এয়ার ইন্ডিয়া গুটিয়ে নেওয়া হচ্ছে ১ ডিসেম্বর!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের বিমান যাত্রীদের বিমানে বহিঃরাজ্যে যাতায়াতে অস্বাভাবিক বিমান ভাড়ায় দুর্ভোগের শেষ নেই। গলাকাটা জুলুম ভাড়ায় কোনও রাশ টানা হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সরকার বিমান সংস্থাগুলিকে আগরতলা সেক্টরে রাজ্যের অসহায় বিমান যাত্রীদের কাছ থেকে গলাকাটা ভাড়া আদায় করে নেওয়ার অলিখিত সার্টিফিকেট দিয়ে দিয়েছেন এমনটাই অভিযোগ রাজ্যের বিমান যাত্রীদের। তা না হলে আগরতলা- কলকাতা আকাশপথে মাত্র ৩২৭ কিলোমিটার দূরত্বের পথে কীভাবে দিনের পর দিন লাগামছাড়া অস্বাভাবিক ভাড়া ধার্য করে নিচ্ছে বহুদিন ধরে সেই প্রশ্ন তুলছেন ক্ষুব্ধ রাজ্যবাসী।বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, দেশের কোনও আকাশপথে আগরতলা- কলকাতার মতো এতো স্বল্প দূরত্বের পথে ও এতো স্বল্প সময়ের বিমান জার্নিতে এমনভাবে যাত্রীর গলাকাটা আকাশছোঁয়া ভাড়া নেওয়ার কোনও নজির নেই।অথচ বিমানসংস্থাগুলি কেন্দ্রীয় সরকারের নীরবতা ও উদাসীনতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে যত পারছে অসহায় যাত্রীর গলায় কোপ বসিয়ে বিমান ভাড়া তথা টিকিটের মূল্য নিচ্ছে – এই অভিযোগ সব সময়ই করছেন রাজ্যের বিমানযাত্রীরা। কেন্দ্রীয় সরকার তথা তার অধীনস্থ কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রক দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিমান পরিষেবা চালু বা উড়ার লাইসেন্স দেয়।দেশে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে ও গাইডলাইনেই বিমান পরিষেবা থাকছে যুগ যুগ ধরে এই ব্যবস্থা বলবৎ রয়েছে। তা দেশের মানুষ জানেন। তাই বিমান সংস্থাগুলি বিমান ভাড়া ও অন্যান্য পরিষেবায় যাত্রীর গলাকাটা ভাড়া বা যাত্রী ঠকানোর মতো এমন সাহস দেখাতো না। যাত্রীরাও নাগালের মধ্যে ভাড়ায় বিমান টিকিট নিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বিমানে যাতায়াত করতেন।বিস্ময়কর হলো বিজেপির নেতৃত্বাধীন দিল্লীতে কেন্দ্রীয় সরকার শাসন ক্ষমতায় আসার পর ক্রমেই রহস্যজনকভাবে বিমানযাত্রীর স্বার্থ উপেক্ষা করে ও স্বার্থ না দেখে বেসরকারী বিমান সংস্থাগুলির নিয়ন্ত্রণের দায়ভার ছেড়ে দিতে শুরু করে। কর্পোরেট বিমান সংস্থাগুলিকে ভাড়া কী নেওয়া হবে অলিখিতভাবে বিমান সংস্থার উপরই দায়িত্ব দিয়ে দেয় এমনটাই জানিয়েছে বিমানসংস্থার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই।আর সেই কারণেই বিমান সংস্থাগুলিকে কেন্দ্রীয় সরকার যাত্রীর স্বার্থ উপেক্ষা করে বিমান পরিষেবায় যথেচ্ছ মুনাফা লাভের জন্য যাত্রীর পকেট ফাঁকা করে মর্জিমাফিক লাগামছাড়া ভাড়া নিলেও সরকার নীরবতা পালন করে চলেছে বলে ক্ষুব্ধ যাত্রীদের অভিযোগ। আর তাতেই গত কয়েক বছর ধরে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আগরতলা সেক্টরে সামান্য ভিড় দেখা দিলেই বিমান সংস্থাগুলি ভাড়া তথা টিকিটের মূল্য আকাশছোঁয়ায় নিয়ে যাচ্ছে। আর সেই কারণেই রাজ্যের ডবল ইঞ্জিন সরকার ও বিমানসংস্থাগুলি যাত্রীর গলাকাটা ভাড়া নিলেও তার প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছে না বলেও অভিযোগ। বিমান ভাড়া অতিরিক্ত নিলেও গা হেলিয়ে দিয়ে রাজ্য সরকারের ভূমিকা হলো কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের হাতে তার কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই তা বলে দেওয়া। গত কয়েকদিন আগে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য সরকারের তরফে সেই বিষয়টি বিস্ময়করভাবেই প্রচারে তুলে ধরা হয়। তাতে রাজ্যের বিমান যাত্রীরাও হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গলাকাটা, মর্জিমাফিক ভাড়া নিলেও জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারের ভূমিকা কী তাই হওয়া উচিত। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার গত আড়াই বছর আগে অনেক আপত্তি উপেক্ষা করে সরকারী সংস্থার বিমান এয়ার ইন্ডিয়াকেও কর্পোরেট সংস্থা টাটার কাছে বিক্রি করে দেয়। গত ৬৪ বছর ধরে এয়ার ইন্ডিয়া আগরতলা সেক্টরে বিমান পরিষেবা দিয়ে আসলেও এখন টাটা কোম্পানি এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান আগরতলা সেক্টর থেকে পুরোপুরি গুঁটিয়ে নিচ্ছে। আগামী এক ডিসেম্বর থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার ১৮৬ আসনের এয়ারবাসটি আগরতলা-কলকাতা রুটের উভয় দিক থেকে গুটিয়ে নিচ্ছে। দুমাস আগে এই রুট থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার অপর এয়ারবাসটি টাটা কোম্পানি গুটিয়ে নেয়। ফলে রাজ্যের আকাশে এয়ার ইন্ডিয়ার শেষ উড়ান ত্রিশ নভেম্বর পর্যন্ত। এদিকে এয়ার ইন্ডিয়ার বদলে একই মালিকানাধীন টাটা গ্রুপের বিমান এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস চালু হলেও ভাড়া সেই অস্বাভাবিক।আগামী এক ডিসেম্বর আগরতলা থেকে কলকাতায় যাওয়ার এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ভাড়া হলো ১০, ১৮৫ টাকা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যারা টিকিট নিয়েছেন তারা এই ভাড়া দিয়ে টিকিট নিয়েছেন। আগামী দুদিনে এই বিমানের আরও ভাড়া বাড়ানো হবে বলেও জানা গেছে।এক ডিসেম্বর ইন্ডিগোর সকাল ৮টা ২৫ মিনিটের কলকাতাগামী বিমানের ভাড়াও আরও চড়া,টিকিটের মূল্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নেওয়া হয়েছে ১১,৭১১ টাকা। আগামী দুদিনে এই বিমানের ভাড়া আরও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।