হোটেল হতে দেব না: প্রদ্যোত!!

 হোটেল হতে দেব না: প্রদ্যোত!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-পুষ্পবন্ত প্যালেসে পাঁচতারা হোটেল নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না।রাজ্য সরকারকে এই জনবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতেই হবে।রাজ্যবাসীকে একপ্রকার ঘুরে রেখে পুষ্পবন্ত প্যালেসে পাঁচতারা হোটেল নির্মাণের জন্য চুক্তি পর্যন্ত করে নিলো রাজ্য সরকার।যা ঠিক হয়নি। এই অভিযোগে বুধবার রাজধানী আগরতলায় বিক্ষোভ মিছিল করলেন তিপ্রা মথার ছাত্র যুবরা।শুধু তাই নয়, এদিন পশ্চিম ত্রিপুরার জেলাশাসককে সাতদিনের সময়ও বেঁধে দিলেন তারা।
বুধবার তিপ্রা মথার ছাত্র যুবাদের বিক্ষোভ মিছিল রাজধানীর রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন চত্বর থেকে শুরু হয়।এরপর শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে পশ্চিম জেলাশাসকের অফিসে ডেপুটেশন পেশের মাধ্যমে সমাপ্ত হল।ওয়াই টি এফের যুব নেতৃত্ব সাংবাদিকদের জানান এভাবে রাজন্য আমলের স্মৃতিকে আর ত্রিপুরায় ধ্বংস করার সুযোগ দেওয়া হবে না। রাজ্যের জাতি-উপজাতি মানুষের আবেগ নিয়ে খেলা ঠিক নয়। আগে যা হয়েছে। তা এখন আর আমরা হতে দেব না।প্রয়োজনে প্রত্যেকদিন রাজ্যব্যাপী প্রতিবাদ আন্দোলন হবে।
এদিকে রাজধানীর সার্কিট হাউসের পুষ্পবন্ত প্যালেসে (পুরাতন রাজভবন)পাঁচতারা হোটেল নির্মাণের সিদ্ধান্তের আজও তীব্র বিরোধিতা করলেন তিপ্রা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ। তিনি বলেন,১৯৪৯ সালে রাজমাতা কাঞ্চনপ্রভা দেবী পুরাতন রাজভবনটি বিনামূল্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে দিয়েছিলেন। শুধুমাত্র রাজ্যপাল যাতে পুষ্পবন্ত প্যালেসে থাকতে পারেন।এখন রাজ্য সরকার যে সিদ্ধান্ত নিলো, তা অপ্রত্যাশিত।রাজ্যের জাতি-উপজাতি মানুষের স্বার্থে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ বলেন,২০১৮ সালে বিজেপি-আইপিএফটি সরকার ক্ষমতায় আসার পর পুষ্পবন্ত প্যালেসে মহারাজাদের ইতিহাস সংরক্ষিত রাখার জন্যে পাবলিক লাইব্রেরি নির্মাণের ঘোষণা হয়।এমনকী ২০২২ সালের চৌদ্দ অক্টোবর পুষ্পবন্ত প্রাসাদে ত্রিপুরার প্রথম ডিজিটাল জাদুঘরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।এর জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ মঞ্জুরও করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। যা এখন পর্যন্ত কার্যকর হল না। উল্টো পুরাতন রাজভবনে পাঁচতারা হোটেল নির্মাণে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলো রাজ্য সরকার।
তিনি বলেন,শুধুমাত্র অর্থ এবং ব্যবসার জন্য রাজন্য ঐতিহ্যকে ধ্বংসের সিদ্ধান্ত মোটেও ঠিক হলো না। বর্তমানে সারা রাজ্য সহ রাজধানী আগরতলায় মহারাজাদের নামে ইতিহাস বিজড়িত কোনও কিছু অবশিষ্ট নেই। আর যা কিছু ইতিহাস বেঁচে আছে, এও ব্যবসার জন্য আমাদের সাথে কথা না বলে শেষ করে দিতে ব্যস্ত রাজ্য সরকার।প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ বলেন, রাজ্য সরকারকে এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।না হলে আমরা রাস্তায় নামবো এবং – বিক্ষোভও হবে।
তিনি বলেন,১৯১৭ সালে মহারাজা বীরেন্দ্র কিশোর মাণিক্য দ্বারা নির্মিত এই প্রাসাদটি এই রাজ্যের বহু উজ্জ্বল ঐতিহ্যের সাক্ষী। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাতবারের ত্রিপুরা ভ্রমণে ১৯২৬ সালে শেষবার যখন ত্রিপুরায় এসেছিলেন তখন তাঁর আস্তানা হয়ে উঠেছিলো এই পুষ্পবন্ত প্রাসাদ।১৯৪১ সালে মে মাসে মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্য এই প্রাসাদেই এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮০তম জন্মদিন পালন করেছিলেন।এই সব ইতিহাস মুছে দিতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে রাজ্য সরকার। তা আমরা মানব না।
তিনি বলেন,রাজ্যের পর্যটনের উন্নয়ন হোক। রাজ্যের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের আমরা বিরোধিতা করছি না। তবে পুষ্পবন্ত প্যালেসে পাঁচতারা হোটেল নির্মাণ করা যাবে না। রাজ্যের অন্য জায়গায় হোটেল নির্মাণ হোক। রাজ্য সরকারকে জায়গা প্রয়োজনে আমি দেবো। তবে রাজন্য আমলের ইতিহাসকে আর রাজ্যে ধ্বংস করতে দেওয়া হবে না। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি রাজ্যবাসীকে রাজপথে নামার আহ্বান জানান।
এদিকে এক সাংবাদিক সম্মেলনেও রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানান তিপ্রা মথার ছাত্র যুবরা।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.