শেখ হাসিনা ও পরিবারের নামে জমি বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের পাঁচ সদস্যের নামে ইউনুস সরকার প্রতিনিয়ত অনিয়ম
ও দুর্নীতি খুঁজে বেড়াচ্ছে। কোনও অনিয়ম খুঁজে না পেলেও বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের দিয়ে অভিযোগ তোলা হচ্ছে অনিয়মের। এমনই কোনও কারণ ছাড়াই ঢাকায় নতুন শহর প্রকল্পে ছয়টি প্লট বরাদ্দ দেওয়ায় চরম অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ইউনুস সরকারের দুর্নীতি দমন কমিশন। এ অভিযোগ তুলেই অনুসন্ধানে নামছে দুর্নীতি দমন কমিশন, দুদক। দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সংবাদমাধ্যমকে কমিশনের এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়েছেন।তিনি বলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক বিবেচনায় ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির’ মাধ্যমে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজউক এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ‘যোগসাজশে’ নিজের ও পরিবারের ওই সদস্যদের নামে প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর রোডের আশপাশের এলাকায় শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছোট বোন শেখ রেহানা এবং তার ছেলে-মেয়ে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকের নামে প্লটগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা ১০ কাঠার প্লট (প্লট নম্বর ০০৯) বরাদ্দ পেয়েছেন। ২০২২ সালের ৩ আগষ্ট তার নামে রাজউক বরাদ্দপত্র দেয়। সজীব ওয়াজেদ জয় (প্লট নম্বর ০১৫) এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও (প্লট নম্বর ০১৭) ১০ টাকা করে প্লট পেয়েছেন। জয়ের বরাদ্দপত্র ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর ইস্যু করা হয় এবং ১০ নভেম্বর মালিকানা সংক্রান্ত রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। পুতুলের বরাদ্দপত্র ২ নভেম্বর ইস্যু করা হয়। শেখ রেহানাও ১০ কাঠার প্লট (প্লট নম্বর ০১৩) বরাদ্দ পেয়েছেন। তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের (প্লট নম্বর ০১১) এবং মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের (প্লট নম্বর ০১৯) নামেও একই পরিমাণের প্লট বরাদ্দ হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের বিষয়টি তুলে ধরে দুদকের মহাপরিচালক আক্তার বলেন, অভিযোগগুলো সুনির্দিষ্ট, তথ্যভিত্তিক ও কমিশনের তফসিলভুক্ত অপরাধ মনে হওয়ায় অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত অক্টোবরে বোন শেখ রেহানাসহ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের ছয় সদস্যের নামে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম নিয়ে সংবাদমাধ্যমে আসা অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয় হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ কমিটিকে আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে (২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে) রাজউকের প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগও তদন্ত করতে বলা হয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত পাঁচ আগষ্ট দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা, এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আশ্রয়ণ, বেজা ও বেপজার আটটি প্রকল্পে ২১ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে মঙ্গলবার তথ্য চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে চিঠি পাঠায় দুদক। গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়..বোন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। পরদিন দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি দলকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুদকের পাঁচ সদস্যের এ দল আওয়ামী লীগ সরকারের বিশেষ অগ্রাধিকারের আট প্রকল্পে শেখ হাসিনাসহ অন্যানাদের বিরুদ্ধে ওঠা ২১ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করবে। একই দল অনুসন্ধান করবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ৫৯ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ।সরকার প্রধানের দপ্তরের দেওয়া এক সারসংক্ষেপে শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে, বোন ও ভাগ্নির বিরুদ্ধে কী ধরনের দুর্নীতির তথ্য দুদকের হাতে এসেছে তার একটি ধারণা পাওয়া গেছে। দুদকের বরাত দিয়ে ওই সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ‘উন্মুক্ত সূত্র’ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলারের ‘আর্থিক অনিয়ম’ হয়েছে।