সহকারী হাইকমিশনারকে রুটিন কাজে ডেকে নিয়েছে ঢাকা!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ জানতে সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদকে ঢাকায় ডেকে আনা হয়েছে।কিন্তু তাকে আগরতলা থেকে প্রত্যাহার করা হয়নি।ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।একইভাবে কলকাতার উপ- হাইকমিশনার শিকদার মো. আশরাফুর রহমানকে ডেকে আনা হয়েছে।গত মঙ্গলবার তাদের দুজনকে ঢাকায় এসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।তারা দুজনই ইতিমধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছেন। বৃহস্পতিবার ঢাকায় পৌঁছে কলকাতার উপ-হাইকমিশনার শিকদার মো. আশরাফুর রহমান বিকেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে দেখা করে কলকাতা হাইকমিশনের সামনে স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ জানিয়েছেন।আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদকে বৃহস্পতিবার শেষ বিকেলে ঢাকায় পৌঁছেছেন।ঢাকায় পৌঁছতে দেরি হওয়ার কারণে তিনি পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেননি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে আগামী রবিবার তিনি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে দেখা করে আগরতলা সহকারী হাইকমিশনে একদল লোকের বিক্ষোভ এবং হাইকমিশনের ভাংচুর সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরবেন।
ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কূটনীতিক এই সংবাদদাতাকে জানান, আগরতলা এবং কলকাতার সহকারী হাইকমিশনারদের সেখান থেকে প্রত্যাহার করা হয়নি।ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় অফিসিয়াল কাজকর্ম সম্পাদন করে আবার আগরতলা ও কলকাতায় ফিরে যাবেন।সংশ্লিষ্ট কূটনীতিক জানান,বিদেশে কোনও হাইকমিশনে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর বা ইতিবাচক ঘটনা ঘটলে সে সম্পর্কে প্রধান কার্যালয়কে অবহিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট হাইকমিশনের প্রধান কর্মকর্তাকে ঢাকায় ডেকে আনা হয়।এটা একটি রুটিন ওয়ার্ক।ডেকে আনা মানে কূটনীতিক প্রত্যাহার করা নয়।
ঢাকায় কূটনৈতিক সূত্র জানায়, আগরতলা ও কলকাতায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে ভারতীয় নাগরিকদের হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। বাংলাদেশ চায় এ ব্যাপারে ভারত সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে এবং বাংলাদেশের হাইকমিশনগুলোর যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।কূটনীতি ক্ষেত্রে স্বাক্ষরিত ভিয়েনা কনভেনশনের নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক দেশ তার দেশে অবস্থিত অন্য দেশের দূতাবাসগুলো প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেবে।
এদিকে আগরতলা ও কলকাতায় সহকারী হাইকমিশনের হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হলেও ঢাকা চায় না এ নিয়ে দুদেশের সম্পর্কে কোনও ফাটল সৃষ্টি হোক। এটা হলে দুই দেশেরই ক্ষতি হবে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে সোমবার ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সংঘর্ষ সমিতিসহ কয়েকটি সংগঠনের সমর্থকরা আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা চালায়। তারা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করে এবং মিশন প্রাঙ্গণে ভাংচুর করে। এ হামলার এক দিন পর নিরাপত্তাহীনতার কারণে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সেখানকার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। এদিকে ভারতীয়দের জন্য ভিসা সীমিত করেছে – বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার গোপন এক দাপ্তরিক চিঠির মাধ্যমে কলকাতা ডেপুটি হাইকমিশনকে ভারতীয়দের ঢালাওভাবে ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে এখনও কিছুই জানানো হয়নি। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) থেকে সেই নির্দেশ কার্যকর শুরু করেছে কলকাতা হাইকমিশন। মিশন সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে ভিসা দেওয়া কমানোর নির্দেশ গেছে কলকাতায়। শুক্রবার থেকেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে। তবে দিল্লী বা আসাম মিশনের ক্ষেত্রে এমন কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। আগরতলায় বন্ধই রয়েছে ডেপুটি হাইকমিশনের দপ্তর।