পাতালকে নিয়ে টিআরপিসিতে ব্যাপক অচলাবস্থা কায়েম, ক্ষোভ!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যে একটা আজব সরকার ক্ষমতায় বসে রয়েছে।এই কথাটা ত্রিপুরা রিহ্যাবিলিটেশন প্ল্যান্টেশন কর্পোরেশনের (টিআরপিসি) শ্রমিক,কর্মচারী অফিসারদের মুখে মুখে তা প্রকাশ পাচ্ছে। তবে আজব সরকার বলার সঙ্গত কারণও রয়েছে। পাতাল কন্যা জমাতিয়াকে নিয়ে রাজ্য সরকারের দ্বিমুখী মনোভাবকে কেন্দ্র করে শুধু টিআরপিসিতেই নয়,খোদ বিজেপি দলেও সমালোচনার ঝড় বইছে।বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ব্যঙ্গ করে বলছে পাতালকন্যা জমাতিয়াকে বিজেপির প্রদেশ সহ- সভাপতি পদ ও বিজেপি দল থেকে বহিষ্কার করলেও টিআরপিসির চেয়ারম্যান পদ থেকে হঠানোর সাহস নেই। বিজেপির প্রদেশ সহ সভাপতি ও বিজেপি দলে থাকায় সরকার ২০২৩ সালের কুড়ি মার্চ টিআরপিসির চেয়ারম্যান করে পাতাল কন্যা জমাতিয়াকে।কিন্তু তারপর পাতাল কন্যা জমাতিয়া বিজেপিতে থাকা সত্ত্বেও নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন।গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে আগরতলায় প্রকাশ্য সভায় উপস্থিত থেকে শ্রীমতী জমাতিয়া ত্রিপুরা পিপলস সোশ্যালিস্ট পার্টি গঠন করেন।বিজেপি দলে থেকেই অপর একটি রাজনৈতিক দল গঠন করায় রাজ্য বিজেপি দল থেকে ও দলের সহ-সভাপতি পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করেছে গত এক অক্টোবর।স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি দল থেকে তাকে বহিষ্কার করায় টিআরপিসির চেয়ারম্যান পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়ার কথা।কারণ যখন যে দলের পরিচালিত রাজ্য সরকার ক্ষমতায় থাকে সরকার নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন কর্পোরেশন সংস্থার চেয়ারম্যানও করা হয় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের বিধায়ক ও নেতা-নেত্রীদেরই। সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ পরিচালনার সুবিধার জন্যই বিভিন্ন কর্পোরেশন ও সংস্থার চেয়ারম্যান পদে শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের রাখা হলেও রহস্যজনকভাবেই শুধু ব্যতিক্রম টিআরপিসি। তাজ্জব ব্যাপার হলো,গত এক অক্টোবর পাতালকন্যা জমাতিয়াকে বিজেপি দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও
তিনি টিআরপিসির চেয়ারম্যান পদে এখনও – বহাল রয়েছেন। বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক দল গঠন করার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে দল ও পদ থেকে বহিষ্কার করার পর আড়াই মাস অতিক্রান্ত হলেও টিআরপিসির – চেয়ারম্যান পদ থেকে এখনও না সরানোয় টিআরপিসি সহ খোদ বিজেপি দলেই প্রচণ্ড ক্ষোভ ও বিস্ময় দেখা দিয়েছে।কারণ দল থেকে বহিষ্কৃত পাতালকন্যা জমাতিয়াকে টিআরপিসির চেয়ারম্যান পদে রেখে দেওয়ায় টিআরপিসির প্রশাসনিক ও উন্নয়নমূলক কাজকর্ম লাটে উঠেছে বলে অভিযোগ। তাছাড়া বহিষ্কৃত পাতালকন্যা জমাতিয়া টিআরপিসির প্রশাসনিক কাজেও ব্যাপক অচলাবস্থা সৃষ্টি করছে বলেও টিআরপিসি সূত্রে খবর। তিনি অফিসারদের হুমকি ও ধমক দিয়ে নিজের মর্জিমাফিক সব কাজ করাচ্ছেন বলেও তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। বহিষ্কৃত শ্রীমতী জমাতিয়াকে টিআরপিসির চেয়ারম্যান পদে এখনও রেখে দেওয়ায় রাজ্য সরকার ও বিজেপি দলের মুখ পুড়ছে বলেও অনেকে প্রকাশ্যে বলছেন। চেয়ারম্যান পদে থেকে টিআরপিসির কোটি কোটি টাকার রাবার চারা বিনা টেন্ডারে ক্রয় করছেন। এ নিয়ে বিস্তর দুর্নীতি, অভিযোগ রয়েছে। তাতে টিআরপিসির আর্থিক দিকে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তার পছন্দের লোককে আর্থিক সুবিধা পাইয়ে দিতে বিনা টেন্ডারে শুধু কোটি কোটি টাকার রাবার চারা ক্রয়ই নয়, নানা কাজে ব্যাপক অনিয়ম বেনিয়মের অভিযোগও উঠেছে। চেয়ারম্যান হওয়ার সুবাদে তিনি কোনও চাকরির বিজ্ঞাপন না দিয়ে ছাব্বিশজন কর্মচারীও নিয়োগ করেছেন। এক্ষেত্রে অর্থ দপ্তরেরও। কোনও অনুমতি নেননি। চেয়ারম্যানের টিআরপিসি বিরোধী কাজের প্রতিবাদ করায় এক অর্ডারে আটাশজন কর্মচারীকে বদলি করা হয়েছে। তবে আটাশজন কর্মচারীর মধ্যে ষোলজন কর্মচারী বিজেপি দলের সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত থাকায় তাদের দূর দূরান্তে বদলি করা হয়েছে। বাকি বারোজন কর্মচারী সিপিএম দলের সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত থাকলেও তাদের বদলি করে বাড়ির কাছাকাছি নিয়ে আসা হয়। এছাড়াও চেয়ারম্যানের নির্দেশে আরও বহু অনিয়ম বেনিয়মের কাজ চলছে বলেও অভিযোগ।অন্য দল করায় বিজেপি থেকে বহিষ্কৃত লোক কীভাবে চেয়ারম্যান পদে এখনও বহাল রয়েছে সেই বিষয়ে রাজ্য সরকারের নিষ্ক্রিয় ও নির্বিকার ভূমিকা নিয়েও বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।তাতে বিজেপি দলেও ক্ষোভ-বিক্ষোভ বাড়ছে।