নেতা-মন্ত্রীদের বারবার ঘোষণা সত্ত্বেও গ্রুপ ডি নিয়োগ হচ্ছে না!!
আরও ২৫ স্কুল বিদ্যাজ্যোতির আওতায়!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য
সরকারের বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের পড়াশোনাও লাটে উঠেছে। বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়ন করছে না শিক্ষা দপ্তর। উল্টো রাজ্যে সরকারের আরও পঁচিশটি স্কুলকে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পে সংযুক্ত করার তোড়জোড় শুরু করেছে শিক্ষা দপ্তর। বর্তমানে ১২৫টি বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের বেহাল অবস্থা। যার খেসারত দিচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। ২০২৪ সালে বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের দশম ও দ্বাদশে শোচনীয় ফলাফল হয়। সম্প্রতি বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পে থেকে সাঁইত্রিশটি স্কুলকে বাতিলের জন্যেও শিক্ষা দপ্তরে বৈঠক হয়। সংবাদপত্রে খবর প্রকাশের পর গৃহীত সিদ্ধান্ত আপাতত প্রত্যাহারও করে নেন দপ্তর। তবে এখন পরিকাঠামো উন্নয়ন তো দূর অস্ত। উল্টো ন্যূনতম পরিকাঠামো ছাড়া নতুন পঁচিশটি স্কুল বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পে আনার সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা দপ্তর।
শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর এ লক্ষ্যে জেলা, মহকুমা সহ রাজধানী মিলিয়ে প্রায় ৮৮টি সরকারী স্কুলকে প্রথম পর্যায়ে নির্বাচিত করেছে শিক্ষা দপ্তর। এর মধ্যে ছয়টি স্কুল এডিসি এলাকার। এখন এই ৮৮টি স্কুল থেকে পঁচিশটি স্কুলকে বাছাই করা হবে। এ লক্ষ্যে শিক্ষা দপ্তরে দৌঁড়ঝাপ শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও বিদ্যাজ্যোতি স্কুলে পাঠরত ছাত্রছাত্রী অনুপাতে শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ নেই। শুধু তাই নয়, বর্তমান ১২৫টি স্কুলের অধিকাংশে গ্রন্থাগার নেই। আর যে সব স্কুলে গ্রন্থাগার আছে, এই স্কুলগুলিতে আবার পাঠ্যবই নেই। বসার বেঞ্চ নেই, ব্ল্যাক বোর্ড নেই। পানীয় জল নেই, নেই শৌচাগার।
অবাক করার বিষয় হল রাজ্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত ছিল ১২৫টি বিদ্যাজ্যোতি স্কুলে ১৪০০ জন শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ করা হবে। যা তিন বছরেও হয়নি। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত ছিল প্রথমে ১০০টি বিদ্যাজ্যোতি স্কুলে একাডেমিক কাউন্সিলার একশ জন, স্পেশাল এডুকেটর একশজন, ফিজিক্যাল এডুকেশন টিচার একশজন, প্রি-প্রাইমারি টিচার প্রত্যেকটি স্কুলের জন্য তিনজন, পিজিটি শিক্ষক শিক্ষিকা যথাক্রমে সোসিওলজি পঁচাত্তরজন, সাইকোলজি পঁচাত্তরজন, জিওগ্রাফি পঁচাত্তরজন, ইকনোমিক্স পঁচাত্তরজন, লাইব্রেরিয়ান একশজন, স্টাফ নার্স, আয়া সহ ১৪০০ জন, শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ করা হবে। যা তিন বছরেও নিয়োগ হয়নি। যার খেসারত প্রদান করছে ছাত্রছাত্রীরা। উল্টো বর্তমান বিদ্যাজ্যোতি স্কুলগুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়ন না করে আরও পঁচিশটি স্কুলকে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের অধীনে এনে সিবিএসই-র পাঠ্যক্রম চালুর পথে শিক্ষা দপ্তর। ফলে বিদ্যাজ্যোতি স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে এসে পড়বে। জানা গেছে, ১২৫টি বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের পশ্চিম জেলায় রয়েছে ত্রিশটি স্কুল, ঊনকোটি জেলায় এগারোটি, গোমতী জেলায় যোলটি, দক্ষিণ জেলায় বারোটি, উত্তর জেলায় পনেরোটি, সিপাহিজলা জেলায় ষোলটি, খোয়াই জেলায় বারোটি এবং ধলাই জেলায় তেরোটি বিদ্যালয় রয়েছে। রহস্যজনক বিষয় হলো সিবিএসই প্রশ্নপত্রে এই বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের ১২৫টি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলাফল করতে পারেনি। মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাসের হার ছিল হতাশাজনক।
উল্লেখ্য, বিদ্যাজ্যোতি স্কুলে একই নিয়োগ নিয়ে দু’বার মন্ত্রিসভায় বৈঠকও হলো। তবে নিয়োগ অধরা। ফলে রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের ক্ষোভও চরমে উঠেছে।