাত প্রদান হলো-উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই কাজের কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। নেই কোন সফলতার রিপোর্ট। এমনকী এই সংস্থার ছাত্রছাত্রীরা কবে থেকে পঠন-পাঠন করেছেন তাও কারোর জানা নেই। শুধু তাই নয়,এ ধরনের চাকরির প্রতিযোগিতা মূলক সংস্থাকে কোনপথে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করবে?এমনকী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কীভাবে উপজাতি হস্টেলে স্মার্টটিভি এইচ ডি ক্যামেরা, মাইক্রোফান, ব্যাটারি, কম্পিউটার, মাউস, কি-বোর্ড, ইউপিএস, হোয়াইট বোর্ড, মার্কার, ইনক প্রদান করবে। কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়া। এনিয়ে তোলপাড় রাজ্য মহাকরণ। শুধু তাই নয়, কোন ক্ষমতা বলে একটি চাকরির প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, টেকনিকেল বিট, এবং ফিনান্সসিয়াল বিটে উত্তীর্ণ হলো? এ নিয়ে তদন্ত চলছে মহাকরণে। এমনকী সম্প্রতি দপ্তরের অধিকর্তা পর্যন্ত পরিবর্তন হয়েছে। অভিযোগ এভাবেই উপজাতি ছাত্রছাত্রীদের নামে উপজাতি কল্যাণ দপ্তরে লুট বাণিজ্য চলছে। আর রাজ্যের এক লক্ষ ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
মহাকরণ সূত্রে খবর, দপ্তরের সেন বাবু’ নামে এক আধিকারিক চিহ্নিত করা হয়েছে। গত ৭ বছরের ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণের নামে কীভাবে ঠকানো হয়েছে। এমনকী কোন পথে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ছাত্রদের খাতে ব্যয় হলো? এ নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গড়া হচ্ছে বলে জানান মহাকরণের এক প্রধান সচিব।
অভিযোগ উপজাতি কল্যাণ দপ্তরের উদাসীনতার জন্যে রাজ্যের লক্ষাধিক উপজাতি যুবক-যুবতী চাকরি পাচ্ছে না। এই সংস্থাকে সম্পূর্ণ বাঁকা পথে প্রত্যেক বছর টিপিএসসি, টিসিএস, টিআরবিটি, জেআরবিটি নিয়োগের পর্যন্ত বরাত প্রদান হচ্ছে। এখন তদন্ত হবে।